Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নলকা ব্রিজের গার্ডারে ফাটল : ঢাকার সাথে উত্তরবঙ্গের সড়ক যোগাযোগ বন্ধের আশঙ্কা

সত্য হলো ইনকিলাবে প্রকাশিত সংবাদ

| প্রকাশের সময় : ২৬ মার্চ, ২০১৮, ১২:০০ এএম

মহসিন রাজু / সৈয়দ শামীম সিরাজী / জয়নাল আবেদীন জয় : ধারণ ক্ষমতার চেয়ে বেশি ওজনের ভারী যানবাহন চলাচলের কারণে উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার নলকা ব্রিজের এ্যাপ্রোচ ¯øাবের গার্ডারে ফাটল ধরে দেবে যাওয়ায় ব্রিজটি হুমকির মুখে পড়েছে। যে কোন সময় ব্রিজটি ভেঙে পড়ে ব্যাপক জানমালের ক্ষয়-ক্ষতির পাশাপাশি বন্ধ হয়ে যেতে পারে ঢাকার সাথে পুরো উত্তর বঙ্গের যোগাযোগ ব্যাবস্থা। এ ঘটনার পর ওই সেতুর উপর দিয়ে একলেনে যানবাহন চলাচল করায় বঙ্গবন্ধু যমুনা সেতু থেকে উত্তরাঞ্চলগামী মহাসড়কে যানবাহনের ধীর গতির কারণে গত শুক্রবার থেকে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। সড়ক জনপথ বিভাগ আপাতত প্রতিকার হিসেবে ব্রিজটির ওপর দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। উল্লেখ্য গত ৬ মার্চ “বঙ্গবন্ধু সেতুর ওজন স্কেলে অভিনব জালিয়াতি কোটি কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার” শিরোনামে একটি তথ্য বহুল একটি অনুসন্ধানী সংবাদ দৈনিক ইনকিলাবে প্রকাশ হলে সংশ্লিষ্ট মহলে তোলপাড় শুরু হলেও সময়োচিত পদক্ষেপের অভাবেই নলকা ব্রিজের এই ঘটনাটি ঘটলো বলে মনে করছেন সচেতন মহল। প্রকাশিত ওই সংবাদে ধারণ ক্ষমতার অধিকভারী যানবাহন চলাচলে সড়ক মহাসড়কগুলো এবং ব্রিজ কালভার্টগুলো ভয়াবহ হুমকি এবং যে কোন সময় ভেঙে গিয়ে উত্তরাঞ্চেেলর সাথে ঢাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্নের আশংকার কথা উল্লেখ করা হয়েছিল। সংবাদটি প্রকাশের ১৮ দিন অতিবাহিত না হতেই উত্তরাঞ্চলের প্রবেশমুখ নলকা ব্রিজটিতে ফাটল দেখা দিয়েছে। একই সাথে ব্রিজটির এ্যাপ্রোচ ¯øাবের গার্ডার দেবে গেছে। নলকা ব্রিজের ন্যায় উত্তরাঞ্চলের অনেক ব্রিজ-কালভার্ট এবং মহাসড়ক ভারী যানবাহন চলাচলের কারণে চরম হুমকির মুখে রয়েছে। নলকা ব্রিজের ফাটল এবং দেবে যাওয়ার ঘটনায় যে কোন সময় এমন আরো অনেক ব্রিজ-কালভার্ট ভেঙে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। যা সবাইকে নতুন করে ভাবিয়ে তুলেছে। অথচ বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগের কাউকেই তেমন মাঠ পর্যাযে উদ্যোগী হতে দেখা যাচ্ছে না। অথচ বঙ্গবন্ধু যমুনা সেতুর ওজন স্কেলে এসব অধিকভারী যানবাহনগুলো আটকে দিলেই উত্তরাঞ্চলের সড়ক মহা-সড়ক এবং ব্রিজ কালভার্টগুলো রক্ষা করা যেতে পারে মনে করে সড়ক বিভাগ। এই সেতুর ওজন স্কেলের অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্য এসব ভারী যানবাহন চলাচলের সহায়তা করে গোপনে কোটি কোটি টাকা লুটে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে। জানা যায়, গত শুক্রবার সন্ধায় উত্তরবঙ্গ প্রবেশদ্ধার উল্লাপাড়া উপজেলার হাটিকুমরিল গোলচত্ত¡র থেকে ৪ কিলোমিটার পূর্বে ২শ’ ৩৫ কিলোমিটার লম্বা নলকা ব্রিজের এ্যাপ্রোচ ¯øাবের গার্ডারে ফাটল ধরে দেবে যাওয়ায় ব্রিজটি এখন চরম হুমকির মুখে পড়েছে। ধারণ ক্ষমতার অধিক ওজনের মালামালবাহী যানবাহন, প্রাইম মুভার ও ট্রেইলার চলাচলের কারণেই এমনটি হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ধারণ ক্ষমতার কয়েকগুণ ভারী যানবাহনের কারণে এ অঞ্চলের মহাসড়কগুলো নির্মাণ শেষ না হতেই আবার ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। একই সাথে ব্রিজ-কালভার্টগুলোও ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। ঝুঁকির মুখে রয়েছে দেশের বৃহত্তম বঙ্গবন্ধু যমুনা সেতুসহ উত্তরাঞ্চলের সড়ক ও মহাসড়কের ছোট বড় ব্রিজ-কালভার্ট এবং শত শত কিলোমিটার সড়ক। ভারী যানবাহন চলাচল করায় এসব রাস্তা ও ব্রিজ কালভার্ট মেরামতে প্রতি বছর সরকারি কোষাগার থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা বাড়তি ব্যায় হচ্ছে। নলকা ব্রিজটির এ্যাপ্রোচ ¯øাবের গার্ডার ফেটে দেবে যাওয়ার খবর পেয়ে সড়ক ভবনের সড়ক বিভাগের ব্রিজ ডিজাইনের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আব্দুর রহমান, রাজশাহী জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ঘটনাস্থলে থেকে দ্রæত মেরামত কাজ তদারকি করছেন।
সড়ক ভবনের সড়ক বিভাগের ব্রিজ ডিজাইনের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আব্দুর রহমান জানান, ধারণ ক্ষমতার অধিক লোড নিয়ে গাড়ি পারাপারের কারণে নলকা ব্রিজের এ্যাপ্রোচ ¯øাবের গার্ডারের একাংশ ফেটে গেছে। অতিদ্রæত নিচ থেকে আরেকটি পিলার উঠিয়ে ব্রিজটি রক্ষা করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের রাজশাহী জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোঃ রওশন আলী জানান, ধারণক্ষমতার অধিক ওজনের ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধে আমরা চেষ্টা করছি কিন্ত পেরে উঠিনি। বেশী লোড নেওয়ায় সড়ক, ব্রিজ, কালভার্ড ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। আবার অনেক সড়কের মেয়াদ উত্তীর্ন হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। যেমন হাটিকুমরুল-বনপাড়া এবং হাটিকুমরুল-শাহজাদপুর সড়ক। এই সড়কগুলো বারবার মেরামত করলেও নিচের বেড ড্যামেজ থাকার কারণে সিলকোট কার্পেটিং উঠে যাচ্ছে। নিচের বেড তুলে ফেলে দিয়ে নতুন করে কাজ করতে হবে। ২ এক্সেল (৬ চাকার) গাড়ীর লোড যদি সামনের দুই চাকার উপর আনা হয় তাহলে সড়ক বা ব্রিজ ক্ষতিগ্রস্থ হবে। এ জন্য এক্সেল বাড়িয়ে লোড দিলে, লোড বিভাজন হয়ে যায় এতে সড়ক বা ব্রীজেরও কোন ক্ষতির আশঙ্কা থাকে না বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ব্রিজ

২ সেপ্টেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ