মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ইনকিলাব ডেস্ক : ভারত মাতা কি জয় স্লোগান নিয়ে ভারতের ঐতিহ্যবাহী ইসলামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দারুল উলুম দেওবন্দের ফতোয়াকে সমর্থন করেছে জামায়াতে ইসলামী হিন্দ। গত শনিবার দিল্লিতে দলের প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির আমির মাওলানা সাইয়েদ জালালউদ্দিন উমরি তার দলের এ অবস্থানের কথা জানান। মাওলানা উমরি বলেন, মুসলিমরা এই স্লোগান দিতে পারেন না। ভারত কি জয় স্লোগান সবাই দেয়। এটা সবার কাছে গ্রহণযোগ্য, এ নিয়ে কোনও বিতর্ক নেই। কিন্তু ভারত মাতা কী জয় বলা সম্ভব নয়। কারণ ইসলাম সেই অনুমতি দেয় না। দেশাত্মবোধের সঙ্গে এই স্লোগানকে যুক্ত করে দেয়া পুরোপুরি ভুল। তিনি বলেন, জাতীয়তাবাদ নিয়ে অহেতুক বিতর্ক সৃষ্টি করে সাম্প্রদায়িক ও ফ্যাসিবাদী শক্তি বৃদ্ধি করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে সামাজিক মেরুকরণ সৃষ্টি করে দেশের ঐক্য এবং অখ-তাকে ক্ষতিগ্রস্ত করার চেষ্টা হচ্ছে।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার দারুল উলুম দেওবন্দের ফতোয়ায় বলা হয়েছে, মুসলিমরা একত্ববাদ বা এক আল্লাহতে বিশ্বাস করেন। আল্লাহ ছাড়া তারা অন্য কাউকে উপাসনা করতে পারেন না। ভারত মাতা কী জয় বলা দেশকে পূজা করার শামিল। এটা আপাতদৃষ্টিতে উপাসনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হওয়ায় তা শিরক। ফলে ভারত মাতা কী জয় স্লোগান দেয়া মুসলিমদের জন্য বৈধ নয়। দেওবন্দ বলছে, ভারত আমাদের মাতৃভূমি। আমরা একে ভালোবাসি। কিন্তু এই দেশকে আমরা সৃষ্টিকর্তা বা উপাস্য মনে করি না।
দেওবন্দের ফতোয়ায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ভারতের উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলো। গত ১ এপ্রিল ২০১৬ শুক্রবার এ বিষয়ে নিজ দলের কঠোর অবস্থানের কথা জানায় ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির সহযোগী সংগঠন শিবসেনা। দলটির নেতা প্রতাপ সরনাইক বলেন, দারুল উলুম কে, যারা ভারত মাতা কি জয়ের বিরুদ্ধে ফতোয়া বের করেছে? যে মাটিতে আমরা জন্ম নিয়েছি, তাকে আমরা মা, আম্মি ইত্যাদি বিভিন্ন ধর্মের মানুষ ভিন্ন ভিন্ন নামে ডাকি। ভারতে থাকতে হলে ভারত মাতা কি জয় বলতে হবে। যদি তা না বলা হয়, আমরা তার জবাব দেব।
অন্যদিকে, প্রখ্যাত সুন্নি আলেম মাওলানা খালিদ রশিদ ফিরিঙ্গী মহলি বলেছেন, এ দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে মুসলিমরাও জীবন উৎসর্গ করেছে। মুসলিমরা যখন বলেছে, সারে জাহা সে আচ্ছা, হিন্দুস্তা হামারা তখন এ নিয়ে কোনও বিতর্ক হওয়া উচিত নয়। মাওলানা খালিদ রশিদ আরও বলেন, ইনকিলাব জিন্দাবাদ ধ্বনি মুসলিমরা দিয়েছে। এখন ভারত মাতা কী জয় বলাকে জোর করে ইস্যু তৈরি করা হচ্ছে। এ নিয়ে ফতোয়া দেয়ারও কোনও প্রয়োজন নেই। মুসলিমরা জয় হিন্দ এবং হিন্দুস্তান জিন্দাবাদ স্লোগান দিয়ে আসছে। বিজেপি নেতা শাহনওয়াজ হুসেন অবশ্য বলেছেন, ভারত মাতা কী জয় আমরা আগেও বলতাম, এখনো বলি এবং তা বলতেই থাকব। এর আগে ২৬ মার্চ ২০১৬ শনিবার ভারত মাতা কি জয় স্লোগান দিতে অস্বীকার করার অপরাধে তিন মাদ্রাসা ছাত্রকে পিটিয়েছে একদল দুর্বৃত্ত। হামলার শিকার ছাত্ররা দিল্লির একটি মাদ্রাসার শিক্ষার্থী বলে নিশ্চিত করেছে পুলিশ। ঘটনার দিন বিকেলে মাদ্রাসার পাশের মাঠে হাঁটতে গেলে একদল লোক ওই ছাত্রদের ভারত মাতা কি জয় স্লোগান দিতে বলেন। ওই স্লোগান দিতে অস্বীকার করলে তাদের ওপর হামলা চালানো হয়। এতে এক ছাত্রের কাঁধ ভেঙে গেছে বলে জানিয়েছে দিল্লি পুলিশ। হামলার ঘটনায় ছাত্ররা পুলিশ কন্ট্রোল রুমে ফোন করলে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাদের আহত অবস্থায় উদ্ধার করে।
ছাত্ররা জানান, তাদের লাঠি দিয়ে পেটানো হয়। ভারত মাতা কি জয় স্লোগান অস্বীকার করাকে ভারতের সংবিধানের প্রতি অসম্মান বলে মনে করে দেশটির ক্ষমতাসীন দল বিজেপি। চলতি মাসে দিল্লিতে ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) জাতীয় কার্যনির্বাহী বৈঠকে নিজেদের এমন অবস্থানের কথা জানায় দলটি। বৈঠকে গৃহীত প্রস্তাবে বলা হয়, বাক স্বাধীনতার যুক্তিতে দেশবিরোধী, জাতিবিরোধী বক্তব্যকে কোনওভাবে ছাড় দেয়া হবে না। পিটিআই, এনডিটিভি, দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।