Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ফিক্সারদের সঙ্গে ভারতের যোগসাজশ?

২০১১ বিশ্বকাপ

| প্রকাশের সময় : ৭ এপ্রিল, ২০১৮, ১২:০০ এএম

বিষয়টি এখনো ছোট স্ফুলিঙ্গ হয়ে আছে। তবে তা থেকে যে দাবানল ছড়িয়ে পড়বে না, তা কে বলতে পারে! ভারতের সংবাদমাধ্যমে খবর এসেছে, এক ভারতীয় ক্রিকেটারের সঙ্গে ম্যাচ পাতানো চক্রের যোগসাজশ আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সেই ক্রিকেটারের নাম এখনো প্রকাশ করা হয়নি। তবে ভারতকে তিন ধরনের ক্রিকেটেই প্রতিনিধিত্ব করা সেই ক্রিকেটার ২০১১ বিশ্বকাপজয়ী দলেও ছিলেন বলে জানা গেছে। তিনি এখন আর জাতীয় দলে নেই। ভারতের কেন্দ্রীয় অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি তদন্ত করে দেখছে বিষয়টি।
খবরটি ‘ব্রেক’ করেছে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস। পত্রিকাটি জানিয়েছে, গত বছর জুলাইয়ে ভারতের জয়পুরে একটি টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টের আয়োজন করে ওই ম্যাচ-ফিক্সিং চক্রটি। রাজপুতানা প্রিমিয়ার লিগ (আরপিএল) সরাসরি স¤প্রচার করেছিল নিও স্পোর্টস। সেই লিগে অদ্ভুত সব ঘটনার কারণে সন্দেহ বাড়তে থাকে। পরে রাজস্থান পুলিশ তদন্তে নামে। তাতে বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য। আরপিএল নামের এই টুর্নামেন্টটি চালাচ্ছে একটি সংগঠিত ক্রিকেট জুয়াড়ি চক্র! এদের প্রধানের সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক আছে ভারতের বিশ্বকাপজয়ী ওই ক্রিকেটারের।
সেই ক্রিকেটারকে আরপিএল চলার সময় দেখাও গিয়েছিল। টুর্নামেন্টটি সবচেয়ে বেশি বিতর্কের জন্ম দেয় ১ বলে ১২ রান লাগে এমন পরিস্থিতিতে ব্যাটিং দল অদ্ভুতভাবে জিতে যাওয়ায়। শেষ বলটি করতে বোলার লেগ সাইডের অনেক বাইরে বল করেন। ওয়াইড-চার থেকে আসে ৫ রান। পরের বলটি কোমরের ওপরে করে দেন নো। ব্যাটসম্যান তাতে এক রান দৌড়ে নেন। আসে ২ রান। ফ্রি হিটের সংকেত দেন আম্পায়ার। পরের বলটি আবারও লেগের অনেক বাইরে ওয়াইড-চার দেন বোলার! ১ বলে ১২ রানের সমীকরণ মিলিয়ে জিতে যায় ব্যাটিং দল!
এ নিয়ে তখন তীব্র আলোচনা-সমালোচনার জন্ম নিলে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) রাজস্থান পুলিশকে তদন্ত করে দেখার অনুরোধ জানায়। পুলিশ তখন ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তার লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদে বিশ্বকাপজয়ী ক্রিকেটারের নাম উঠে আসে। আটক ব্যক্তিরা অবশ্য এখন সবাই জামিনে মুক্ত। গত নভেম্বরে মামলাটি পরিচালনার ভার পায় সিআইডি। ওই ক্রিকেটার এসবের সঙ্গে সরাসরি কতটা জড়িত এখনো তা প্রকাশ করা হয়নি। তবে ধীরে ধীরে তদন্ত নতুন মোড় নিচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ম্যাচ পাতানো এই চক্রের সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের বা নামকরা কেউ জড়িত থাকতে পারেন বলে উঠতে আসতে পারে।
ভারতে এ ধরনের অসংখ্য ব্যক্তি উদ্যোগে পরিচালিত টি-টোয়েন্টি লিগের ম্যাচ ও ম্যাচের বিশেষ অংশ জুয়াড়িদের জন্য স্বর্গ হয়ে উঠেছে। আগে জুয়াড়িরা কোনো টুর্নামেন্টের ম্যাচ বা ম্যাচের অংশ পাতানোর চেষ্টা করত। এখন জুয়াড়িরা নিজেরাই টুর্নামেন্ট আয়োজন করছে। অনেকটা টিভি রিয়্যালিটি অনুষ্ঠানের মতো পুরো ম্যাচ নিয়ন্ত্রণ করছে বাইরে থেকে। কখন কী করতে হবে, তা বলে দেওয়া হচ্ছে।
‘স্পটার’ আর ‘হ্যান্ডলার’রা মাঠের বাইরে ঠিক করা চিত্রনাট্য মাঠের ভেতরে বয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। স্পটাররা মাঠের আম্পায়ারদের ব্যবহার করার জন্য রাখা ওয়াকিটকির মাধ্যমে খেলোয়াড়দের জানান বাজিকরেরা এখন কী করতে বলছে। এ ব্যাপারে আকসু আগেই বিসিসিআইকে সতর্ক করেছিল। কিন্তু সবকিছু বিসিসিআইয়ের নিয়ন্ত্রণেও নেই। ব্যক্তি উদ্যোগের টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টগুলোর প্রচার-প্রসার বাড়ছে। এর কোনটা যে নির্ভেজাল ক্রিকেট আর কোনটি রিয়্যালিটি অনুষ্ঠান, বলা কঠিন! সূত্র : ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, প্রথম আলো



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ফিক্সার
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ