Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জনবল সংকটের দোহাই খাদ্য কর্মকর্তার

ঠাকুরগাঁওয়ে সুলভ মূল্যে চাল বিতরণে অনিয়ম

ঠাকুরগাঁও জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২০ এপ্রিল, ২০১৮, ১২:০০ এএম

সারাদেশে সরকারের পক্ষ থেকে সুলভ মুল্যে চাল বিতরনে সুনাম অর্জন করলেও নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে চাল বিতরনের অভিযোগ পাওয়া গেছে ঠাকুরগাঁওয়ের বেশ কয়েকজন ডিলারদের বিরুদ্ধে। ফলে হতদরিদ্র সুবিধাভোগিরা সরকারের দেয়া কম দামে চাল কেনা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে অনেকেই। অন্যদিকে অভিযোগ নির্দিষ্ট পাওয়ার পরও ব্যবস্থা না নিয়ে ডিলারদের পক্ষে সাফাই গেয়ে জনবল সংকটের দোহাই দিলেন জেলা সদরের খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের তথ্য মতে, প্রথম ধাপে মার্চ ও এপ্রিল দুই মাস ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আকচা, সালন্দর, রহিমানপুর, জগন্নাথপুরসহ ২১টি ইউনিয়নে ৪৪জন ডিলার নিয়োগের মাধ্যমে প্রত্যেক ইউনিয়নের কমপক্ষে ১হাজার জন সুবিধাভুগি কার্ডধারিদের সোম, মঙ্গল ও বুধ সপ্তাহে ৩দিন ১০টাকা কেজি দরে জন প্রতি ৩০ কেজি করে চাল বিতরণ শুরু করা হয়। তবে ইতোমধ্যে ঢোলারহাট, রুহিয়া, রহিমানপুরসহ ১১টি ইউনিয়নে চাল বিতরণ শেষ হয়েছে। বাকি ইউনিয়নগুলোতে তা চলমান রয়েছে।
খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের সদর কর্মকর্তা বিপ্লব কুমার সিংহের দেয়া তথ্য অনুযায়ী মঙ্গলবারখোজ নিয়ে দেখা গেছে, উল্লেখিত যেসব ইউনিয়নে চাল বিতরন করা শেষ হয়েছে তার মধ্যে সদর উপজেলার রহিমানপুর, ঢোলারহাট ও রুহিয়া ইউনিয়নে চাল বিতরন এখনো অব্যাহত রয়েছে।
ঢোলারহাট ও রহিমানপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সীমান্ত কুমার বর্মন, আব্দুল হান্নান হান্নু জানান, আমাদের ইউনিয়নে এখনো চাল বিতরণ অব্যাহত রয়েছে। প্রত্যেক কার্ডধারিকে ১০ টাকা কেজি দরে ৩০ কেজি করে সুষ্ঠুভাবে চাল বিতরণ করা হচ্ছে বলে নিশ্চিত করেন। যা জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তার দেয়া তথ্য ভুল। তা কাম্য নয়।
এর আগে সোমবার সদরের সুখানপুখুরি, গড়েয়া, জামালপুর ইউনিয়িন ঘুরে দেখা গেছে এসব ইউনিয়নে সুষ্ঠুভাবে চাল বিতরণ হলেও সদরের আকচা ইউনিয়নের নিয়োগপ্রাপ্ত ডিলার শহিদুল ইসলামের নিকট চাল ক্রয় করে ওই ইউনিয়নের চন্ডিপাড়া গ্রামের বাদল বর্মন, দূর্জয় ও কর্নবালা। প্রত্যেকে ১০টাকাকেজি দরে ৩০ কেজি করে চাল ক্রয় করে ডিলারের কাছে। ওই চাল অন্য জায়গায় ওজন দিলে বাদল বর্মনের পনে এককেজি ও বাকি দুজনের আধা কেজি করে চাল ওজনে কম পায়। এ নিয়ে প্রতিবাদ করলেও সুফল পাননি কার্ডধারিরা। অন্যদিকে একই ইউনিয়নের ফারাবাড়ি এলাকার আরেক ডিলার জয় নারায়ন চোখ ফাঁকি দিয়ে ৫০ কেজির দুই বস্তা চাল বিক্রির উদ্যেশ্যে ব্যবসায়ীর কাছে পাচার করে। এসময় স্থানীয়রা তা দেখে সাংবাদিকদের খবর দেয়। সাংবাদিকরা ঘটসাস্থলে গিয়ে ওই ব্যবসায়ী বিমলকে প্রশ্ন করলে জবাবে তিনি বলেন, আমাকে দুই বস্তা চাল ডিলার জয় নারায়ন রাখতে বলেছেন বলে আমি রেখেছি।
এ বিষয়ে ডিলার শহিদুল ইসলাম ওজনে কম দেয়া হয়নি বলে দাবি করেন। আরেক ডিলার জয় নারায়ন বলেন ৩জন কার্ডধারি কার্ড বিক্রি করে দেয়ায় চালের বস্তা মুদি দোকানে রাখা হয়েছিল বলে এড়িয়ে যান।
আকচা ইউনিয়নেরচেয়ারম্যান সুব্রত কুমার বর্মন জানান, ওজনে কম ও চাল পাচার করে বিক্রির অভিযোগটি সদরের খাদ্য কর্মকর্তাকে জানিয়েছি। খাদ্য বিভাগ ডিলারের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নিবেন উনারা ভাল জানেন। তবে খাদ্য কর্মকর্তার গাফিলতির কারনেই অনিয়মগুলি হচ্ছে। চাল বিতরনের সময় খাদ্য নিয়ন্ত্রকের নজরদারি নেই বলেই অনিয়মের সুযোগ পাচ্ছে ডিলাররা। আমরা আশা করবো পরিচ্ছন্ন ডিলারের মাধ্যমে চাল বিতরন কর্মসুচির ব্যবস্থা নিবেন।
এ বিষয়েজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সদর কর্মকর্তা বিপ্লব কুমার সিংহ জানান, জনবল সংকটের কারনে চাল বিতরনের সময় আমাদের লোকজন সব সময় থাকতে পারে না। তবে ওজনে কম ও কোন ডিলার যদি কার্ডধারিদের চাল বিক্রি করে থাকেন তাহলে তাদের ডিলারশিপ বাতিল করা হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চাল বিতরণ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ