Inqilab Logo

সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ধর্মীয় কাজেও মাইক ব্যবহারে সংযম খুবই জরুরি

উবায়দুর রহমান খান নদভী | প্রকাশের সময় : ২৩ মার্চ, ২০১৮, ১২:০০ এএম

ইসলাম শান্তির ধর্ম। শান্তি অর্থ ‘আসসালাম’। মুমিনদের বিশ্বজনীন অভিবাদন ‘আসসালামু আলাইকুম’। আল্লাহর একটি গুণবাচক নাম এটি। জান্নাতের পরিচিতিও ‘দারুসসালাম’ বা শান্তির ঠিকানা। আওলিয়ায়ে কেরাম বলেছেন, ‘জান্নাত আঁ বাশাদ কে আযারে না বাশাদ’। যেখানে কোনো কষ্ট নেই, সেটিই জান্নাত। ইসলাম এমন একটি জীবন ব্যবস্থা যেখানে কেবল শান্তিই শান্তি। দোয়ায় যেমন বলা হয় ‘আল্লাহুম্মা আনতাস সালাম ও মিনকাস সালাম’। হে আল্লাহ, আপনি শান্তির আধার, শান্তি আপনার কাছ থেকেই আসে। নবী করিম (সা.)-এর রওজা পাকে প্রথম প্রবেশের নিয়ম হলোÑ ‘বাবুস সালাম’ দিয়ে প্রবেশ করা। শান্তির নবী, রহমতের নবী নামায পড়াচ্ছিলেন, শুনলেন, মসজিদ সংলগ্ন কোনো বাড়িতে ছোট্টশিশুর কান্না। তিনি নামায সংক্ষিপ্ত করে ফেললেন। বললেন, আমার ধারণা হলো এই শিশুটির মা হয়তো আমাদের জামাতে শরীক হয়েছে। (নামায দীর্ঘ হলে শিশুর কান্নাও থামবে না আর তার মা নামাযে মন বসাতে পারবে না।) এই ছিল আমাদের প্রাণপ্রিয় নবীজির মানবিক অনুভূতি। আল্লাহর ইবাদত মানুষকে অস্বীকার করে নয়। আধ্যাত্মিক সাধনা নারী শিশু সমাজ ও প্রতিবেশকে না দেখে নয়। এক গ্রাম্য ব্যক্তি মদীনা শরীফে এসে মসজিদে নববীর এরিয়ায় পেশাব করতে বসে পড়লো। উপস্থিত সাহাবীরা সশব্দে তাকে নিবৃত করতে ছুটলেন। নবীজি (সা.) তাদের থামিয়ে দিয়ে বললেন, ‘লোকটি যখন না বুঝে বসেই পড়েছে তখন তাকে শান্তিতে তার কাজটি সারতে দাও। পরে বুঝিয়ে বলো যেন সে ভবিষ্যতে আর এমন না করে।’ নবী করিম (সা.) লোকটিকে বিব্রত করা কষ্ট দেওয়া বা লজ্জায় ফেলে দেওয়া পছন্দ করেন নি। এই ছিল মহানবী (সা.)-এর আখলাক ও আচরণ। হাজার ঘটনা এমন আছে।
ইসলামে এমন বিধান রয়েছে, নামাযের জামাতে ইমাম সাহেব সবচেয়ে বয়স্ক ও দুর্বল ব্যক্তিটির প্রতি লক্ষ্য করে নামায আদায় করবেন। ইসলামে জোরে মাইক লাগিয়ে কোরআন শরীফ শবিনা পড়া আলেমগণ সমর্থন করেন না। কারণ, কোরআন পড়ার সময় নীরবে মন লাগিয়ে তা শোনা শ্রোতাদের ওপর ওয়াজিব। নির্দিষ্ট জায়গায় ইচ্ছাকৃতভাবে সমবেত মুসলমান ছাড়া দুনিয়ার নানা কাজে ব্যস্ত মুসলিমদের পক্ষে তা সম্ভব হয় না। তাছাড়া সারারাত উচ্চশব্দে কোরআন পাঠ করলে তা কোনো রোগী, পরীক্ষার্থী, গবেষক, বৈধ যৌনসম্পর্কে লিপ্ত, বিষণœ, নিদ্রামগ্ন, বৃদ্ধ, শিশু বা পাপকার্যে লিপ্ত মানুষের জন্য ‘বিরক্তি বা বিব্রতকর’ হওয়া অসম্ভব নয়। ফলে তারা কেউ যদি কোরআনের বিরুদ্ধে কোনো অসতর্ক উক্তি করে বসে তাহলে তাদের যেমন গুণাহ হবে, ক্ষেত্র বিশেষে ইমানও নষ্ট হতে পারে। এমনিভাবে শরীয়তবিরোধী এমন উপস্থাপনার জন্য এর উদ্যোক্তারাও গুনাহের ভাগি হবেন। স্বয়ং কোরআনের ক্ষেত্রেই যদি শব্দ নিয়ন্ত্রণের মাসআলা থাকে তাহলে ওয়াজ ও জিকিরের জন্য থাকবে না কেন। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেছেন, ‘মনে মনে তুমি আল্লাহর জিকির করো, গোপনে ও ভীতকম্পিত হয়ে, উচ্চকণ্ঠে নয়’। হযরত আবু বকর রা. বলতেন, তাহাজ্জুদে কোরআন তেলাওয়াত খুব নিম্নস্বরে করো। যাতে অন্য কারো ঘুম না ভাঙ্গে। হযরত ওমর রা. বলতেন, আমি চাই তেলাওয়াত হালকা উচ্চস্বরে হোক। যাতে নিদ্রিত ব্যক্তির ঘুম না ভাঙ্গে কিন্তু কিছুটা সজাগ ব্যক্তি পূর্ণ জাগ্রত হয়ে যায়। যেন, তার পক্ষে কিছু নামায ও তেলাওয়াত করা সম্ভব হয়। এই ছিল মহান খলিফাদের দৃষ্টিভঙ্গি। মাইক বা শব্দযন্ত্র আবিষ্কারের আগে মানুষ আযান নামায ওয়াজ জিকির ইত্যাদি নিজের কণ্ঠ ব্যবহার করেই করতো। বর্তমানে মাইক ছাড়া এর কোনোটাই চলে না। মোবাইল নিয়েও একই কথা। দেশে-বিদেশে বহু আলেম এখন মোবাইল ব্যবহারের মাসআলা মাসায়েল নিয়ে কিতাব লিখছেন। বাংলাদেশেও বহু বই লেখা হয়েছে। মাইকের ব্যবহার নিয়েও যথেষ্ট আলোচনা হয়ে থাকে। তারপরও বহুলোক এলেম না থাকার কারণে মাইক ব্যবহারের ব্যাপারে শরীয়তের নির্দেশনা পালন করতে পারে না। যেখানে অল্প মানুষ, তারা সেখানেও বেশি মানুষের সমান শব্দ তৈরি করে। যে আলোচনা মসজিদ বা হল রুমে সীমাবদ্ধ থাকা উচিত, তা দুনিয়ার কাজে ব্যস্ত ও অমনোযোগী মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়ার জন্য খামাখাই পাড়ায়-মহল্লায় মার্কেট ও রাজপথে লাউডস্পিকার দিয়ে বিকট শব্দের সৃষ্টি করে। যার একটি কথাও কেউ কোথাও বসে মনোযোগ দিয়ে শুনে কিনা সন্দেহ। তবে হাজারো মানুষ শব্দদূষণের শিকার হয়। ধর্মীয় বিষয় বলে কেউ কিছু বলে না। মনে করে এটাই নিয়ম। কিছু বললে গুনাহ হয় কি না। তাছাড়া সামাজিকভাবেও নিগৃহীত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। অথচ ইসলাম এসব সমর্থন করে না। মানুষের কষ্ট হয় এমন কোনো আয়োজন শরীয়ত কোনোদিন সমর্থন করেনি, ভবিষ্যতেও করবে না। নবী (সা.)-এর সুন্নত ও শরীয়তের জনকল্যাণমূলক নীতি এসব বিষয়ে পরিমিতি সংযম ও শান্তির পক্ষে। একজন হৃদরোগীর কষ্ট বিবেচনা করে, কয়েকজন পরীক্ষার্থীর অসুবিধা বিবেচনা করে মাইক বন্ধ রাখা ইসলামের মৌলিক শিক্ষার মধ্যে পড়ে। যেখানে কোরআন তেলাওয়াতরত ব্যক্তিকে সালাম না দেয়া, জরুরি আলোচনায়রত মানুষদের সালাম না দেয়া, খানা খাওয়া অবস্থায় কাউকে সালাম না দেয়া, গভীর চিন্তামগ্ন মানুষকে সালাম না দেয়া, জিকির বা অযিফা পাঠরত মানুষকে সালাম না দেয়া, জুমার দিনে নামায ও খুতবা চলাকালে মুসল্লীদের সালাম না দেয়া শরীয়তের বিধান। সেখানে ব্যক্তিগত হাজারো কাজে নিমগ্ন মানুষের কানের কাছে ১০টি ২০টি মাইক বেঁধে দিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ওয়াজ শুনতে বাধ্য করা কতটুকু যৌক্তিক তা উদ্যোক্তাদের ভেবে দেখতে হবে। চট্টগ্রাম অঞ্চলে মাহফিল হয় দিনব্যাপী। এতে মানুষের ঘুম নষ্ট হয় না। বৃহত্তর মোমেনশাহীর পথিকৃত আলেম মাওলানা আহমাদ আলী খান রহ. রাত ১১টার পর কোনো মাহফিল সমর্থন করতেন না। বলতেন, এতো সব মানুষের কষ্ট হয়। আর ফজর কাযা হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়। বি. বাড়ীয়ার বড় হুজুর মাওলানা সিরাজুল ইসলাম রহ. নিয়ম জারী করে গেছেন, তার অঞ্চলে ১২টার পর কোনো মাহফিল থাকে না। অথচ দেশব্যাপী এখন দুপুর থেকে সারারাতব্যাপী এমনকি পরদিন বেলা ৮টা পর্যন্ত একটানা সারা এলাকা মাইকের আওয়াজে গমগম করে। কেউ কষ্ট পাচ্ছে কি না তা ভেবে দেখারও যেন কারও সময় বা সাহস নেই। দেশের শীর্ষ আলেমদের প্রায় সবাই আমার সাথে এপ্রসঙ্গে কথা বলার সময় ‘সারারাত মাহফিল’ ও ‘অতিরিক্ত মাইক’ নিয়ে নিজেদের অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। মসজিদ হেফজখানা মাদরাসা স্কুল হাসপাতাল ও আবাসিক এলাকা বিবেচনা না করে গায়ের জোরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, গান-বাজনা, বিভিন্ন দিবস পালন করা এদেশে রেওয়াজ আছে বটে তবে ধর্মের ব্যাপারে যেন এমন অসাবধানতা কেউ না করতে পারে, এ ব্যাপারে সমাজের সচেতন ব্যক্তি, মুরব্বীগণ, ওলামায়ে কেরাম, ইমাম-খতিব সাহেবান সতর্ক দৃষ্টি রাখবেন। কিছু লোক বিয়েশাদী, মুসলমানি, গায়ে হলুদ, জন্মদিন ইত্যাদিতে উচ্চশব্দে গান-বাজনা করে মানুষকে যেভাবে কষ্ট দিচ্ছে তা একটি সভ্য সমাজে চলে না। কিন্তু এদেশের ‘জনঅশান্তি’ বিষয়টি খুবই কম গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় এসব মানসিক অত্যাচার জনগণকে সহ্য করতে হচ্ছে। কিছুদিন আগে বিয়ে অনুষ্ঠানে উচ্চশব্দে ড্রাম-বিট পেটানোর ব্যাপারে অভিযোগ করায় বিয়ে বাড়ির নারী পুরুষেরা মিলে একজন হৃদরোগী প্রতিবেশীকে পিটিয়ে মেরে ফেলে। একই ভবনের বাসিন্দা অথচ একজন কঠিন রোগীর প্রতি এতটুকু মায়া বা দয়া অন্যদের অন্তরে কেন পাওয়া গেল না, এ প্রশ্ন গোটা জাতির। আসলে সমাজের উপর থেকে নিচ পর্যন্ত নানা পাপাচারে আমাদের উপলব্ধি ও মনুষ্যত্ব লোপ পেয়ে যাচ্ছে। যা আল্লাহর একটি বড় গজব।
কিছু নাস্তিক-মুরতাদ ও ছদ্মবেশী বেঈমান বুদ্ধিজীবী এসব নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে মিন মিন সুরে ইসলামবিরোধী কথা বলার সুযোগ নেয়। তারা বলে, মাইকে আযান বন্ধ করা হোক। ওয়াজ মাহফিল যেন এতো বেশি না হয়। আমাদের বুঝতে হবে, যদি ইসলামের পাবলিক অধিকার আমরা না দেই। যদি আমরা নাগরিকদের শান্তির দিকে খেয়াল না রেখে ধর্মের নামে যাচ্ছেতাই করে বেড়াই। যদি বিজ্ঞ আলেমদের পরামর্শ না শুনে এলেমহীন লোকজন গায়ের জোরে মসজিদ মাদরাসা খানকাহ ও মাহফিল চালায়। তাহলে দূষমনরা তাদের শয়তানি দাবির পক্ষে কিছু হলেও জনসমর্থন পেয়ে যাবে। যারা জাহেল উদ্যোক্তাদের অতিরিক্ত বাড়াবাড়ির ফলে বিরক্ত তারা ওইসব ইসলামবিদ্বেষীর কথায় সমর্থন দিবে। একটি মসজিদ যত দূর এলাকার মুসল্লিকে কভার করে, এরচেয়ে দূরে এই মসজিদের মাইকের আওয়াজ পৌঁছানো কতটুকু জরুরি তা মসজিদ কমিটিকে ভাবতে হবে। মিনার বা ছাদে কিংবা পাশের ভবনে মসজিদ কমিটি যখন লাউডস্পিকার লাগান, তখন তাদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখতে হবে যে, এ যন্ত্রটির সবচেয়ে কাছে যে ঘর বা বাড়িটি তাদের কাছে এর শব্দটি কতটুকু সহনীয়। দূরে যা সুমধুর খুব কাছে তা কষ্টদায়কও হতে পারে। বিশেষ করে নবজাতক, ছোট্টশিশু, বৃদ্ধ, হৃদরোগী, অন্যান্য রোগী, শ্রমক্লান্ত মানুষ বা ইবাদতরত ব্যক্তি এ আওয়াজটি কিভাবে নিচ্ছে। সারা শহরের বা দূর পল্লীর সব মসজিদ যদি নিজ প্রয়োজন পরিমাণ আওয়াজে দ্বীনি কাজ সারে। যদি ওয়াজ মাহফিলগুলো দুনিয়াবী অন্যান্য প্রোগ্রামের সাথে পাল্লা না দিয়ে নিজের নীতি-নিয়ম মেনে সংযত উপায়ে মাইকের ব্যবহার করে, তাহলে এসবের রহমত বরকত ও ফলাফল আশানুরূপ হবে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। এবছর দেশের অনেকগুলো জেলা শহর ও ছোট বড় নগরীতে এমনও দেখা গেছে যে, শুকনো মৌসুমের প্রায় ৪/৫ মাস প্রতিদিন একাধিক ওয়াজ মাহফিল সামান্য দূরত্বে সংঘটিত হয়েছে। চারপাশ থেকে দুর্বোধ্য আওয়াজ দুপুর থেকে শেষরাত পর্যন্ত বাধ্য হয়ে শহরবাসীকে শুনতে হয়েছে। তাদের পছন্দের, মহব্বতের ও সওয়াবের এসব মাহফিল তারাই প্রমোট করেছেন। প্রয়োজনে টাকা-পয়সা দিয়েছেন। যারা পেরেছেন সভাস্থলে গিয়ে বয়ান শুনেছেন। মহিলারা পর্দাবৃত প্যান্ডেল বা নির্দিষ্ট বাড়িতে বসে ওয়াজ নসীহত শুনেছেন কিন্তু যারা এভাবে শামিল হতে পারেননি, তাদের নিতান্ত অনিচ্ছাসত্তে¡ও প্রায় প্রতিদিন কয়েক ঘণ্টা শব্দের এ তুফান সইতে হয়েছে। তারা অনেকে বোঝেনওনি যে, এটি ধর্মের বিধান নয়। তাদের কষ্ট হওয়া মানে তারা ইসলামবিরোধী নন। তাদের বিরক্ত বা পেরেশান হওয়া গুনাহের কাজ নয়। এসবই হাক্কানী বিজ্ঞ আলেম মুফতি মুরব্বী ও মাশায়েখের ইচ্ছার বাইরে। অবুঝ যুবাতরুণ বা বে-এলেম আয়োজকদের অজ্ঞতার বহিঃপ্রকাশ। ইসলাম যা সমর্থন করে না। শরীয়তে স্পষ্ট বলা আছে, ‘মানুষকে কষ্ট দেয়া হারাম’। শরীয়ত যে নির্দেশ চাপিয়ে দেয়নি, নিজ সিদ্ধান্তে এমন কঠোর পরিবেশ বা পাবলিক নুইসেন্স তৈরি করা শরীয়তে পরিষ্কার নিষিদ্ধ। যে জন্য হযরত ওমর রা. একবার এক ব্যক্তিকে এজন্য শাস্তি দিয়েছিলেন যে, সে লোকটি নামাযের পর মসজিদে দাঁড়িয়ে বলেছিল, ‘কিছু খেজুর পাওয়া গেছে, যার হয় নিয়ে যাবেন’। সাজা দেয়ার সময় বলেছিলেন, ‘মদীনায় কি এখন দূর্ভিক্ষ চলছে যে, কয়েকটি খেজুরের জন্য গোটা মসজিদের মুসল্লীদের মনোযোগ আকর্ষণ করতে হবে। এটি কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো। এমন ফালতু একটি কাজের জন্য সব মুসল্লীকে বিরক্ত করায় তোমাকে এই শাস্তি দিলাম।’ পাঠক ভেবে দেখুন, আমাদের দেশে নামাযে আসা মানুষকে কতকিছু বলেই না মসজিদে বিরক্ত করা হয়। নেহায়েত অশিক্ষিত ও অযোগ্য লোকজন ধর্মীয় প্রয়োজন ছাড়া নানা বাজে কথা মসজিদে দাঁড়িয়ে অবলীলায় বলতে থাকে। আর আল্লাহর ইবাদতের জন্য মন তৈরি করে মসজিদে আসা মানুষ কষ্ট করে এসব শুনতে বাধ্য হন। শরীয়তে বিধান আছে, মসজিদের বাইরে সংঘটিত কোনো বিষয়ের এ’লান মসজিদে করা যাবে না। কিন্তু এখন দেখা যায়, দুনিয়ার সব ছোট বড় মরা বাঁচা ভালো মন্দ সব ঘোষণা, এ’লান, দোয়া, দাওয়াত নির্দ্বিধায় মসজিদে বসে করা হচ্ছে। শরয়ীত প্রয়োজন ছাড়া যখন তখন মসজিদের মাইক ব্যবহৃত হচ্ছে। আর ইসলামবিদ্বেষী নাস্তিক মুরতাদরা সুযোগ বুঝে এ নিয়ে উল্টাপাল্টা কথাও বলছে। আল্লাহর রহমতে নামাযী বৃদ্ধি পাওয়া ও মসজিদের দ্রæত বিকাশ একটি ইতিবাচক বাস্তবতা। তবে এসবের মাসআলা মাসায়েল সুন্নত ও আদব শিক্ষা সেই গতিতে হচ্ছে না। আমরা বাস্তবতা তুলে ধরে সবাইকে সচেতন হওয়ার আহŸান জানাচ্ছি। আবেদন করছি, দ্বীনি বিষয়েও শরীয়তের নির্দেশনা না জেনে কেউ কোনো কাজ করবেন না। জেনে নিন, আপনার এই নেককাজটির ব্যাপারে ওলামায়ে-কেরাম কী বলেন। কোরআন সুন্নাহ কী বলে।



 

Show all comments
  • Asadullah ghalib ২৩ মার্চ, ২০১৮, ১২:৫৭ এএম says : 0
    Very good analysis, thanks.
    Total Reply(0) Reply
  • ফারজানা ২৩ মার্চ, ২০১৮, ৩:৪৮ এএম says : 0
    অনেক সুন্দর এবং যৌক্তিক লেখা। লেখককে ধন্যবাদ জানাই
    Total Reply(0) Reply
  • মাহমুদ ২৩ মার্চ, ২০১৮, ৩:৪৮ এএম says : 0
    দৈনিক ইনকিলাবের কাছ থেকে আমরা সব সময়এই ধরনের দিকনির্দেশনাই চাই।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জরুরি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ