বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
বরিশালের নদী ভাঙন রোধে আরো একটি বড় প্রকল্প গতকাল জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি-একনেক’র সভায় অনুমোদন লাভ করলেও বাস্তব কর্মকান্ড শুরু নিয়ে সংশয় রয়েছে ভাঙন কবলিত এলাকাবাসির মনে। গত সেপ্টেম্বরে বরিশাল মহানগর সংলগ্ন চরবাড়িয়া এলাকাকে কীর্তনখোলা নদীর ভায়াবহ ভাঙন থেকে রক্ষায় প্রায় ৩৩১ কোটি টাকার অনুরূপ একটি প্রকল্প একনেক-এর অনুমোদন লাভের প্রায় ৬ মাস পরেও পানি উন্নয়ন বোর্ড তার দরপত্র আহবান করতে পারেনি। ফলে আসন্ন বর্ষায় নদী ভাঙন নিয়ে ঐ এলাকার মানুষের দুঃশ্চিন্তা ক্রমশ বাড়ছে। এমনকি প্রকল্পটির জন্য চলতি বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে বরাদ্দকৃত টাকা ফেরত যাবারও সম্ভবনা দেখা দিয়েছে।
গতকাল (মঙ্গলবার) প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে একনেক এর সভায় মেঘনা নদীর ভাঙন থেকে ‘বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার উলানিয়া-গোবিন্দপুর রক্ষা প্রকল্পটি অনুমোদন লাভ করেছে। প্রকল্পটির আওতায় সিসি বøক দ্বারা ২.৮৭ কিলোমিটার তীর রক্ষা সহ নদী শাসন কাজ করা হবে। এর ফলে ঐ এলাকার বিশাল জনগোষ্ঠী মেঘনার ভয়াবহ ভাঙন থেকে রক্ষা পাবে। তাদের আর্থ-সামাজিক নিরাপত্তাও নিশ্চিত হবে। ৩৮৬ কোটি টাকার সম্পূর্ণ দেশীয় তহবিল থেকে এ প্রকল্পটির ব্যয় মোটান হবে বলে জানা গেছে।
এদিকে বরিশাল মহানগরী সংলগ্ন চরবাড়িয়ার বিশাল এলাকা গত কয়েক বছর ধরে কীর্তনখোলা নদীর ভয়াবহ ভাঙনের কবলে। এমনকি কীর্তনখোলার ভাঙনে চরবাড়িয়ার সাথে বরিশাল মহানগরীর সড়ক যোগাযোগ পর্যন্ত বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। চরবাড়িয়ার সাথে যোগাযোগের একমাত্র রাস্তাটির একটি বড় অংশই কীর্তনখোলা গ্রাস করেছে বছর দেড়েক আগে। বরিশাল সিটি করপোরেশনের ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্টটির নির্মান কাজ শেষে চালু করার আগেই তা কীর্তনখোলার ভাঙনের কবলে পড়েছে। বরিশাল-চরমোনাই সড়কের ফেরিঘাটটি কয়েক দফায় ভাঙনের কবলে পড়ায় ঘাট স্থানান্তর করতে হচ্ছে বার বার। এমনকি ঐ এলাকায় বরিশালের উদীয়মান নৌ নির্মান শিল্পও হুমকির মুখে। নগরীর বেলতলা এলাকায় কীর্তনখোলা নদী তীরে গড়ে ওঠা ডকইয়ার্ডগুলোও ভয়াবহ ভাঙনের মুখে থাকায় নৌযান নির্মান শিল্পের উদ্যোক্তাদের মধ্যে উৎকন্ঠা ক্রমশ বাড়ছে। ভাঙন তীব্র আকার ধারন করায় পানি উন্নয়ন বোর্ড গত বছর সাময়িক ব্যবস্থা হিসেবে বালুর বস্তা ফেলে ভাঙনের তীব্রতা প্রতিরোধের চেষ্টা করে।
তবে এরই মধ্যে কীর্তনখোলার ভাঙন থেকে চরবাড়িয়া ও বরিশাল মহানগরীর একটি অংশ রক্ষায় ৩৩১ কোটি টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদন করে একনেক। গত নভেম্বরে অনুমোদিত ঐ প্রকল্পের আওতায় কীর্তনখোলার ভাঙন থেকে চরবাড়িয়া ও বরিশাল মহানগরীর প্রায় সাড়ে ৪ কিলোমিটার এলাকার নদী তীর রক্ষা ছাড়াও ৫.৬০ কিলোমিটার এলাকা ড্রেজিং করার পরিকল্পনা রয়েছে। প্রকল্পের নকশা অনুযায়ী বেলতলা ফেরি ঘাটের বিপরীত প্রান্তে কীর্তনখোলা নদীর বুকে জেগে ওঠা চরটির একটি বড় অংশ ড্রেজিং করে কেটে ফেলা হবে।
মোট প্রায় ২৩টি পাকেজে ২০১৯ এর জুনের মধ্যে প্রকল্পটির কাজ শেষ হবার কথা থাকলেও গত প্রায় ৬ মাসেও প্রকল্পটির কোন অগ্রগতি হয়নি বলে জানা গেছে। এমনকি এ দীর্ঘ সময়েও পানি উন্নয়ন বোর্ড এ লক্ষ্যে কোন দরপত্র আহবানের প্রক্রিয়াও শুরু করতে পারেনি। তবে একাধিক সূত্রের মতে ৩৩১ কোটি টাকার ঐ বড় প্রকল্পটি সরকারের ক্রয় নীতিমালার ‘ওপেন টেন্ডার মেথড-ওটিএম’ এর পরিবর্তে ‘ডিপার্টমেন্টাল প্রকিউরমেন্ট মেথড-ডিপিএম’ এ বাস্তাবায়নের প্রক্রিয়া চলছে। তবে কবে নাগাদ এ নদী ভাঙন রোধের বাস্তব কর্মকান্ড শুরু হবে সে সম্পর্কে পানি উন্নয়ন বোর্ডের দায়িত্বশীল মহল কিছু বলতে রাজি হননি।
অথচ বর্ষা মৌসুম আসন্ন। পরিবার পরিজনের জানমাল নিয়ে চরবাড়িয়াবাসীর দুঃশ্চিন্তা ক্রমশ বাড়ছে। এমনকি বরিশাল সিটি করপোরেশনের ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট, সড়ক অধিদপ্তরের ফেরি ঘাট এবং বেসরকারি ডকইয়ার্ডগুলোর অস্তিত্ব নিয়েও উৎকন্ঠা বাড়ছে। কিন্তু প্রকল্প অনুমোদনের প্রায় ছয়মাস পরেও উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তহীনতায় সাধারণ মানুষের জানমালের নিরাপত্তাই এখন হুমকির মুখে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।