Inqilab Logo

মঙ্গলবার ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

হাঁটুর চোটে ৬ মাস নির্বাসনে নাসির

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১১ এপ্রিল, ২০১৮, ১২:০০ এএম

ক’দিন আগে শেষ হওয়া প্রিমিয়ার লিগের চ্যাম্পিয়ন তার দল। শিরোপা উল্লাসে আবাহনীর মধ্যমনি ছিলেন অধিনায়ক নাসির হোসেনও। ব্যস্ততা না থাকায় বিশ্রামে ক্রিকেটাররা। সেখান থেকেই এই অলরাউন্ডার একদিন আগে বিসিবি চত্ত¡রে এলেন স্ক্যাচে ভর করে! অনেক সন্দেহ দানা বেঁধেছিল তখন থেকেই, মনে ছিল শঙ্কার কালো মেঘও। চোটাক্রান্ত স্থান দেখালেন বিসিবি চিকিৎসক দেবাশীষ চৌধুরীকে। তার রুম থেকে নাসির বেরহলেন সেই কালো মুখ করে! এমআরআই করাতে গেলেন অ্যাপোলো হাসপাতালে। সেখান থেকে যে রিপোর্ট এলো গতকাল, তার সঙ্গে হুবহু মিলে গেছে দেবাশীষ চৌধুরীর আগের দিনের শঙ্কা মেশানো বক্তব্য। হাঁটুর লিগামেন্ট পুরোপুরি ছিড়ে গেছে নাসিরের, সেরে উঠতে তাঁর অস্ত্রোপচার জরুরি। ৬ মাসের জন্য মাঠের বাইরে নাসির!
রাজ্যের এক হতশা নিয়ে নাসিরের এমআরআই রিপোর্টের হালনাগাদ করলেন দেবাশীষ চৌধুরী। পরে সাংবাদিকদের জানালেন, ‘এমআরআইয়ের রিপোর্ট দেখে আমরা নিশ্চিত হতে পেরেছি, নাসিরের এসিএল (অ্যান্টেরিয়র ক্রুসিট লিগামেন্ট) পুরোপুরি ছিঁড়ে গেছে। কোথায় অস্ত্রোপচার করালে ভালো হবে, বিভিন্ন জায়গায় যোগাযোগ করছি। অস্ত্রোপচারের পর ছয় মাস লাগবে মাঠে ফিরতে। আমরা অস্ত্রোপচারের জন্য এপয়েন্টমেন্ট নিয়ে রাখছি। দেশেও ভালো চিকিৎসা হচ্ছে। তবে সাধারণত অস্ট্রেলিয়া বা থাইল্যান্ডে অস্ত্রোপচার করার কথা বলি।’
লিগ শেষ হলো নির্বিঘেœ, তার পর এমন গুরুতর চোট নাসির কিভাবে বাধালেন, সেটি নিয়ে আছে ধোঁয়াশা। বিসিবির প্রধান চিকিৎসকের অফিসিয়াল বক্তব্য, ‘শুনেছি ফিটনেস ট্রেনিংয়ের সময় হয়েছে।’ তবে নাসিরের ঘনিষ্ঠ নানা সূত্র থেকে নিশ্চিত হওয়া গেছে, ছুটিতে বন্ধুর আমন্ত্রণে সিরাজগঞ্জে ফুটবল খেলতে গিয়ে নিজের এই দুরাবস্থা ডেকে এনেছেন নাসির। আনুষ্ঠানিক বক্তব্যে রাখঢাক রাখলেও ক্রিকেটারদের দায়িত্ববোধের প্রশ্নে দেবাশীষ চৌধুরী ঠিকই ইঙ্গিতটা দিয়ে রাখলেন। আগেও বেশ কবার বলা বার্তাটিও দিয়ে রাখলেন আরেকবার, ‘ইনজুরি তো বলে-কয়ে আসে না। খেলতে গেলে হতেই পারে। তবে অনেক সময় ক্রিকেটাররা ক্রিকেট খেলার চেয়ে ফুটবল বা অন্যান্য খেলা খেলতে গিয়ে নিজেদের বেশি ইনজ্যুরড করে। এটার বেশ কিছু কারণ আছে। ওরা ক্রিকেটে স্কিলফুল, কিন্তু ফুটবলে তো স্কিলফুল না। স্কিলের অভাব থাকে। পাশাপাশি সবাই সমমানের ফুটবলার না। কাজেই ঘাটতির জায়গা আছে। এছাড়া নিয়ম কানুনের ব্যাপারও আছে। গা গরমের যে ফুটবল খেলা হয়, সেখানে নিয়মকানুন তেমনভাবে মানা হয় না। এজন্য ইনজুরি বেশি হয়। ক্রিকেটারদের দেখা যায়, ফুটবল খেলাটাকে গা গরম হিসেবে না নিয়ে আরেকটা খেলা হিসেবে নেয়। এই মানসিকতা খারাপ। মনে রাখতে হবে, এই ফুটবল খেলাটা গা গরমের জন্য, গোল করার জন্য নয়। সবাইকে পাস দেওয়া, ছুটোছুটি করা এসবের জন্য খেলা উচিত। কিন্তু অনেক সময় প্রতিদ্বন্দ্বিতা চলে আসে। তখনই এসব ঘটে যায়।’
গত বছর দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে ফুটবল খেলতে গিয়েই চোট পেয়েছিলেন মুস্তাফিজুর রহমান। ফুটবলের মতো খেলায় ভয়ের জায়গাটি আরও একবার তুলে ধরলেন বিসিবির প্রধান চিকিৎসক, ‘আমরা অবশ্যই চাই মূল খেলা থেকে বের হয়ে ক্রিকেটটাররা অন্য খেলা খেলুক। সেটা টেনিস হতে পারে, গলফ বা ব্যাডমিন্টন হতে পারে, টেবিল টেনিস হতে পারে। কিন্তু শারীরিক সাংঘর্ষিক খেলা যেন না হয়। যেটা নিরাপদ ও স্কিল বাড়াতে সাহায্য করে। কিন্তু দ্বিতীয় স্পোর্টস হিসেবে ফুটবলের মতো শারীরিক সাংঘর্ষিক খেলা বেছে নিলে ইনজুরির শঙ্কা বাড়ে।’
বিসিবি চিকিৎসক যে এসিএলের কথা বলেন, ক্রিকেটারদের এ চোটে পড়তে কমই দেখা যায়। দেবাশীষই জানালেন, সা¤প্রতিক সময়ে ‘এ’ দল বা প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে কয়েকজন পড়লেও জাতীয় দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে একমাত্র মাশরাফিই এই চোটে পড়েছেন। মাশরাফির পর এ চোট পেলেন নাসির। আপাতত তাঁকে কদিন বিশ্রামে থাকতে হবে। কবে কোথায় অস্ত্রোপচারটা হতে পারে, সেটি জানতে নাসিরকে অপেক্ষা করতে হবে আরও কিছুদিন।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: হাঁটুর চোটে
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ