নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
[- চলতি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ মৌসুমে সর্বোচ্চ ৩১ গোল লিভারপুলের। আসরে যা নিজেদের রেকর্ডও।
-২৬ অক্টোবর ২০১৬ এর পর এই প্রথম লক্ষ্যে কোন শটই নিতে পারেনি ম্যানচেস্টার সিটি।
-চলতি মৌসুমে মোট ৩৮ গোল মোহাম্মদ সালাহ’র। এক গোল বেশি নিয়ে তার সামনে কেবল ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো।]
তখন ম্যাচ শুরু হওয়ার বাঁশি বাজেনি। ডাক আউটে হাস্যজ্জ্বল মুখে পেপ গার্দিওলার দিকে এগিয়ে গিয়ে হাত বাড়িয়ে দিলেন ইয়ূর্গুন ক্লপ। কদমর্দন হলো। কিন্তু গার্দিওলার মুখ মলিন! ম্যাচ শেষেও প্রায় একই চিত্রনাট্যের পুনঃপ্রকাশ। এবার অবশ্য গার্দিওলার মলিন মুখের উপর হতাশার প্রলেপ স্পষ্ট।
ম্যানচেস্টার সিটি কোচের মলিন মুখের প্রথম কারণটি ক্লপের লিভারপুলের জন্যে লজ্জার। আর দ্বিতীয় কারণটি ছিল লিভারপুলের জন্য গৌরবের। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে শেষ আটের প্রথম লেগের ম্যাচে সিটিকে ৩-০ গোলে শ্রেফ উড়িয়ে দিয়েছে লিভারপুল। কিন্তু ম্যাচের আগেই কেন মলিন থাকবে গার্দিওলার চেহারা?
কারণ, ম্যাচ শুরু হওয়ার আগেই যে আক্রমণের শিকার সিটি। সিটি খেলোয়াড়দের বহনকারী বাসে আক্রমণ করে বসে লিভারপুলের পাগলা দর্শকরা। মেরামতের কাজ চলায় সিটি খেলোয়াড় ও কর্মকর্তা বহনকারী বাস অ্যানফিল্ডে প্রবেশ করে ভিন্ন রাস্তা ধরে। অন্য সময় লাল সমর্থকরা স্বভাবসুলভ রাস্তার দুই ধারে দাঁড়িয়ে প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়দের অভিভাদন জানান। এদিনও দাঁড়ালেন, কিন্তু অভিভাদনের পরিবর্তে সিটির বাসকে আক্রমণ করে বসে তারা। বিয়ারের ক্যান, পানির বোতলসহ বিভিন্ন ভারী বস্তুর অত্যাচারে গাড়ি এতটাই ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে পড়ে যে পরে আরেকটি গাড়ি পাঠিয়ে খেলোয়াড়দের নিয়ে যায় সিটি কতৃপক্ষ। খেলোয়াড়রা অবশ্য আহত হননি। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে দুই পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। লিভারপুলের এমন আচরণ একদম মেনে নিতে পারেননি গার্দিওলা,‘লিভারপুল এবং তাঁদের সমর্থকদের কাছ থেকে এটা আশা করিনি। এক বছর আগে ডর্টমুন্ডে এমন কিছুই ঘটেছিল (টিমবাসে বোমা)। আমরা এখানে ফুটবল খেলতে এসেছি কিন্তু এ ধরনের পরিস্থিতি বুঝতে পারছি না। বাস ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। লিভারপুলের মতো একটা সম্মানজনক ক্লাব এসব করতে পারে তা আশা করিনি।’ পরে অবশ্য ক্ষমা চেয়ে জড়িতদের শাস্তির আশ্বাস দিয়েছে লিভাপুল কতৃপক্ষ।
এ তো গেল মাঠের বাইরের উত্তাপ। মাঠে লিভারপুলের খেলোয়াড়রা ছিল আরো বেশি আক্রমনাত্বক! ম্যাচের বয়স অর্ধঘন্টা না পেরুতেই ম্যাচের ইতি টেনে দেন সাদিও মানে। মোহাম্মদ সালাহর ক্রস মাথা দিয়ে ঠুকে ৩১তম মিনিটেই স্কোরলাইন ৩-০ করে দেন মানে। গার্দিওলার সিটি যেন তখন মাঝ দরিয়ায় দিক হারা কান্ডারিহীন নৌকা।
মৌসুমের ৩৮তম গোলের মাধ্যমে দলকে ১২তম মিনিটে এগিয়ে নেন সালাহ। আট মিনিট পর ২০ গজ দুর থেকে সিটি গোলরক্ষক এডারসনকে পরাস্থ করেন অ্যালেক্স অক্সালেট চেম্বারলেইন। পক্ষান্তরে আক্রমণে যাবে কি, প্রথমার্ধের পুরোটা সময় সালাহ-মানে-ফিরমিনহোদের আক্রমণ ঠেকাতেই গলদঘর্ম বেরিয়ে যায় সিটির। এসময় গোছালো কোন আক্রমণই তারা করতে পারেনি। চোটের কারণে এদিন খেলেননি দলের সবচেয়ে বড় তারকা সার্জিও আগুয়েরো।
দ্বিতীয়ার্ধে সিটির সাফল্য বলতে কোন গোল না খাওয়া। আরো আশ্চর্যের বিষয় হলো: গোল তো দুরে থাক প্রায় দেড় বছরের মধ্যে এই প্রথম প্রতিপক্ষের গোল বরাবর কোন শটই নিতে পারেনি গার্দিওলার সিটি! ইউরোপিয়ান ফুটবলে এমন কঠিন রাত খুব কমই পার করেছেন কাতালান কোচ।
সাবেক লিভারপুল অধিনায়ক স্টিফেন জেরার্ড এটাকে বলেছেন রেডদের ‘পারফেক্ট’ পারফর্ম্যান্স। ক্লপের মতে, ‘আমরা বিশ্বের সেরা দলকে হারিয়েছি। এটা আসলেই ভালো পারফর্ম্যান্স ছিল।’
গার্দিওলা বধের মন্ত্রটা সম্ভবত ভালোই শিখে গেছেন ক্লপ। প্রিমিয়ার লিগ মৌসুমে গার্দিওলার একমাত্র হারটিও ক্লপের কাছে। এবার উয়েফার আসরে দু’দলের প্রথম মুখোমুখিতেও হাসলেন জার্মান কোচ। দুজনের শেষ ছয়বারের সাক্ষাতে মাত্র একবারই জিতেছেন গার্দিওলা, হার তিনটিতেই। এবারের হারটা যেন সবকিছুকেই ছাড়িয়ে গেল। বলতে গেলে এখানেই সেমিফাইনালের আশা শেষ গার্দিওলার। সিটির ট্রেবল জয়ের স্বপ্নটাও এখন অনেকটা ধোয়াশায় পরিণত হলো।
গার্দিওলা অবশ্য এখনই আশা ছাড়ছেন না, ‘আমার কোন অভিযোগ নেই (খেলোয়াড়দের প্রতি)। কেউ হয়ত বিশ্বাস করবে না, তবে আমাদের আরো একটি ম্যাচ আছে।’ গার্দিওলা তো এমনটা বলবেনই, নইলে তিনি ‘গার্দিওলা’ কেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।