Inqilab Logo

রোববার ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

সউদীতে বিধি লঙ্ঘন করে কর্মী প্রেরণ : দূতাবাসে কর্মীরা আশ্রয় নিচ্ছে

ছয় রিক্রুটিং এজেন্সির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে সরকার

| প্রকাশের সময় : ১০ এপ্রিল, ২০১৮, ১২:০০ এএম

শামসুল ইসলাম : সউদী আরবে বিধি লঙ্ঘন করে কর্মী প্রেরণের কারণে ছয়টি রিক্রুটিং এজেন্সি’র বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। উল্লেখিত এজেন্সিগুলোর মাধ্যমে সউদী আরবে গিয়ে ৫৬ জন কর্মী বিপদে পড়েছে। সংশ্লিষ্ট কোম্পানী এসব কর্মীদের সাথে অমানবিক আচরণ করেছে। অধিকাংশ কর্মীকে কাজ না দিয়ে কোম্পানী থেকে বের করে দিয়েছে। প্রতারণার শিকার এসব কর্মী সউদীর রাস্তায় ও মসজিদে মসজিদে অনাহার অনিদ্রায় দিন কাটায়। প্রতারণার শিকার ১৯ জন কর্মী গত ২ এপ্রিল রিয়াদস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে অবস্থান নিয়েছে। দূতাবাস কর্তৃপক্ষ এসব কর্মীদের খাবার ও পানীয় সরবরাহ করছে। অভিযুক্ত রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোকে এসব কর্মীর সংকট দ্রæত নিরসনের অনুরোধ জানানোর পরেও তারা সাড়া দেয়নি। অভিযুক্ত রিক্রুটিং এজেন্সি’র কেউ কেউ দায় এড়াতে বলে বেড়াচ্ছে আমরা শুধুমাত্র প্রসেসিং ফি নিয়ে প্রবাসী মন্ত্রণালয়ের বর্হিগমন ছাড়পত্র নিয়েই কর্মীদের সউদী আরবে পাঠিয়েছি। কর্মীদের চাকুরি দেয়া আমাদের কাজ না। ছয়টি রিক্রুটিং এজেন্সি সউদী ইউনিয়ন ফর অপারেশন এন্ড মেনটেনেন্স এবং মাজায়া আল দোহা এয়ারপোর্ট ক্লিনিং কাজের মিথ্যা প্রতিশ্রæতি দিয়ে সউদী আরবে পাঠানো হয়। অভিযুক্ত রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো হচ্ছে, অপারাজিতা ওভারসীজ (আরএল নং-১৩১৮), আহমেদ আল আমিন লি: (আরএল নং-১৬০),আল শাফি ইন্টারন্যাশনাল লি: (আরএল নং-৯৪৪), এক্সিলেন্ট ড্রীম ওভারসীজ (আরএল নং-৮৬৬), রফিক এন্ড সন্স ইন্টারন্যাশনাল (আরএল নং -৩৪৩) এবং বিনিময় ইন্টারন্যাশনাল (আরএল নং-৩৫১)। রিয়াদস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের শ্রম সচিব মো: সারোয়ার আলম গত ৪ এপ্রিল এক জরুরী চিঠিতে প্রবাসী সচিব ড. নমিতা হালদারের কাছে এতথ্য জানিয়েছেন। ঐ চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, অভিযুক্ত ছয়টি রিক্রুটিং এজেন্সি বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও অভিবাসন আইন ২০১৩-এর ১৫ (গ) ধারা লঙ্ঘন করায় তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া জরুরী। প্রতারণার শিকার কর্মীদের স্বার্থ রক্ষায় দূতাবাস কর্তৃপক্ষ সউদী কোম্পানীর বিরুদ্ধে শ্রম আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। ২০১৭ সালের ১৮ মে এক চিঠিতে উল্লেখিত সউদী কোম্পানীতে কর্মী না পাঠানোর জন্য প্রবাসী মন্ত্রণালয়কে সর্তক করেছিল দূতাবাস কর্তৃপক্ষ। দূতাবাসের সত্যায়ন ব্যতিরেকে উক্ত ৫৬ জন কর্মীকে সউদী আরবে পাঠিয়ে বিপদে ফেলা হয়েছে বলেও ঐ চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
রিক্রুটিং এজেন্সি রফিক এন্ড সন্স ইন্টারন্যাশনাল (আরএল নং -৩৪৩)-এর পার্টনার বাচ্চু গতকাল রাতে ইনকিলাবকে একথা বলেন। এক প্রশ্নের জবাবে বাচ্চু বলেন, সাত জন কর্মীকে উক্ত সউদী কোম্পানীতে পাঠিয়েছিলাম। তিন জনের ভিসা বাতিল করেছি। দু’জনকে জেদ্দায় তাদের আতœীয় স্বজনরা গত পরশু দূতাবাস থেকে নিয়ে গেছে। বাকি পাঁচ জন কর্মী কোথায় আছে তা’ জনশক্তি রফতানিকারক বাচ্চু কিছু জানেন না বলে উল্লেখ করেন। নোয়াখালির অনিক নামের এক দালাল তিন জন কর্মীর প্রসেসিং করে পাঠিয়েছে বলেও তিনি দাবী করেন। রাতে দালাল অনিক ইনকিলাবকে বলেন, ৬০ হাজার টাকা করে জন প্রতি প্রসেসিং ফি নিয়ে রফিক এন্ড সন্স ইন্টারন্যাশনাল (আরএল নং -৩৪৩)-এর মাধ্যমে লিখন, আব্দুস সামাদ ও আল আমিনকে সউদী আরবে পাঠানো হয়েছে। তারা
জেদ্দায় ভালো কাজ করছে। তাদের কোনো সমস্যা নেই। এক্সিলেন্ট ড্রীম ওভারসীজ (আরএল নং ৮৬৬) এর স্বত্বাধিকারী বদরুল আলম খান বলেন, উক্ত কোম্পানীর ২৫টি ভিসা পেয়েছিলাম এর মধ্যে সাত জনকে সউদী আরবে পাঠিয়েছি। তারা কাজ না পাওয়ায় রিয়াদস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে আশ্রয় নিয়েছে। বাকি ১৮টি ভিসা বাতিল করা হয়েছে। সউদী কোম্পানীকে ১ লাখ ২০ হাজার রিয়াল পরিশোধ করেছে বলেও বদরুল আলম খান দাবী করেন। কোনো আইন লঙ্ঘন করে এসব কর্মীকে সউদীতে পাঠানো হয়নি; বরং প্রবাসী মন্ত্রণালয় থেকে বর্হিগমন ছাড়পত্র নিয়েই তাদেরকে পাঠানো হয়েছে। অপারাজিতা ওভারসীজের স্বত্বাধিকারী আরিফুর রহমান ইনকিলাবকে বলেন, চারজন কর্মীকে সউদী পাঠানোর পর তাদের সমস্যা হয়েছিল। এখন কি হয়েছে তা’ জানি না। এসব কর্মীদের শুধু তারা প্রসেসিং করেছিল বলেও তিনি দাবী করেন।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সউদী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ