Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ইসলামের রূপ কেউ বদলাতে পারবে না

উবায়দুর রহমান খান নদভী | প্রকাশের সময় : ৮ এপ্রিল, ২০১৮, ১১:১৫ পিএম | আপডেট : ৪:২৬ পিএম, ৯ এপ্রিল, ২০১৮

পনের’শ বছর আগে ইসলাম তার পরিপূর্ণ রূপ নিয়ে বিশ্বে পরিচিত হয়। এ রূপ ছিল প্রবল আধ্যাত্মিক, মানবিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক। দয়া মায়া প্রেম ভালোবাসা কল্যাণ ও সুচিন্তাই ছিল ইসলামের প্রাণশক্তি। উদারতা, ক্ষমা, সুশাসন, ন্যায়বিচার, সততা ও নিষ্ঠা ইসলামের আসল ফিচার। ৬২২ ইং থেকে ১৯১৯ ইং পর্যন্ত গড়পড়তা সভ্য পৃথিবী ইসলামই শাসন করেছে। এসময় পৃথিবীতে রাষ্ট্রীয় জুলুম, বিচারিক অত্যাচার, সাম্প্রদায়িক শোষণ, রাজনৈতিক দূরাচার ও প্রশাসনিক দুর্নীতি ছিল না।
এই ১৪০০ বছর বিশ্বের কোথাও কৃত্রিম দূর্ভিক্ষ হয় নি। কোথাও অমুসলিমদের ওপর বিন্দুমাত্র জুলুম হয় নি। নারী নির্যাতনের তো প্রশ্নই উঠে না। ক’জন হিন্দু নারী নৌ ডাকাতদের কবলে পরে আর্তনাদ করে বলেছিল, মুসলমানের খলিফা আপনি আমাদের বাঁচান। সিন্ধুর উপক‚লের এ আওয়াজ মানুষের মুখে মুখে পৌঁছে গিয়েছিল সুদূর বাগদাদে খলিফার প্রাসাদে। শাসক হাজ্জাজ তখন তার ভাতিজা ও জামাতা ১৮ বছর বয়সী মুহাম্মদ বিন কাসিমকে দস্যু দমনের জন্য প্রেরণ করেন দেবল বন্দর পর্যন্ত। নৌ দস্যুদের কোনো শাস্তি না দেওয়ায় হামলা করা হয় রাজা দাহিরের ওপর।
রাজা পরাজিত হন। বহু মুজাহিদের জীবনের বিনিময়ে ভারত বিজয়ের সূচনা হয়। এমন কিছু ঘটনা কাছাকাছি সময়েই সংঘটিত হয় মধ্য এশিয়া থেকে সাইবেরিয়া পর্যন্ত। সেখানে বিজয়ী বীর ছিলেন সেনাপতি কুতাইবা বিন মুসলিম। জিব্রাল্টার প্রণালী পাড়ি দিয়ে স্পেন জয় করেন মুসা বিন নুসাইর। সঙ্গে সেনাপতি তারেক বিন যিয়াদ। এসব সৈন্যাভিযানের অনুপাত বেশী হলে শতকরা ৫%। আর চীন থেকে আমেরিকা পর্যন্ত গোটা পৃথিবী ইসলামের আলোকে উদ্ভাসিত হয়ে যায় ইসলাম প্রচারকদের দুর্দম প্রেরণায়। ৯৯.৯ ভাগ মুসলমান এই নতুন দীনে প্রবেশ করেছে প্রেম ভালোবাসা ও উদারতায়। ভারতবর্ষেই কী? কেবল মানুষের মর্যাদা লাভ ও সতীদের প্রাণ রক্ষার জন্য এখানকার লক্ষ লক্ষ মানুষ ইসলাম গ্রহণ করে।
শাসকরা যা পারেন নি, এরচেয়ে শতগুণ দীনের খেদমত করেছেন ওলী আউলিয়ারা। শুধু হযরত খাজা মইনুদ্দীন চিশতী রহ. এর হাতে ৮০ লাখ মানুষ ইসলাম গ্রহণ করে। আল্লাহর কি কুদরত বাংলায় হযরত কারামত আলী জৈনপুরী রহ. এর হাতে প্রায় ৭০০ বছর পর সেই ৮০ লাখ মানুষই ইসলাম গ্রহণ করে । বর্তমানে এসব ওলীর বরকতে তাদের তৈরী নেটওয়ার্কের মাধ্য‡ম হিন্দুকুশ থেকে আরাকান পর্যন্ত মুসলমানের সংখ্যাও ৮০ কোটি। যারা বলে ইসলাম তরবারির জোরে প্রচারিত হয়েছে তারা হয়তো জানে না, স্বার্থপরদের অপপ্রচারে ভুল জানে অথবা তারা ইসলাম বিদ্বেষী মিথ্যাচারী। ইতিহাস বলে নবী করিম সা. তার নবুওয়তের প্রথম ১৩ বছর শত জুলুমের কোনো জবাব দেন নি। শুধু ধৈর্যই ধরেছেন। ভালো ব্যবহার করেছেন। প্রাণের শত্রæর বিপদেও ত্রাণকর্তার ভ‚মিকা নিয়েছেন। ইট পাথর ও কাঁটার জবাব দিয়েছেন দোয়া মহব্বত ও ফুলের দ্বারা। সাহাবীদের জীবন হরণ শুরু হলে, নিজের জীবন হুমকির মুখে পড়লে বাপদাদার ভিটা ও আল্লাহর ঘর ক্বাবা ছেড়ে তারা দেশত্যাগ করতে বাধ্য হন। মক্কার মুশরিকরা সেখানে গিয়েও আক্রমন চালায়। তাদের ফিরিয়ে এনে হত্যার জন্য মদীনাবাসীর ওপর চাপ সৃষ্টি করে। তখন আল্লাহ জিহাদের হুকুম জারি করেন। সশ্রদ্ধ যুদ্ধের অনুমতি দেন। মুসলমানদের জন্য মজলুম হওয়ার শর্তে জিহাদ ফরজ হয়। নবী করিম সা. এর জীবদ্দশায় ৮০ টি যুদ্ধ হয়। ২৭ টিতে তিনি নিজে উপস্থিত ছিলেন। মক্কার কাফের মুশরিকরা তাদের মিত্র বাহিনী নিয়ে মুসলমানদের হত্যা করে। মুসলমানরাও পাল্টা হামলা করেন। নবী জীবনের ২৩ বছর শতাধিক লড়াইয়ে আপন পক্ষ ও শত্রæপক্ষ মিলিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা ১১০০।
যুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে যারা কাজ করেন তাদের উচিত মুসলমানদের কপালে চুম্বন করা। এত অল্প রক্তপাতে বিশ্বের বুকে হযরত মুহাম্মদ সা. একটি নতুন ধর্ম, জীবনব্যবস্থা, জাতি, সভ্যতা ও বিশ্বব্যবস্থা পৃথিবীকে উপহার দিয়ে গেছেন। অপরদিকে তথাকথিত উন্নত ও সভ্য সময়ে নানা উদ্দেশ্যে কোন কোন নেতা কী পরিমাণ মানুষ হত্যা করেছেন সেটিও তাদের মনে রাখা উচিত। সর্বশেষ গত ২০ বছরে অমুসলিমরা পৃথিবীর নানা দেশে নানা অজুহাতে দেড় কোটি উম্মতে মুহাম্মদীকে হত্যা করেছে। অতীতে কঙ্গোর রাজা লিউবোল্ট দেড় কোটি মানুষ মেরেছেন। কম্বোডিয়ার নেতা পোলবোথ মানুষ মেরেছেন ৩০ লাখ। হিটলারের হাতে ৬০ লাখ মানুষ প্রাণ দিয়েছে। সমাজতন্ত্রের নেতা জোসেফ স্টালিন মানুষ মেরেছেন ১ কোটি ৬০ লাখ। মাওসেতুং ২ কোটির মতো মানুষ মেরেছেন। ১ম ও ২য় বিশ্বযুদ্ধে মোট নিহতের সংখ্যা কত কোটি সে হিসাব মানুষ এখনো মিলাতে পারছে না। এখানে ডেড রেকনিং এর সুযোগ কোথায়? ইসলাম নিয়ে যারা কথা বলে তাদের বলবো সুস্থ মনে বিবেক কাজে লাগিয়ে কথা বলুন। দিল পরিষ্কার হলে মানুষ মনুষ্যত্বের সন্ধান পায়।
জাভা, সুমাত্রা, চীন, মালয়েশিয়া, ভারতবর্ষ, মধ্য এশিয়া, আফ্রিকা যেখানেই আপনি সন্ধান করবেন সরল-সহজ ঈমান-আখলাকওয়ালা, পরম মানবতাবাদী, আল্লাহওয়ালা, ইসলাম প্রচারক, আলেম-ওলামা, পীর-মাশায়েখ, ওলী-দরবেশগণ এসব এলাকায় তখন এসেছেন যখন মানুষ মানুষ ছিল না। একদল ছিল শোষক ধর্মাবতার আরেকদল ছিল জালিম শাসক। আর সাধারণ মানুষ মানে রাজা জমিদার ধর্মগুরু ও সমাজবিরোধীদের নির্মমতার শিকার। কত অমানবিক নিয়মনীতি আর নির্যাতন দুনিয়াব্যাপী ছিল তা মধ্যযুগের সামাজিক ইতিহাসে কিছু পাওয়া যাবে। মানুষ ইসলাম প্রচারকদের দেখে, তাদের মুখের কথা শুনে, তাদের সান্নিধ্যে একটু বসে যে শান্তির পরশ লাভ করতো এ নিয়ে তারা নিজের জীবন পাল্টে ফেলতো। সমাজ জীবনে কঠিন নির্মম অত্যাচার থেকে বাঁচার জন্য, মানুষের মর্যাদা নিয়ে মাথা উঁচু করে দুনিয়ায় টিকার জন্য তারা এক আল্লাহর বিশ্বাসকে ধারন করতো। জীবনের আদর্শ হিসাবে গ্রহণ করতো সুন্নতের আলোকে গড়ে উঠা ইসলামী সংস্কৃতি। শান্তির এ ধর্মকে বদনাম করার জন্য, এর স্পষ্ট ফিচারকে মলিন করার জন্য, এর সুন্দর রূপকে কালিমাময় করার জন্য ‘সভ্যতার সংঘাত’ শুরু করা হয়। যুগে যুগে ইসলাম বিরোধীরা ষড়যন্ত্র কম করেনি। কিন্তু ইসলাম তার স্বরূপেই বারবার নতুন করে উদ্ভাসিত হয়েছে। বাগদাদের এক খলিফা কোরআন নিয়ে নতুন ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন। ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বলের চ্যালেঞ্জের সামনে টিকতে পারেন নি। বাদশাহ আকবর ‘দীনে ইলাহী’ করেছিলেন। ইমাম আহমাদ সরহিন্দীর সংগ্রামী চেতনার সামনে ৩ পুুরুষব্যাপী মাথানত করতে বাধ্য হয়েছিলেন। ইংরেজরা বহুরকম উদ্যোগ নিয়েছিল। বিপ্লবী আলেম ও পীর মাশায়েখদের সংগ্রামের সামনে দাঁড়াতেই পারে নি। ওদের সাম্রাজ্য গুটিয়ে ফেলতে হয়েছে। আর আলেমরা কোটি মানুষের হৃদয়ে শ্রদ্ধার আসনে অধিষ্ঠিত আছেন। তারা ভারতবর্ষ থেকে বর্তমানে বৃটেনে গিয়েও দীনের কাজ করছেন। তুর্কি ও আরবরা বলতে গেলে ইউরোপ দখল করে ফেলছে।
কিছুদিন আগে সৌদি যুবরাজ মুহাম্মদ বিন সালমান ওয়াশিংটন পোস্টকে বলেছেন, ‘সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর মুসলিম বিশ্বে ইসলামের প্রভাব একচেটিয়া বৃদ্ধি পাওয়ার পথে বাঁধা দেওয়ার জন্য আমেরিকা ওয়াহাবী মতবাদ প্রচারে কোটি কোটি ডলার ব্যয় করে।’ ওলামায়ে কেরাম নতুন এই সালাফিস্টদের বিরুদ্ধে শুরু থেকেই কথা বলতেন। বলতেন, হাজার বছরের প্রতিষ্ঠিত মুসলিম ঐক্য, প্রতিষ্ঠিত ৪ মাযহাব ও সমাজের শান্তি শৃংখলার বিরুদ্ধে কথা বলা হবে আত্মঘাতী। কিন্তু উগ্র একটি দলের কারণে এসব কথা মানুষকে বোঝানো কঠিন হয়ে পড়ে। ইলম ও আমলের ধারক বাহক রূহানিয়্যতে বিশ্বাসী আলেমগণ অনেকটাই কোণঠাসা হয়ে পড়েন। তরীকতপন্থীরা মনে হয় পেট্রোডলারওয়ালাদের দাপটে টিকতেই পারছিলেন না। হাজার বছর ধরে হানাফি মাযহাব মেনে আসা মানুষগুলো যেন সালাফিস্টদের আক্রমনে অপরাধী হয়ে গিয়েছিলেন। নব্য সালাফি গোষ্ঠির ধামাধরা উগ্র একটি শ্রেণী সূর্যের চেয়ে বালির উত্তাপ বেশি আকার ধারণ করে দেশে অশান্তি শুরু করে দেয়। মসজিদে মসজিদে দ্বিমত, স্বামী-স্ত্রীতে দ্বিমত, পিতা পুত্রে দ্বিমত এমনকি তা ঈমান ও কুফুরের বিরোধের মতো রূপ নেয়। বিশেষ করে রাষ্ট্র ও সমাজের উচ্চস্তরে এ নতুন বিতর্ক গিয়ে পৌঁছে। কারণ, পেট্রোডলার যখন কথা বলে সত্য তখন নিরব হয়ে যায়। কিন্তু প্রকৃত আলেম, ওলী ও আবেদ ব্যক্তিরা ধৈর্যকে সম্বল করে চোখের পানিতে আল্লাহর দরবারে এই ফিতনা থেকে মুক্তি লাভের ফরিয়াদ করতে থাকেন। সুন্নত মোতাবেক কবর জিয়ারতকেও এসব উগ্ররা বাঁধা দেয়। বড় আলেম ও ওলীদের কোনো মর্যাদা বাকী রাখেনি। এমনকি উম্মত হিসাবে নবী করিম সা. এর হক্ব আদায়কেও তারা ‘শিরক’ নাম দিয়ে মানুষকে কাঁদাতে থাকে। মদীনা শরিফে হৃদয়ের আবেগ নিয়ে ছুটে যাওয়া মানুষকে তারা নির্মমভাবে বিতাড়ন ও কথার তীরে আহত করতে থাকে। এমনকি নাউযুবিল্লাহ, এক সালাফিস্ট প্রফেসর কর্তৃপক্ষের প্রণোদনায় এক থিসিস তৈরি করে। যেখানে বলা হয় ভক্ত উম্মতের ভীড় সামাল দিতে নবী করিম সা. এর পবিত্র রওজা মোবারক কারফিউ দিয়ে রাতের অন্ধকারে বর্তমান জায়গা থেকে তুলে নিয়ে বকী গোরস্তানের বিশাল ময়দানের অজ্ঞাত কোনে স্থানে স্থাপন করা হবে। যেন কোনো উম্মত সেটা চিনতে না পারে। হজ্জ ও ওমরা যাত্রীরা জিয়ারতে গিয়ে নবী সা. এর রওজা খুঁজে না পায়। এ প্রস্তাবের পর বিশ্বব্যাপী আশেকে রাসুলরা রীতিমতো মৃত্যু যন্ত্রণায় পড়ে যান। আল্লাহর রহমত বাদশাহ সালমান এ বিষয়টি বুদ্ধির সাথে শেষ করে দেন। তিনি নিজে দীর্ঘসময় রওজা মোবারক জিয়ারত করেন। দাঁড়িয়ে থেকে দরুদ সালাম পেশ করে দু’হাত তুলে আল্লাহর দরবারে লম্বা দোয়া মুনাজাত করেন। সরকারী তত্তাবধানে তা বিশ্ব মিডিয়ায় গুরুত্বসহকারে প্রচারেরও ব্যবস্থা করেন। কিছুদিন পর তিনি আবার পাক মদীনায় ছুটে যান। একইভাবে জিয়ারত করেন। একই বছর কাবা সংলগ্ন সাফা প্রাসাদে রমজানের শেষভাগ অবস্থান করেন। বর্তমানে রাষ্ট্রীয়ভাবে উগ্র ওয়াহাবী মতবাদ ও বিদ্বেষী সালাফিজম দমনে তার সরকার উদ্যত হয়েছেন। এ বিষয়ে তারা বিশ্বব্যাপী কঠোর বার্তা ছড়িয়ে দিয়েছেন।
ইউরোপের নানা দেশে বিশেষ করে জার্মানি ও ফ্রান্সে গত ২০ বছর তথাকথিত সালাফিদেরই রাজত্ব ছিল। যত মসজিদ ও ইসলামিক সেন্টার সবখানে তাদের উগ্রভাব ও আচরণ। দুনিয়ার উগ্র গোষ্ঠিগুলো সেখানে আশ্রয় পেত। সারা দুনিয়ায় ইসলাম প্রচারক আলেম ও ওলী দরবেশগণ যে আধ্যাত্মিক শক্তি বলে মানুষের হৃদয় জয় করেছেন। নতুন মিশনে এসব ছিল না। ছিল পেট্রোডলার আর শরীয়ত বিরোধী উগ্রতা। যার ফলে স্বয়ং সৌদি আরব ও ইউরোপের সালাফিরা র‌্যাডিকেল হতে শুরু করে। নানা জঙ্গী প্রেরণায় সন্তান তার পিতাকে হত্যা করে। তরুনেরা তাদের বাবা চাচা মা ও ভাইবোনকে হত্যা করে। এ চিত্র তো ইসলামের নয়। নিয়মিত রণাঙ্গন ছাড়া ইসলামে শত্রুকেও কিছু বলার বিধান নেই। জিম্মিরা যেন মুসলিমদের চেয়েও বড় আমানত। সংখ্যালঘু অমুসলিমরা আপন ভাইয়ের মতো। তাদের সম্মান ও সম্পদ মুসলমানের মতোই নিরাপদ। নিয়মিত যুদ্ধছাড়া মুসলিম সমাজে কোনোদিনই কোনো খুন, গুপ্ত হত্যা, বোমা হামলা, আতংক ছিল না। উগ্ররা শত্রæদের প্ররোচণায় গত কয়েক বছরে সারা দুনিয়ায় ইসলাম ও মুসলমানের যে পরিমাণ বদনাম করেছে। যে সংখ্যায় মানুষের ইসলামে প্রবেশ তারা নিরুৎসাহিত করেছে। ইসলামের শত্রæদের যেভাবে মানুষ হত্যা, নারী নির্যাতন ইত্যাদির ভিডিও তৈরি করে মিডিয়ায় প্রচারের সুযোগ করে দিয়েছে, এসব নিয়ে প্রকৃত আল্লাহওয়ালারা খুবই দুশ্চিন্তায় ছিলেন। তারা মসজিদ মাদরাসা ও খানাকায় বসে কেবলই আল্লাহকে ডেকেছেন। যুবরাজ বিন সালমানের দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে হাজার উদ্বেগ মুহূর্তেই পানি হয়ে গেছে।
শত বাঁধার মুখেও বিশ্বব্যাপী ইসলামের জনপ্রিয়তা কমেনি। প্রতিদিন প্রায় ৩ হাজার মানুষ ইসলাম গ্রহণ করছে। ইসলামের দোষ খুঁজতে গিয়ে তরুণ তরুণীরা ইসলামগ্রহণ করছে। আল কোরআনে খুঁত ধরতে গিয়ে মুসলমান হচ্ছেন অসংখ্য বিজ্ঞানী। সময়ের ধুলোবালি একটি মুষলধারে বর্ষিত বারিধারায় যেমন ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে যায়, ইসলামও তেমনই। সময় সময় মেঘে ঢেকে যায়, ধুলোর আস্তরনে ম্লান দেখা যায়। কিন্তু আল্লাহর রহমতের অমোঘ নিয়মে আবার যখন ইসলামের মহান সূর্য প্রবল প্রতাপে প্রকাশিত হয়, তখন পৃথিবী ভেসে যায় তার অপার্থিব আলোর বন্যায়। মহানবী সা. বলেছেন, ‘ইসলাম তোমাদের জন্য একটি রোদ্রময় আলোকিত শুভ্র ভূখন্ডের মতো। যার রাতগুলোও দিনের মতোই উজ্জ্বল।’ অতএব আমরা দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে বলতে পারি, শত চেষ্টায়ও ইসলামের রূপ কেউ বদলে দিতে পারবে না। ইসলাম তার স্বমহিমায় টিকে থাকবে কিয়ামত পর্যন্ত এবং পৃথিবীর প্রতিটি প্রান্তে ছড়িয়েও পড়বে তার অন্তর্নিহিত সৌন্দর্যের শক্তিতে।



 

Show all comments
  • Asad ৯ এপ্রিল, ২০১৮, ১২:১৪ এএম says : 0
    Islam the only truth n evergreen.
    Total Reply(0) Reply
  • Ashraf ৯ এপ্রিল, ২০১৮, ৯:৪৪ এএম says : 0
    Very good analysis.
    Total Reply(0) Reply
  • সাব্বির ৯ এপ্রিল, ২০১৮, ১০:৫০ এএম says : 0
    এই সুন্দর লেখাটির জন্য দৈনিক ইনকিলাব ও উবায়দুর রহমান খান নদভী হুজুরকে মোবারকবাদ জানাচ্ছি
    Total Reply(0) Reply
  • মশিউর রহমান ৯ এপ্রিল, ২০১৮, ১:২৮ পিএম says : 0
    ইসলাম মানব জাতির জন্য সর্বশেষ এবং পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান। সুতরাং কিয়ামতের আগ পর্যন্ত এটা বদলানোর কোন সুযোগ নেই।
    Total Reply(0) Reply
  • আশিক ৯ এপ্রিল, ২০১৮, ১:৪১ পিএম says : 0
    ইসলাম তার স্বমহিমায় টিকে থাকবে কিয়ামত পর্যন্ত এবং পৃথিবীর প্রতিটি প্রান্তে ছড়িয়েও পড়বে তার অন্তর্নিহিত সৌন্দর্যের শক্তিতে।
    Total Reply(0) Reply
  • মানিক ৯ এপ্রিল, ২০১৮, ১:৪৫ পিএম says : 0
    ইসলামের রূপ কেউ বদলাতে পারবে না। যারা এই চেষ্টা করবে তারা পথভ্রষ্ট হয়ে ধ্বংসের দিকে ধাবিত হবে।
    Total Reply(0) Reply
  • পারভেজ ৯ এপ্রিল, ২০১৮, ১:৪৬ পিএম says : 0
    হাজার বছরের প্রতিষ্ঠিত মুসলিম ঐক্য, প্রতিষ্ঠিত ৪ মাযহাব ও সমাজের শান্তি শৃংখলার বিরুদ্ধে কথা বলা হবে আত্মঘাতী।
    Total Reply(0) Reply
  • বুলবুল আহমেদ ৯ এপ্রিল, ২০১৮, ৩:৪০ পিএম says : 0
    আল্লাহ আমাদেরকে ইসলাম বুঝা এবং সে অনুযায়ী চলার তৌফিক দান করুক । আমিন
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইসলামের


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ