গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে উত্তরণের যোগ্যতা অর্জন করায় আজ বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে সরকার। এ জন্য বেশ কয়েকটি সড়কে যান চলাচল সীমিত করা হয়েছে। সকাল থেকে এখন পর্যন্ত সড়কে যানজট তেমন না থাকলেও যান চলাচল কম দেখা গেছে। ফলে যানবাহনের অভাবে দুর্ভোগে পড়েছেন অনেকেই।
বেলা ১১টার দিকে ফার্মগেট থেকে কারওয়ান বাজার হয়ে বাংলামোটর দিয়ে শাহবাগ এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, সকালে এসব সড়কে যানবাহনের চাপ থাকলেও বড় কোনো যানজট হয়নি। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এসব সড়কে যান চলাচলও কমে এসেছে। যানবাহন কম হওয়ায় মানুষকে বাসের জন্য দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে।
বেলা ১১টার দিকে শাহবাগ এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, সড়কে যান চলাচল কম হওয়ায় অনেক মানুষ রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছেন। জরুরি কাজে শাহবাগ এসেছিলেন আফরোজা বেগম। তিনি যাবেন ক্যান্টনমেন্ট এলাকায়। তিনি বলেন, ‘অনেকক্ষণ থেকে ক্যান্টনমেন্ট এলাকার বাসের জন্য অপেক্ষা করছি। কিন্তু পাচ্ছি না। আবার কোনো সিএনজিও পাচ্ছি না।’
মিরপুর হয়ে ফার্মগেট থেকে গুলিস্থান ও মতিঝিল গন্তব্যে চলে ভিশন পরিবহনের বাস। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কারওয়ান বাজারে বাসের চালক মানিকের সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, ‘সকালে রাস্তায় কিছুটা জ্যাম আছিলো। অখন একদম ফাঁকা।’
দুপুর পৌনে ১২টার দিকে বাংলামোটরের দোকানদার আমির হোসেন বলেন, অনুষ্ঠানের কথা ভেবে মনে হয় আগে থেকেই মানুষ সতর্ক হয়ে গেছে। সকালে রাস্তায় ভিড় ছিল, এখন কম।
মোহাম্মদপুর থেকে ফার্মগেট এলাকায় এসেছেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা মনজুর। তিনি বলেন, ‘রাস্তা অনেকটাই ফাঁকা আর যানবাহনও কম। অন্য দিনের তুলনায় কম সময়ে অফিসে এসে পৌঁছেছি। আসাদগেটে কিছুটা যানজট ছিল, তবে রাস্তার অবস্থা দেখে ছুটির দিনের আমেজই পেলাম।’
তবে সকালে মিরপুর এলাকায় অন্যান্য দিনের তুলনায় বেশি যানজট ছিল। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী নুসরাত বলেন, তিনি সকাল সাড়ে নয়টার দিকে মিরপুর ১২ থেকে বাসে ওঠেন গুলিস্তানে যাবেন বলে। কিন্তু বাসে উঠে দেখেন, কিছু দূর যাওয়ার পর বাস যানজটের কারণে থেমে আছে। তিনি আগের বাস পরিবর্তন করে কিছু দূর হেঁটে দেখেন একই অবস্থা। বাসের চালকেরাও তাকে বলেন অনেক যানজটের কারণে বাস ধীরে চলছে। যানজট ঠেলে ফার্মগেট আসার পর বাকি রাস্তা অনেকটা ফাঁকাই পেয়েছেন তিনি।
গতকাল বুধবার ঢাকা মহানগর পুলিশের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে উত্তরণের যোগ্যতা অর্জন করেছে বাংলাদেশ। এ উপলক্ষে আজ বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে সরকার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। এতে ৫৭টি মন্ত্রণালয়, বিভাগ এবং অধীন দপ্তরগুলো অংশ নেবে। তারা ব্যানার, ফেস্টুনসহ শোভাযাত্রা করে স্টেডিয়ামে আসবে। নয়টি স্থান থেকে শোভাযাত্রা করে স্টেডিয়ামে আসার কারণে আজ বেলা ২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম এবং চারপাশের বিভিন্ন সড়কে যান চলাচলে সমস্যা হবে।
ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া গতকাল এক বিবৃতিতে বলেন, শোভাযাত্রা যাতে নির্বিঘ্নে চলতে পারে, সে কারণে শাহবাগ, কাকরাইল মসজিদ, নাইটিঙ্গেল, ফকিরাপুল, শাপলা চত্বর, গুলিস্তান, ফুলবাড়িয়া, চানখাঁরপুল, বকশীবাজার, পলাশী ও নীলক্ষেত অঞ্চলে চলাচলকারীদের বিকল্প সড়ক ব্যবহার করতে হবে। এ অবস্থায় জনসাধারণকে নিতান্ত প্রয়োজন ছাড়া গাড়ি নিয়ে এসব পথে না যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
দায়িত্বশীল পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আজকের অনুষ্ঠান উপলক্ষে শাহবাগ থেকে শুরু করে কাকরাইল হয়ে ফকিরাপুল, দৈনিক বাংলা পর্যন্ত সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। তবে হেঁটে চলাচল করা যাবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, যেকোনো ধরনের নাশকতা এড়াতে সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী যে অনুষ্ঠানস্থলে থাকবেন, সেখানে ব্যাক-প্যাক নিতে বারণ করা হয়েছে। বিশেষ করে পিঠে বহন ব্যাগ নিয়ে প্রবেশ করা যাবে না। তিনি জানান, স্টেডিয়ামের ভেতরে কেউ ধারালো বস্তু, দাহ্য পদার্থ বা আগুন জ্বালাতে পারে—এমন বস্তু বহন করতে পারবেন না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।