Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অন্ধ পিয়নের ১১ বছরের বেতন তুলে খাচ্ছেন প্রধান শিক্ষক!

ঝিনাইদহ থেকে মোস্তফা মাজেদ | প্রকাশের সময় : ৭ এপ্রিল, ২০১৮, ১২:০০ এএম

২০০৫ সালে আকিস্মক অন্ধত্ব বরণ করেন বগেরগাছি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পিয়ন ফজলুর রহমান। এরপর প্রধান শিক্ষক রেজাউল ইসলাম তাকে আর স্কুলে আসতে দেয়নি। সেই থেকে প্রধান শিক্ষক অসহায় এক অন্ধ পিয়নের সাক্ষর জাল করে বেতনের টাকা তুলে তুলে খাচ্ছেন। এ ঘটনা নিয়ে প্রশাসনে তোলপাড় শুরু হয়েছে। জেলা প্রশাসকের নির্দেশে কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উত্তম কুমার তদন্ত টিম গঠন করে দিয়েছেন। পিয়ন ফজলুর রহমান জানান, ১৯৯০ সালের ২ জানুয়ারি তিনি উপজেলার বগেরগাছি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পিয়ন পদে চাকরিতে যোগদান করেন। ১৯৯৪ সালের ১ জানুয়ারি তার চাকরি এমপিও ভুক্ত হয়। চাকরি করা অবস্থায় ২০০৫ সালে চেখের সমস্যা দেখা দেয়। এতে তার দু’টি চোখই অন্ধ হয়ে যায়। এ কারণে প্রধান শিক্ষক তাকে বিদ্যালয়ে আসতে নিষেধ করেন এবং তার বেতন-ভাতা বন্ধ হয়ে গেছে বলে পিয়ন ফজলুর রহমানকে জানিয়ে দেন। এরপর দুর্নীতিবাজ প্রধান শিক্ষক পিয়ন ফজলুর চিকিৎসা ব্যায় দেওয়ার জন্য একটি সাদা কাগজে সাক্ষর করিয়ে নেন। প্রধান শিক্ষক কাগজটিতে পদত্যাগপত্র লিখে গোপন করে রাখেন। পিয়ন ফজলুর রহমান অবিযোগ করেন প্রধান শিক্ষক রেজাউল আমার কল্যাণ ও অবসর ফান্ডের টাকা তুলে চোখের চিকিৎসা করানোর কথা বলে কোটচাদপুর রুপালি ব্যাংকের চেকের ৮টি পাতায় স্বাক্ষর করিয়ে নেন। এবং ওই চেকবই এর পাতা শেষ হলে প্রধান শিক্ষক নিজেই ভূয়া স্বাক্ষর করে ব্যাংক থেকে আরো নতুন বই তুলে পিয়ন ফজলুরের বেতন-ভাতা উত্তোলন করে আসছিলেন। এভাবে ২০০৬ সালের মার্চ থেকে ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ফজলুর রহমানের বেতন-ভাতা তুলেছেন ওই প্রধান শিক্ষক। পিয়ন ফজলুর রহমান এ ঘটনা জানতে পেরে ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক বরাবর একটি অভিযোগ করেন। জেলা প্রশাসক তার অভিযোগটি তদন্তের জন্য কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে দায়িত্ব দেন। কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার উত্তম কুমার গত ৪ মার্চ কালীগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজার আব্দুল আলিমকে তদন্তপুর্বক প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন। পিয়ন ফজলুর রহমানের ছেলে শাহাজান আলী বলেন, আমার বাবার স্বাক্ষর জাল করে অসৎ প্রধান শিক্ষক প্রায় ১১ বছরে ১১ লাখ টাকা তুলে আত্মসাত করেছে। অথচ সবাই অন্ধ ছিলেন। আমি এর বিচার চাই। কালীগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজার ও তদন্ত কর্মকর্তা আব্দুল আলিম জানান, প্রাথমিক তদন্তে বেতনের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ প্রমানিত হয়েছে। এখনো তদন্ত চলছে। তিনি উভয় পক্ষকে কাগজপত্র জমা দিতে বলেছেন। পিয়নের বেতন তুলে খাওয়ার বিষয়ে প্রধান শিক্ষক রেজাউল ইসলাম বিষয়টি এড়িয়ে যান এবং ব্যাস্ততার অজুহাতে মুঠোফোনের সংযোগ কেটে দেন।

 



 

Show all comments
  • nannu chowhan ৭ এপ্রিল, ২০১৮, ৯:০৭ এএম says : 0
    We are very hopeless about our countries education system because of corrupt .............................
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ