নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
শামীম চৌধুরী : মুম্বাইয়ে উইন্ডিজের কাছে সেমিতে হেরে এমনিতে বিষাদে ছেয়ে গেছে পুরো ভারত। সেই শোক কেটে উঠতে না উঠতে ফাইনালের শহর কোলকাতায় ফ্লাইওভার ট্র্যাজেডীÑ২৩টি তাজা প্রাণের মর্মস্পর্শী মৃত্যু। স্বাগতিক ক্রিকেট দলকে দর্শক বানিয়ে ইডেন গার্ডেনসে তাই নেই ফাইনালের উত্তাপ। ১৯৮৭-র বিশ্বকাপ ক্রিকেটে ফাইনালে স্বাগতিক দল না থেকেও ৯৫ হাজার দর্শক হাজির হয়েছে ইডেনে, এবার যে প্রাক ফাইনালে দর্শক উপস্থিতির এমন সম্ভাবনা দেখছে না ক্রিকেট বিশ্লেষকরা। তারপরও ভারতের বৃহত্তম ক্রিকেট ভেন্যুতে আইসিসি’র মেগা আসরে দ্বিতীয় ফাইনাল, শোকাচ্ছন্ন কোলকাতাবাসী যে শোক কাটিয়ে ক্রিকেটে প্রানের স্পন্দন ফিরে পেতে চাইছে। যে কোলকাতাকে কেন্দ্র করে ভারতবর্ষে বৃটিশ সা¤্রাজের বিস্তার, সেই কোলকাতায় কি আজ উড়বে ইংল্যান্ডের পতাকা, না বেজে উঠবে ক্যালিপসো সুর ? তা দেখার জন্য অপেক্ষা আর মাত্র ক’ ঘন্টা। ইংল্যান্ড,ওয়েস্ট ইন্ডিজÑযে জিতবে,ট্রফি পুনরুদ্ধার করবে তারা। বিজয়ী দলের হাতে টি-২০ বিশ্বকাপের ট্রফিটা যাবে দ্বিতীয়বারের মতো।
গেইলের দানবীয় ব্যাটিংয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে হার দিয়ে টি-২০ বিশ্বকাপ শুরু করে ইংল্যান্ড এখন অন্য এক দলে পরিণত। ওই হারের ক্ষত মুছে ফেলতে টানা ৪ জয়ে এখন মাত্র একটি ধাপ পেরুনো বাকি ইংল্যান্ডের। সেমিতে আসরের ফেভারিট নিউজিল্যান্ডকে ছিন্ন ভিন্ন করে ২০১০-এর সুখস্মৃতিই রোমন্থন করছে ইংল্যান্ড। বিপরীতে টি-২০ বিশ্বকাপ খেলতে এসে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্যের জবাব দিতে নিজেদের চেনানোর সংকল্পে অনেকটা পথ দিয়েছে পাড়ি। মুম্বাইয়ে গত ১৬ মার্চ ইংল্যান্ডকে ৬ উইকেটে হারিয়ে ঠিকই যেনো ২০১২-র সেই ওয়েস্ট ইন্ডিজে আবির্ভাব স্যামীদের !
দলে সুনীল নারাইন নেই, নেই পোলার্ড। সেমিতে ফ্লেচারকে পায়নি, তারপরও কি দূর্দান্ত প্রান শক্তিতেই না এগিয়ে চলেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ত্রিনিদাদ থেকে উড়ে এসে সেমিতে সিমন্স ছিন্ন ভিন্ন করেছে ভারতকে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টি-২০ রেকর্ডটা তাদের দারুনÑ১৩ ম্যাচে ৯ জয়। টি-২০ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের কাছে হারের অতীত নেই তাদের। ইতোপূর্বের ৪ ম্যাচের ৪টিতেই জয়! জানেন, ক্রিকেটের বিশ্বমঞ্চে ট্রফির লড়াইয়ে ইংল্যান্ডকে পেলে যে একটু বেশিই চাঙ্গা থাকে বৃটিশ সা¤্রাজ্য থেকে বেরিয়ে আসা ক্যারিবিয়ানরা। আইসিসি বিশ্বকাপ ক্রিকেটের অভিষেক ২ আসর (১৯৭৫ ও ১৯৭৯) এবং ২০০৪ সালে অনুষ্ঠিত আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির তিনটির ট্রফি জয়েও যে ইংল্যান্ড বধ কাব্য রচনা করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
ইংল্যান্ডের মূল শক্তি ব্যাটিং, পাওয়ার প্লেতে ভয়ংকর তারা। চলমান টি-২০ বিশ্বকাপে পাওয়ার প্লেতে ইংল্যান্ডের রান রেট সর্বোচ্চ (৯.৫০)। প্রতি চার বলে গড়ে একটি করে চার মেরেছে তারা। পাওয়ার প্লেতে সর্বাধিক ৩৮টি চার, ৭ ছক্কা তাদের। পাওয়ার প্লেতে সেখানে ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান রেট ৬.৪৬। প্রতি ৫.৪ বলে একটি করে চার মেরেছে তারা।
চলমান টি-২০ বিশ্বকাপে ওভারপ্রতি ৯-এর বেশি রান কেবল ইংল্যান্ডের (৯.১২)। ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান রেট সেখানে ৭.৭৮। তবে স্পিনে এগিয়ে উইন্ডিজ। ওয়েস্ট ইন্ডিজ স্পিনারদের ইকোনমি রেট এই আসরে সবচেয়ে কম (৫.৭৩)। ইংল্যান্ড স্পিনারদের ইকোনমি রেট সেখানে সবচেয়ে বাজে (৯.৩৬)। ওয়েস্ট ইন্ডিজ স্পিনাররা উইকেট পিছু খরচা করেছে ২১.৩৬ রান। সেখানে ইংল্যান্ড স্পিনারদের উইকেট গড় ৩১.২২। টস ভাগ্যটাও ভাল ওয়েস্ট ইন্ডিজের। ৫টি ম্যাচের সব ক’টিতেই টসে জিতে চেজ করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
তবে ব্যাটিং শক্তিতে ভয়ংকর হয়ে ওঠা জো রুট, বাটলার, জেসন রয় একটার পর একটা ম্যাচ উৎসবের উপলক্ষ্য এনে দিচ্ছে যে দলকে, তাতে ভরসা রেখে ইতিহাসটা বদলে দিতে চান ইংলিশ অধিনায়ক মরগানÑ‘আমরা জানি এটা কোনো সাধারণ ম্যাচ নয়। ফাইনালে খেলার প্রত্যাশা ছিল বলেই সেমিফাইনালকে ঘিরে একটু বেশি উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল আমাদের মধ্যে। তবে আগামীকাল (আজ) আমরা আমাদের স্কিলকে মেলে ধরে ঠিকঠাক মতো তা প্রয়োগ করতে চাই।’
দলে খুব একটা অবদান রাখার সুযোগ পাচ্ছেন না স্যামী। তবে অধিনায়ক হিসেবে সংক্ষিপ্ত ভার্সনের ক্রিকেটে দ্বিতীয়বারের মতো টি-২০ বিশ্বকাপের ট্রফি জয়ের স্বপ্ন্টা দেখছেন এই উইন্ডিজ অধিনায়ক। ফাইনালের আগে প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ড দলকে নিয়ে বিশ্লেষন করে কৌশলও ঠিক করে ফেলেছেন স্যামীÑ‘ইংল্যান্ড দলকে নিয়ে আমরা বিশ্লেষন করেছি। ওদের ক্রিকেটারদের দেখেছি। তাদের দলে বেশ ক’জন ম্যাচ উইনার আছে ওদের। আমরা আমাদের দিকেই তাই ফোকাস করছি। টিম মিটিংয়ে একবার একজন সিনিয়র ক্রিকেটার বলেছিলেন, ডোয়াইন ব্রাভো, তার কাছে আমরা হেরে যেতে পারি। আমরা এটাই বিশ্বাস করি। আমরাই কেবল নিজেদেরকে হারাতে পারি। আমরা যা ভাল পারি, তা করতে পারলে আমরা জিতবই। ফাইনালে এই মানসিকতা নিয়েই নামছি আমরা।’ ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মুম্বাইয়ে ম্যাচ উইনিং সেঞ্চুরি ছাড়া বলার মতো ইনিংস নেই গেইলের। ফাইনালে গেইলের দানবীয় ব্যাটিংটাও যে বকেয়া আছে!
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।