অর্থনৈতিক রিপোর্টার : দেশে প্রতিদিনই বাড়ছে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের গ্রাহক। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে লেনদেনের পরিমাণ। চলতি বছরের ফেব্রæয়ারিতে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে দৈনিক লেনদেন এক হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। মোবাইল আর্থিক হিসাব (এমএফএস) নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রকাশিত পরিসংখ্যানে এ তথ্য জানা গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, মোবাইলের মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে অতিদ্রæত টাকা পাঠানোর সুযোগ তৈরি হয়েছে। দিন দিন গ্রাহক সংখ্যা বাড়ছে। দেশের সব শ্রেণি পেশার মানুষ এর আওতায় যুক্ত হচ্ছে। ফলে মোবাইল ব্যাংকিং দেশের ব্যাংকিং সেবায় এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, বর্তমানে মোট ১৮টি ব্যাংক মোবাইল ব্যাংকিংয়ে জড়িত। এসব প্রতিষ্ঠান ফেব্রæয়ারি শেষে মোট নিবন্ধিত এমএফএস হিসাবের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫ কোটি ৯৬ লাখ ৪৫ হাজার। এর মধ্যে সক্রিয় হিসাবের সংখ্যা দুই কোটি আট লাখ ৩১ হাজার। ফেব্রæয়ারিতে সক্রিয় হিসাবের সংখ্যা জানুয়ারির তুলনায় বেড়েছে এক লাখ ১৮ হাজার বা দশমিক ছয় শতাংশ। জানুয়ারিতে সক্রিয় মোবাইল ব্যাংকিংয়ের হিসাব সংখ্যা ছিল দুই কোটি ৭ লাখ ১৩ হাজার। আলোচিত সময়ে মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্টের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৯৬ হাজার ৭৩৪ জনে।
সর্বশেষ তথ্য মতে, ফেব্রæয়ারিতে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে মোট লেনদেন হয়েছে ২৮ হাজার ৪৪৫ কোটি টাকা। জানুয়ারিতে এর পরিমাণ ছিল ৩০ হাজার ৩৯৬ কোটি টাকা। লেনদেনের অর্থ কমার পাশাপাশি ফেব্রæয়ারিতে লেনদেনের সংখ্যাও ৫ দশমিক ৪ শতাংশ কমেছে। ফেব্রæয়ারিতে এমএফএসে মোট লেনদেন হয়েছে ১৬ কোটি ২০ লাখ ৮১ হাজার, জানুয়ারিতে যা ছিল ১৭ কোটি ১২ লাখ ৭৬ হাজার।
উল্লেখ, ফেব্রæয়ারি মাস ছিল ২৮ দিনের আর জানুয়ারি ৩১ দিনের। তাই জানুয়ারির তুলনায় ফেব্রæয়ারিতে লেনদেন কমেছে।
২০১১ সালের ৩১ মার্চ বেসরকারি খাতের ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালুর মধ্য দিয়ে দেশে মোবাইল ফিন্যানশিয়াল সার্ভিসেসের যাত্রা শুরু হয়। এর পরপরই ব্র্যাক ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালু করে বিকাশ। বর্তমানে মোবাইল ব্যাংকিং সেবার বাজারের সিংহভাগই বিকাশের দখলে। ডাচ্-বাংলা ব্যাংক এখন তাদের সেবাটি রকেট নামে ব্র্যান্ডিং করতে শুরু করেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, সর্বশেষ ফেব্রæয়ারিতে মোবাইল ব্যাংকিং সেবার মাধ্যমে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে এক হাজার ১৫ কোটি ৯০ লাখ টাকা। গত ফেব্রæয়ারি জুড়ে মোবাইল ব্যাংকিং হিসাবগুলোতে টাকা জমা পড়েছে ১১ হাজার ৯৬৫ কোটি টাকা। তোলা হয়েছে ১০ হাজার ৮৪২ কোটি টাকা। ব্যক্তি হিসাব থেকে ব্যক্তি হিসাবে অর্থ স্থানান্তর হয়েছে চার হাজার ৪২৮ কোটি টাকা। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বেতন-ভাতা বিতরণ হয়েছে ৪৫৭ কোটি টাকা। বিভিন্ন সেবার বিল পরিশোধ করা হয়েছে ১৮৬ কোটি টাকা। কেনাকাটার বিল পরিশোধ করা হয়েছে ১১৫ কোটি টাকা। সরকারি পরিশোধ ৭৮ কোটি ৮৫ লাখ টাকা।