Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯ আশ্বিন ১৪৩১, ২০ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

সস্তায় ২১টি পুরনো মিগ-২৯ বিক্রি করতে চায় রাশিয়া

গোপন মূল্য নিয়ে উদ্বেগে

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১০ এপ্রিল, ২০১৮, ১২:০০ এএম

অনেকটা ‘বিনামূল্যে’ রাশিয়ার কাছ থেকে পাওয়া বিমানবাহী রণতরী এডমিরাল গ্রোশকভের জন্য ভারতকে ছয় বছর আগে যে বিপুল ২.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্য দিতে হয়েছিলো সেরকম আরেকটি পরিস্থিতি এড়াতে একই দেশের কাছ থেকে অত্যন্ত সস্তায় মিগ-২৯ কেনার প্রস্তাব গ্রহণ করা নিয়ে গভীর দুশ্চিন্তায় আছে নয়া দিল্লি। সে এখন এই জঙ্গিবিমানগুলোর খুচরা যন্ত্রাংশ ও অন্যান্য ক্ষেত্রে কী ধরনের ‘গোপন’ মূল্য পরিশোধ করতে হতে পারে তা খতিয়ে দেখছে।
স¤প্রতি রাশিয়ার পক্ষ থেকে ভারতের কাছে ২১টি ব্যবহৃত মিগ-২১ বিমান বিক্রির প্রস্তাব দেয়া হয়। এর প্রতিটির দাম পড়বে ২৫-৩০ মিলিয়ন ডলার, যা একটি নতুন মিগ-২৯ বিমানের মাত্র ৩০ শতাংশের মতো।
কিন্তু সরকারি সূত্র এই পত্রিকাকে জানায়, বিমানগুলো কেনার পর যেন কোন গোপন মূল্য না থাকে তা নিশ্চিত করতে প্রস্তাবের প্রতিটি দিক পুঙ্খানুপুঙ্খ খতিয়ে দেখছে সরকার। আমরা আরেকটি এডমিরাল গ্রোশকভ অভিজ্ঞতা লাভ করতে চাই না।
এডমিরাল গ্রোশকভ বিনামূল্যে ভারতকে দেয় রাশিয়া। শুধু ঘষামাজা ও বিমানবাহী রণতরী হিসেবে ব্যবহারের উপযোগী করে তুলতে ভারতকে ৯৫০ মিলিয়ন ডলার দিতে হয়েছিলো। কিন্তু রাশিয়া যখন রণতরীটি নিয়ে কাজ শুরু করে তখন শুরু হয় খরচ বৃদ্ধির পালা, যা একসময় ১.৩ বিলিয়ন ডলারে গিয়ে দাঁড়ায়। নির্ধারিত তারিখের পাঁচ বছর পর রণতরীটি ভারতের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তাই অনেকে রাশিয়ার জঙ্গিবিমানগুলোকে প্রিন্টার ও কার্টিজের সঙ্গে তুলনা করেন। প্রিন্টার খুব সস্তা কিন্তু কার্টিজ তুলনামূলক দামি। দীর্ঘমেয়াদে এগুলোর রক্ষাণাবেক্ষণ ব্যয়বহুল হয়ে পড়তে পারে।
ভারতীয় বিমানবাহিনীর পাইলটরা মিগ-২৯ চালাতে অভ্যস্ত। কিন্তু রাশিয়া যে ধরনের মিগ দিতে চাচ্ছে তা ভারতীয় বহরে থাকা মিগের চেয়ে ভিন্ন। তাই নতুন প্রস্তাব ভারতের জন্য দুঃস্বপ্নে পরিণত হতে পারে বলেও অনেকে আতংকিত।
ভারতীয় নৌ বাহিনী মিগ-২৯ ‘কে’ ব্যবহার করে। এগুলো নিয়েও বিরূপ অভিজ্ঞতা রয়েছে। এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ারে অবতরণের পরপরই এগুলোর সেটিংস পরিবর্তন করতে হয়।
ভারতের তিন স্কোয়াড্রন মিগ-২৯ রয়েছে। এগুলো আপগ্রেড করে মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে, যা আকাশ প্রতিরক্ষায় বেশ ভালো ভূমিকা রাখছে।
কিন্তু অনেকগুলো পুরনো স্কোয়াড্রন অবসরে যাওয়ার সময় ঘনিয়ে আসায় বিমানবাহিনীতে জঙ্গিবিমান সঙ্কট দেখা দিতে পারে। রাশিয়ার প্রস্তাব এই সঙ্কট কাটাতে সহায়ক হবে বলে অনেক মনে করেন।
ভারত মনে করে তার আকাশ সুরক্ষায় ৪২ স্কোয়াড্রন জঙ্গিবিমান প্রয়োজন। নতুন বিমান যুক্ত না হলে ২০২৭ সাল নাগাদ দেশটির হাতে ৩২ থেকে ২৯ স্কোয়াড্রন বিমান থাকবে। মোদি সরকার ফ্রান্সের কাছ থেকে ৩৬টি রাফালে কেনার পরও অবস্থার পরিবর্তন ঘটবে না।
বর্তমানে ভারতের হাতে ছয় স্কোয়াড্রন ডিপ পেনিট্রেশন স্ট্রাইক জাগুয়ার, তিন স্কোয়াড্রন মিগ-২৯, তিন স্কোয়াড্রন মিরেজ-২০০০, ১২ স্কোয়াড্রন সুখুই-৩০এমকেআই, দুই স্কোয়াড্রন মিগ-২৭ ও ১১ স্কোয়াড্রন বিভিন্ন ধরনের মিগ-২১ রয়েছে। ২০২২ সাল নাগাদ মাত্র একটি মিগ-২১ স্কোয়াড্রন অবশিষ্ট থাকবে। সূত্র : সাউথ এশিয়ান মনিটর।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মিগ-২৯
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ