পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
জাল ভোট, ব্যালট পেপার ছিনতাই ও গোলাগুলির মধ্যে গত বৃহস্পতিবার দেশের ১৩৩টি স্থানে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সাধারণ, বিভিন্ন পদে উপ-নির্বাচন, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে উপ-নির্বাচন, পৌরসভা সাধারণ ও বিভিন্ন পদে উপ-নির্বাচন এবং খুলনা ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের একটি করে সাধারণ ওয়ার্ডে স্থানীয় সরকার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জয়জয়কার অবস্থা ছিল। তবে ব্যাপক সহিংসতার মধ্যেও বিএনপির অনেক প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন।
এই নির্বাচনে দিনব্যাপী দেশের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক সহিংসতার খবর পাওয়া গেছে। বেশ কয়েকটি জায়গায় জাল ভোট প্রদান, ব্যালট বাক্স ও পেপার ছিনতাইয়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে প্রতিদ্ব›দ্বী প্রার্থীর লোকজন ও এজেন্টদের মারধর করে বের করে দেয়ার অভিযোগ রয়েছে বিস্তর। এ ছাড়া নির্বাচনী সহিংসতায় টাঙ্গাইলে বিএনপির এক নেতা নিহত হয়েছেন। বিচ্ছিন্ন ঘটনার মধ্যে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ করা হয়। এরপর ভোট গণনা চলে। ভোট গণনার সময় বিভিন্ন স্থানে উত্তেজনা ও মারামারির খবর পাওয়া গিয়েছে। বৃহস্পতিবার স্থানীয় সরকারের যেসব এলাকায় নৌকা ও ধানের শীষে লড়াই হয়েছে তাতে বড় ব্যবধানে জয় হয়েছে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীদের। যে ৫১টি ইউনিয়নে সাধারণ এবং উপ-নির্বাচনে ভোট হয়েছে, সেগুলোর চেয়ারম্যান পদের ২৮টিতেই জিতেছে আওয়ামী লীগের নৌকা। বিএনপির ধানের শীষ জিতেছে ১২টিতে। এসব ইউনিয়নে দলের মনোনয়ন না পেয়ে বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থীরা জিতেছেন ১০টি ইউনিয়নে। এদেরও বিএনপির চেয়ে বেশি আওয়ামী লীগেরই নেতা। যে চারটি পৌরসভার ভোট হয়েছে তার মধ্যে তিনটিকে আওয়ামী লীগ এবং একটিতে বিএনপি জিতেছে। আর শেরপুরের নকলা উপজেলায় পরিষদে চেয়ারম্যান পদেও জয় পেয়েছে ক্ষমতাসীন দল। স্থানীয় সরকারের মোট ১৩৩টি এলাকায় বিভিন্ন পদে ভোট হওয়ার কথা ছিল। তবে টাঙ্গাইলের ঘাটাইলের সাগরদীঘি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ভোট শুরুর আগেই নির্বাচনী সহিংসতায় সেখানে নির্বাচন স্থগিত করা হয়। চট্টগ্রামের স›দ্বীপে একটি ইউনিয়নে নির্বাচন স্থগিত হয়ে যায় ভোটের আগে আগে। আর টাঙ্গাইলের একটি ইউনিয়নে ভোট হয়নি ভোটের আগেই কেন্দ্রে হামলার ঘটনায় বিএনপির নেতার মৃত্যু পর। যেসব এলাকায় ভোট হয়েছে তার মধ্যে ৪৭ ইউনিয়ন পরিষদে সাধারণ নির্বাচন, চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন পদে উপ-নির্বাচন বা বিভিন্ন কেন্দ্রে স্থগিত নির্বাচন হয়েছে ৭২টি এলাকায়। এর বাইরে চারটি পৌরসভায় সাধারণ নির্বাচন এবং বিভিন্ন পদে উপ-নির্বাচন/স্থগিত সাতটি এবং খুলনা ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাধারণ ওয়ার্ডের একটি করে নির্বাচনে ভোট হয়। এসব নির্বাচনের মধ্যে কুমিল্লার আটটি ইউনিয়নের মধ্যে তিনটিকে বিএনপির প্রার্থীরা ভোট বর্জন করে কারচুপির অভিযোগে। সুনামগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে একটি কেন্দ্রে গোলযোগের পর সেটিতে ভোট স্থগিত করা হয়। আর যশোরের শার্শার লক্ষণপুর ইউনিয়নে বিজয়ী ও পরাজিত প্রার্থীর মধ্যে ভোটের ব্যবধান ছিল অস্বাভাবিক। সা¤প্রতিক সময়ের স্থানীয় নির্বাচনগুলোর মধ্যে বৃহস্পতিবারের ভোটেই বিএনপি অন্যান্য নির্বাচনের তুলনায় বেশি সংখ্যক এলাকায় জিতেছে।
এ বিষয়ে ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, যে সকল জায়গায় বিএনপির প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছে, সেগুলোতে আমাদের বিদ্রোহী প্রার্থীর কারণে তারা বিজয়ী হয়েছে। আমাদের অন্তঃকলহের ফসল বিএনপি ঘরে তুলেছে।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ভোটের দিন দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ এনেছিলেন। তিনি টাঙ্গাইল এবং চট্টগ্রামের নাজিরহাট পৌরসভায় ভোট নিয়ে আপত্তি জানান। তবে পরে নাজিরহাটে বিএনপির প্রার্থী এবং টাঙ্গাইলে আওয়ামী লীগের তুলনায় বিএনপির প্রার্থীরাই বেশি জিতেছেন।
পৌরসভা নির্বাচন
মোট পাঁচটি পৌরসভায় সাধারণ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হয়েছিল। এর মধ্যে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী বিনা ভোটে নির্বাচিত হয়ে যাওয়ায় সেখানে ভোটের দরকার পড়েনি। বাকি চারটির মধ্যে টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা, সুনামগঞ্জ ও ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে আওয়ামী লীগের জয় হয়েছে। আর চট্টগ্রামের নাজিরহাটে জিতেছে বিএনপি। এর মধ্যে সুনামগঞ্জ এবং এলেঙ্গায় বিএনপির প্রার্থী তৃতীয় হয়েছেন। হালুয়াঘাট পৌসবলায় তিন হাজার ৮৩৪ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন নৌকা প্রতীক নিয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী খায়রুল আলম ভ‚ঁইয়া। তার নিকটতম প্রতিদ্ব›দ্বী বিএনপি মনোনীত প্রার্থী আব্দুল হামিদ ধানের শীষ প্রতীকে পেয়েছেন তিন হাজার ৫১ ভোট। সুনামগঞ্জ পৌরসভায় আওয়ামী লীগের নাদের বখত ১৬ হাজার ৩৫২ ভোট পেয়ে জিতেছেন। তার নিকটতম স্বতন্ত্র প্রার্থী দেওয়ান গনিউল সালাদীন পেয়েছেন ৯ হাজার ৪৮৫ ভোট। বিএনপির প্রার্থী দেওয়ান সাজাউর রাজা চৌধুরী পেয়েছেন এক হাজার ৮০৭ ভোট। চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার নাজিরহাট পৌরসভা নির্বাচনে বেসরকারিভাবে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন বিএনপির এস এম সিরাজ উদ দৌলা। তিনি পেয়েছেন ৯ হাজার ৫৮২ ভোট। আওয়ামী লীগের মজিবুল হক চার হাজার ৫৯৩ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় হয়েছেন। টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার এলেঙ্গা পৌর নির্বাচনে ১৪ হাজার ১৬৪ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের নূর-এ-আলম সিদ্দিকী। তার নিকটতম স্বতন্ত্র প্রার্থী এসএম শফিকুল ইসলাম সাফি তালুকদার পাঁচ হাজার ৫৫৭ ভোট পেয়েছেন। ধানের শীষ প্রতীকে বিএনপির প্রার্থী শাফি খান পেয়েছেন পাঁচ হাজার ৪৭৪ ভোট।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।