পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আগামীকাল আনুষ্ঠানিকভাবে ইশতেহার ঘোষণা
প্রচার যুদ্ধের আগেই শুরু হয়েছে তুমুল বাকযুদ্ধ
খুলনা ব্যুরো: প্রতীক বরাদ্দ হলেই আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রচারে নামবেন খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) নির্বাচনের প্রার্থীরা। যদিও প্রার্থীরা সবাই এখন নানা কৌশলে প্রচার প্রচারণায় নির্বাচনী মাঠে। নগরীজুড়ে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি। দলীয় কর্মীদের নিয়ে সাংগঠনিক সভা, ওয়ার্ড পর্যায়ের বর্ধিত সভা, শুভেচ্ছা বিনিময়সহ নানা কর্মকাÐ চালাচ্ছেন প্রার্থীরা। মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা ঘরোয়া ও উঠান বৈঠক করছেন। ভোটারদের খোঁজ-খবর নিতে পাড়া-মহল্লায় ছুটছেন প্রার্থীরা। তাই মহানগর জুড়েই বিরাজ করছে নির্বাচনের আমেজ। এদিকে খুলনা সিটি করপোরেশনের (কেসিসি) প্রচার যুদ্ধের আগেই শুরু হয়েছে তুমুল বাকযুদ্ধ। চলছে অভিযোগ আর পাল্টা অভিযোগ। আচরণবিধি ভঙ্গের নানা অভিযোগ। আর এসব করে চলেছেন প্রধান দুই দলের মেয়র প্রার্থী। আওয়ামী লীগের তালুকদার আব্দুল খালেক ও বিএনপির নজরুল ইসলাম মঞ্জু। তবে সাধারণ মানুষ এসব ভালো চোখে দেখছে না। তাদের দাবি, মানুষ নেতাদের কাছ থেকে ভবিষ্যতের পরিকল্পনার কথা জানতে চায়। সিটির উন্নয়নে প্রার্থীদের বিভিন্ন প্রতিশ্রæতি নিয়ে ২৪ এপ্রিল আনুষ্ঠানিকভাবে ইশতেহার ঘোষণা করবেন তারা। এজন্য ইশতেহার তৈরির কাজ এগিয়ে চলছে বলেও জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
সূত্রমতে, আগামী ১৫ মে কেসিসি নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হবে। মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষে এখন পর্যন্ত মেয়র পদে ৫ জন, সাধারণ ৩১টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ১৮২ জন এবং ১০টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ৪১ জন প্রার্থী প্রতিদ্ব›িদ্বতায় রয়েছেন। ২৩ এপ্রিল মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন। ২৪ এপ্রিল প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ করা হবে। একই প্রতীকের জন্য একাধিক আবেদনকারী থাকলে লটারির মাধ্যমে প্রতীক চূড়ান্ত করা হবে। প্রতীক বরাদ্দের পরপরই প্রার্থীরা পোস্টার, লিফলেট বিতরণসহ নির্বাচনি প্রচার শুরু করতে পারবেন। যা ১৩ মে রাত পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। ১৪ মে কোনও ধরনের প্রচার চলবে না। এদিকে, প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকে মেয়র নির্বাচন হওয়ায় চায়ের টেবিল থেকে শুরু করে রাস্তা-ঘাট, অফিস-আদালত, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান; এমনকি ঘরে ঘরেও চলছে ভিন্নতর নির্বাচন বিশ্লেষণ। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হলফনামায় তথ্য গোপনের অভিযোগ এনে মেয়র পদে উভয় প্রার্থীর সমর্থকরা ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একে অপরের বিরুদ্ধে সমালোচনা করছেন। তবে হলফনামার তথ্য গোপনের বিভ্রান্তি দূর করতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন উভয় প্রার্থী। দিয়েছেন বিবৃতিও। এমনকি স্থানীয় নির্বাচন কমিশনারের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন প্রধান এই দুই দলের প্রার্থী ও সমর্থকরা।
পাঁচ মেয়র পদপ্রার্থী ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেকের ইশতেহারে থাকছে ৩১ দফা। এর আগে তালুকদার আব্দুল খালেক ২০১৩ সালের নির্বাচনে ৩১ দফা ও ২০০৮ সালের নির্বাচনে ২৮ দফার ইশতেহার দিয়েছিলেন। নতুন ইশতেহারে নতুন কিছু বিষয় যুক্ত হলেও আগের ইশতেহারের সঙ্গে মিল থাকছে। বিএনপি মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জুর ইশতেহারে ‘গ্রিন সিটি, ক্লিন সিটি’র ¯েøাগানসহ ১৯ দফা রাখা হচ্ছে। বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ঘোষিত ১৯ দফার সঙ্গে মিলি রেখে মহানগরীর সমস্যা-সংকট ও সমাধানের পথ খুঁজবেন তিনি। জাতীয় পার্টি (জাপা) মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থী এস এম শফিকুর রহমান মাদকের ভয়াবহতা ইসলামী অনুশাসনের মাধ্যমেই দূরীকরণের চিন্তা-চেতনা নিয়ে ৮ দফার ইশতেহার দিতে পারেন। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থী অধ্যক্ষ মাওলানা মুজ্জাম্মিল হক ২৫ দফা ইশতেহার ঘোষণার পরিকল্পনা নিয়েছেন। এ সপ্তাহেই তিনি ইশতেহার ঘোষণা করবেন। সিপিবি মনোনীত মেয়র প্রার্থী মিজানুর রহমান বাবু নির্বাচনি ইশতেহারে খুলনার বন্ধ মিল-কলকারখানা চালু করাকে প্রাধান্য দিচ্ছেন।
অপরদিকে, ৮ এপ্রিল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটি মেয়র প্রার্থী ঘোষণা দেওয়ার পরই কেসিসিতে নির্বাচনি উত্তাপ শুরু হয়। ১২ এপ্রিল মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর থেকে দুই প্রধান প্রতিদ্ব›দ্বী দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি’র মধ্যে বাকযুদ্ধ শুরু হয়। পাঁচটি রাজনৈতিক দলের প্রার্থী থাকলেও মাঠে সক্রিয় আওয়ামী লীগের তালুকদার আবদুল খালেক, বিএনপির নজরুল ইসলাম মঞ্জু ও ইসলামী আন্দোলনের মাওলানা মুজ্জাম্মিল হক। সিপিবি’র মিজানুর রহমান বাবু ও জাতীয় পার্টির (জাপা) এসএম শফিকুর রহমানের কার্যক্রম এখন পর্যন্ত দৃশ্যমান হয়নি। ১০ বছরের বেশি সময় পর খুলনায় নৌকা ও ধানের শীষ প্রতীকের প্রতিদ্ব›িদ্বতা দেখতে উন্মুখ ভোটাররা।
আওয়ামী লীগ মেয়র প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেক বলেন, মিথ্যাচার, অসত্য বানোয়াট ভিত্তিহীন অপপ্রচার চালিয়ে আওয়ামী লীগের বিজয় ঠেকাতে চেষ্টা করছে বিএনপির মেয়র প্রার্থী ও তার সমর্থকরা। তবে আমাদের বিশ্বাস খুলনার মানুষ নগরীর উন্নয়নে নৌকায় ভোট দেবেন।
তবে এ বিষয় অস্বীকার করে উল্টো আওয়ামী লীগ প্রার্থী ও তার সমর্থকরা আচরণবিধি লঙ্ঘন করছেন বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মনোনীত প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু। তিনি বলেন, জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেওয়া এবং দেশনেত্রীর মুক্তির আন্দোলন চূড়ান্ত পর্বে পৌঁছে দিতে বিএনপি এই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকের মেয়র এবং ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে বিএনপি মনোনীত কাউন্সিলর প্রার্থীদের বিজয় নিশ্চিত করার মাধ্যমে অবৈধ, অনির্বাচিত সরকারের বিদায়ঘণ্টা বাজাতে হবে। আর সেজন্য বিএনপির নেতাকর্মীদের সাধারণ জনগণকে সঙ্গে নিয়ে বৃহত্তর এবং ইস্পাত কঠিন ঐক্য গড়ে তুলতে হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।