পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কাতার থেকে প্রথম চালানে এক লাখ ৩৬ হাজার ৯শ’ ঘনমিটার আমদানি
ভাসমান তরলীকৃত গ্যাস (এলএনজি) নিয়ে জাহাজ ‘এক্সিলেন্স’ নির্ধারিত সময়ের একদিন আগেই গতকাল (মঙ্গলবার) বিকেলে কক্সবাজারের মহেশখালী দ্বীপের মাতারবাড়ীর কাছে বঙ্গোপসাগরে নোঙর করেছে। বিশেষায়িত জাহাজটি কাতার থেকে পেট্রোবাংলার আমদানিকৃত এলএনজির প্রথম চালান নিয়ে এসেছে। মাতারবাড়ী এলএনজি টার্মিনাল থেকে এখন জাহাজটি প্রায় ৩ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থান করছে। টার্মিনালে এলএনজি খালাসের জন্য অবশিষ্ট কারিগরি কাজ এবং চট্টগ্রামের আনোয়ারা থেকে সীতাকুÐ পর্যন্ত পাইপলাইন বসানো শেষ হলেই উক্ত জাহাজ থেকে গ্যাস খালাস শুরু হবে। খালাসকৃত এলএনজি মহেশখালী থেকে আনোয়ারা হয়ে সীতাকুÐে জাতীয় গ্রিডের মাধ্যমে সরবরাহ করা হবে। প্রতিদিন সঞ্চালন হবে ৫০ কোটি ঘনফুট। এরজন্য আরও ১০ থেকে ১৫ দিন সময় লাগতে পারে।
এলএনজি নিয়ে মাতারবাড়ীর সমুদ্রে আসা জাহাজ বেলজিয়ামের পতাকাবাহী ‘এক্সিলেন্স’ বাংলাদেশে এ যাবতকালের সর্ববৃহৎ জাহাজ। জাহাজেবাহিত এলএনজির পরিমাণ এক লাখ ৩৬ হাজার ৯শ’ ঘনমিটার বা ৬০ হাজার ৪৭ মেট্রিক টন। ‘এক্সিলেন্স’ জাহাজটির স্থানীয় এজেন্ট সীকম শিপিং লাইন্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমিরুল হক গতকাল দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, বাংলাদেশের এলএনজি যুগে প্রবেশের ক্ষেত্রে ও সেই সাথে দেশে সর্ববৃহৎ জাহাজ আগমনে ইতিহাসের অংশ হতে পেরে দেশ-জাতির সঙ্গে আমরা গৌরবান্বিত বোধ করছি। দেশে গ্যাস সঙ্কট নিরসনে এলএনজির আমদানি নতুন মাত্রা যোগ করছে। এর মধ্যদিয়ে বৃহত্তর চট্টগ্রামসহ সমগ্র দেশে গ্যাস তথা অপরিহার্য জ্বালানিভিত্তিক বিনিয়োগ ও শিল্প-কারখানা স্থাপন, উৎপাদন, কর্মসংস্থানের পথ সুগম হবে। মাতারবাড়ী জ্বালানি হাবকে কেন্দ্র করে বহুমুখী অর্থনৈতিক সম্ভাবনার দুয়ার খুলে যাবে। তিনি জানান, এরআগে ২০০০ সালে দেশে সর্বপ্রথম এলপিজি আমদানির ক্ষেত্রেও স্থানীয় শিপিং এজেন্ট ছিল সীকম শিপিং লাইন্স।
এদিকে সংশ্লিষ্ট শীর্ষ কর্মকর্তা হামিদ চৌধুরী জানান, ‘এক্সিলেন্স’ জাহাজকে সহায়তা প্রদানের জন্য চট্টগ্রাম ড্রাইডকে ৫টি টাগ প্রস্তত রাখা হয়েছে। মাতারবাড়ী সমুদ্র উপকূলে তিন কিমি দূরে নোঙররত জাহাজটির দৈর্ঘ্য ২৭৭ মিটার, প্রস্থ ৪৪ মিটার এবং ড্রাফট (পানির ভেতরে থাকা জাহাজের অংশ) ১২ দশমিক ৫ মিটার। তবে বহনক্ষমতার চেয়ে কিছুটা কম এলএনজি থাকার ফলে জাহাজটি পানির নিচে আছে ১১.৫ মিটার। টার্মিনালের সংযোগ লাইন ও পাইপলাইনের বাদবাকি কাজ সম্পন্ন হলে আগামী ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে এলএনজি খালাস শুরু করতে পারে। মাতারবাড়ী টার্মিনালে ফ্লোটিং স্টোরেজ অ্যান্ড রিগ্যাসিফিকেশন ইউনিট (এফএসআরইউ)-এর মাধ্যমে খালাস ও পাইপলাইনে সঞ্চালন করা হবে।
প্রাকৃতিক গ্যাসকে শীতলীকরণ (রেফ্রিজারেশন) প্রযুক্তির মাধ্যমে তাপমাত্রা কমিয়ে মাইনাস ১৬০ ডিগ্রি লেসিয়াসে নামিয়ে তরলে (এলএনজি) পরিণত করা হয়। ‘এক্সিলেন্স’ জাহাজটিতে এলএনজিকে সাগরের পানির উষ্ণতাকে কাজে লাগিয়ে আবার প্রাকৃতিক গ্যাসে রূপান্তর করা হবে। এরপর পাইপলাইনের মাধ্যমে চট্টগ্রাম জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হবে। ইতোমধ্যে মহেশখালী থেকে চট্টগ্রামে আনোয়ারা পর্যন্ত ৩০ ইঞ্চি ব্যাসের ৯১ কিলোমিটার পাইপলাইনের কমিশনিং করার জন্য গ্যাস সঞ্চালন করে পরীক্ষা সফলভাবে সম্পন্ন করা হয়েছে। তবে আনোয়ারা থেকে সীতাকুÐ পর্যন্ত ৪২ ইঞ্চি ব্যাসের আরও ৩০ কিলোমিটার পাইপলাইন নির্মাণের কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। মাতারবাড়ী টার্মিনাল থেকে মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে শুরু হবে জাতীয় গ্রিডে গ্যাস সরবরাহ। যার পরিমাণ দৈনিক ৫শ’ মিলিয়ন বা ৫০ কোটি ঘনফুট। যুক্তরাষ্ট্রের এক্সিলারেট এনার্জি ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল (ফ্লোটিং স্টোরেজ অ্যান্ড রি-গ্যাসিফিকেশন ইউনিট) নির্মাণ করেছে।
কাতারের রাস-গ্যাস কোম্পানির সাথে পেট্রোবাংলার চুক্তি অনুসারে বার্ষিক ২৫ লাখ মেট্রিক টন এলএনজি কাতার থেকে আমদানি শুরু হলো। তাছাড়া ওমান থেকে এলএনজি আমদানির লক্ষ্যে ওমান ট্রেডিং ইন্টারন্যাশনালের সাথে অপর একটি চুক্তি আগামী মে মাসে সম্পাদনের প্রক্রিয়া চলছে। মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরের সাথেও এলএনজি আমদানির বিষয়ে জিটুজি চুক্তির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এলএনজি আমদানি ধাপে ধাপে বৃদ্ধি পেলে চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় ২ হাজার ৫শ’ শিল্প-কারখানায় গ্যাস সংযোগ দেয়া হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।