বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
একতরফা নির্বাচন বিপদমুক্ত করতে বিএনপি চেয়ারপার্সনকে বেগম খালেদা জিয়াকে বন্দি রাখা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের গতকালও বলেছেন-বিএনপি চেয়ারপার্সনের জামিন স্থগিতে সরকারের কোনো হস্তক্ষেপ নেই।’ কিন্তু ওবায়দুল কাদেরের কথাতেই বোঝা যাচ্ছে ‘ঠাকুর ঘরে কে রে, আমি কলা খাইনির মতো ঘটনা। অর্থাৎ বেগম খালেদা জিয়ার জামিন স্থগিতে সরকার সরাসরি হস্তক্ষেপ করেছে।
বুধবার (২১ মার্চ) সকালে নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে রিজভী এসব বলেন।
রিজভী বলেন, যেখানে মহামান্য হাইকোর্ট বা বিচারিক আদালত জামিন দিয়েছে, মামলার বিচারকাজও চলমান, বেগম জিয়া বাংলাদেশের তিনবারের প্রধানমন্ত্রী, দুই বারের বিরোধী দলীয় নেত্রী, বৃহৎ রাজনৈতিক দলের প্রধান, তাকে জামিন দেওয়া হলে তিনি দেশ থেকে কখনোই পালিয়ে যাবেন না, এমন একজন ব্যক্তির জামিন স্থগিত করা হলো। এমন নজির কি কোথাও আছে? এটা কেবলমাত্র বাংলাদেশের নজিরবিহীন ভোটারবিহীন সরকারই করতে পারে।
তিনি বলেন, আমি দৃঢ়ভাবে বলতে চাই বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা রাজনৈতিক, নিম্ন আদালতের দেয়া সাজা রাজনৈতিক ও জামিন স্থগিতের আদেশও রাজনৈতিক। সারাদেশের জনগণ সেটিও দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে। বিএনপি চেয়ারপার্সনের জনপ্রিয়তাই শেখ হাসিনার প্রতিহিংসার কারণ, অন্য কিছুই নয়।
রিজভী সরকারকে চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলেন, এ মুহূর্তে যদি নির্বাচন হয় এবং সে নির্বাচন যদি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে হয় এবং জনগণ স্বতঃ:স্ফূর্তভাবে নিজের ভোট নিজে দিতে পারে তাহলে বিএনপি বিপুল ভোটে বিজয়ী হবে। আওয়ামী লীগ টের পেয়েছে-জনগণ তাদের সাথে নেই, নিরপেক্ষ ভোট হলে তাদের ভরাডুবি হবে। তাদের দুঃশাসনে দেশের মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। বারবার মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করার জবাব জনগণ দিতে প্রস্তুত।
তিনি বলেন, বর্তমান ভোটারবিহীন সরকারের লুটপাট, দুর্নীতি, অপশাসনের বিরুদ্ধে রায় দিতে জনগণ উদগ্রীব হয়ে আছে। তাই আওয়ামী লীগ দিশেহারা হয়ে ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত করে বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা সাজানো ও জালনথির মাধ্যমে মামলা দিয়ে নিম্ন আদালতকে ব্যবহার করে সাজানো রায় দিয়ে কারাবন্দি করে রেখেছে। নকলের ছাঁচে ঢালাই করা আইনি প্রক্রিয়ায় সাজা দিয়ে এখন বেগম খালেদা জিয়া যাতে জামিনে বের হতে না পারেন সেজন্য আদালতকে শুধু প্রভাবিতই নয়, সরকার সরাসরি হস্তক্ষেপ করছে।
রিজভী বলেন, ভোটারবিহীন সরকার দেশের একমাত্র জনপ্রিয় নেত্রী বেগম জিয়াকে তাদের বিপদ মনে করে। এক ভয়ঙ্কর অসহিষ্ণুতার পরিবেশে শেখ হাসিনা রক্তলোলুপ শাসকের মতো দেশ শাসন করছে। জগণের ধৈর্যচ্যুতি ঘটছে। গণতন্ত্র, মানুষের মৌলিক অধিকার, ভোটাধিকার ইত্যাদি দাবি করার জন্যই বেগম জিয়াকে সইতে হচ্ছে অবর্ণনীয় ও নিষ্ঠুর নির্যাতন। আওয়ামী সরকারের অভিপ্রায় হলো-অসুস্থতা ও শোকে-বেদনায় বিপর্যস্ত করে তাদের নির্দেশিত হিসাব বেগম জিয়াকে মেনে নিতে। কিন্তু সরকার দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে এখনও চিনতে পারেনি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আতাউর রহমান ঢালী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাত প্রমুখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।