Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শেষ হাসি জামালের

জানজটের কবলে মোহামেডান ম্যাচ!

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২১ মার্চ, ২০১৮, ১২:০০ এএম

ফতুল্লায় প্রথমে ব্যাট করে ১৮৪ রানে শেষ শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের ইনিংস। এ খবরে নিশ্চয় বিকেএসপিতে আশায় বুক বেধেছিল মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। কিন্তু জামালের বোলাররা সেই সুযোগ দিল তো! ব্রাদার্সকে ১১০ রানে গুটিয়ে শেষ দল হিসেবে দলকে ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগের সুপার লিগে নিয়ে গেছেন শেখ জামালের বোলাররা। জামাল হারলেই সুযোগটা কাজে লাগাত মোহামেডান।
আসরে মোহামেডানের একটি ম্যাচ টাই হয়েছিল। ১১ ম্যাচে ঠিক ১১ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলে সাত নম্বরে তারা। সমান ১২ পয়েন্ট নিয়ে যথাক্রমে পাঁচ ও ছয়ে শেখ জামাল ও গাজী গ্রæপ। ১৬ পয়েন্ট নিয়ে সবার ওপরে আবাহনী। দুই ও তিনে যথাক্রমে খেলাঘর ও রূপগঞ্জ।
পয়েন্ট তালিকার আট ও নয় নম্বর দল যথাক্রমে শাইনপুকুর ও প্রাইম ব্যাংক। সুপার সিক্সে উঠতে না পারলেও মোহামেডানের সঙ্গে এই দুই দলেরও আগামী মৌসুমে প্রিমিয়ার লিগে খেলা নিশ্চিত হয়েছে। তবে তালিকার শেষ তিন দল ব্রাদার্স ইউনিয়ন, অগ্রণী ব্যাংক ও কলাবাগান ক্রীড়াচক্রকে নিয়ে হবে রেলিগেশন রাউন্ড। এই পর্বে সবাই সবার সঙ্গে খেলবে একটি করে ম্যাচ। পয়েন্ট টেবিলে সেরা অবস্থানে থাকা দলটি নিশ্চিত করবে পরের মৌসুমের প্রিমিয়ার লিগ। শেষ দুই দল নেমে যাবে প্রথম বিভাগে।
শেখ জামালের জয়ে এদিন নেতৃত্ব দেন বোলাররা। তিনটি করে উইকেট নিয়ে জামালের ব্যটসম্যানদের ব্যর্থতা ঢেকে দেন দুই স্পিনার সোহাগ গাজী ও ইলিয়াস সানি। পেসার আবু জায়েদ নেন দুই উইকেট। হিসেবি বোলিংয়ে একটি করে উইকেট নিয়ে তাদের যোগ্য সঙ্গ দেন পেসার রবিউল ইসলাম ও আরেক স্পিনার নামজুল ইসলামও। ৩৯.২ ওভারে গুটিয়ে শেষ হয় ব্রাদার্সের জয়ের স্বপ্ন। শঙ্কা কাটিয়ে ৭৪ রানের দারুণ জয়ে সুপার লিগ নিশ্চিত হয় ধানমন্ডির ক্লাবটির।
ওদিকে শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে খেলাঘর ক্রীড়া চক্রকে ২ উইকেটে হারিয়ে নিজেদের কাজটা সেরে রাখে মোহামেডান। দলের জয়ে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখেন বাঁ-হাতি মিডিয়াম পেসার কাজি অনিক। তার ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়েই ২৬০ রানে গুটিয়ে যায় খেলাঘর। ৮.৫ ওভারে ৪৯ রানে ৬ উইকেট নেন অনিক। এরপর শেষ ওভারে জয়ের জন্য যখন ১০ রানের কঠিন সমীকরণ তখন প্রথম দুই বলে টানা ছক্কা হাঁকিয়ে জয় নিশ্চিত করেন সদ্য ১৯ পেরুনো এই তরুণ। নবম উইকেটে তাইজুল ইসলামের সঙ্গে অপরাজিত ২৯ রানের জুটির পথে ৬ বলে করেন ১৫ রান। তাইজুল খেলেন ৩২ বলে অপরাজিত ৩৪ রানের ইনিংস।
অথচ দিনটা হতে পারত মোহাম্মাদ আশরাফুলের। চলতি মৌসুমের তৃতীয় শতক তুলে নেন জাতীয় দলের সাবেক তারকা। অনিকের তোপ সামলে খেলেন ১২৪ বলে ১৩টি চার ও তিন ছক্কায় ১২৭ রানের ঝকঝকে ইনিংস। দ্বিতীয় উইকেটে ওয়ালিউল করিমের সঙ্গে ৮৫ ও তৃতীয় উইকেটে মাহমুদুল হাসানের সঙ্গে ৮২ রানের জুটিতে নেতৃত্ব দেন আশরাফুল। কিন্তু অনিক ঝড়ে ৩৭ রানে শেষ ৭ উইকেট হারিয়ে ১৩ বল বাকি থাকতেই গুটিয়ে যায় তারা। দু’দলের খেলোয়াড় কর্মকর্তারা যানজটে পড়ায় সাভারের ম্যাচটি শুরু হয় আধা ঘন্টা পর।
মিরপুরে নিয়ম রক্ষার ম্যাচে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জকে ৬ উইকেটে হারায় অগ্রণী ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব। আগেই সুপার সিক্স নিশ্চিত করা রূপগঞ্জ ৫০ ওভারে করতে পারে ২০৪ রান। স্রোতের বিপরীতে দাঁড়িয়ে ৯৮ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেন তুষার ইমরান। বাকিদের মধ্যে কেউ ৩০ পেরুনো ইনিংস খেলতে পারেননি। পেসার আল-আমিন হোসেন নেন ৪ উইকেট, ২টি করে নেন শফিউল ইসলাম ও স্পিনার আব্দুর রাজ্জাক। জবাবে শাহরিয়ার নাফিসের ৮২ রানের ইনিংসের ভর করে জয় নিশ্চিত করে অগ্রণী ব্যাংক। কলম্বোর ব্যর্থতার ধারা বজায় রেখে এদিন ৬৬ বলে ২৪ রান করেন সৌম্য সরকার। ইনিংসে বাউন্ডারি নেই একটিও।
পয়েন্ট টেবিল

সুপার সিক্স
দল ম্যাচ জয় হার ড্র পয়েন্ট নে.রা.রে
আবাহনী ১১ ৮ ৩ ০ ১৬ ০.৮০১
রূপগঞ্জ ১১ ৭ ৪ ০ ১৪ ০.৪১৩
খেলাঘর ১১ ৭ ৪ ০ ১৪ -০.১৭৮
প্রাইম ব্যংক ১১ ৭ ৪ ১ ১৩ -০.১৫৩
শেখ জামাল ১১ ৬ ৫ ০ ১২ ০.২৩৯
গাজী গ্রæপ ১১ ৬ ৫ ০ ১২ -০.০১৪

প্রিমিয়ার লিগ
মোহামেডান ১১ ৫ ৫ ১ ১১ -০.০৬৯
শাইনপুকুর ১১ ৫ ৬ ০ ১০ ০.১৩৬
প্রাইম ব্যাংক ১১ ৫ ৬ ০ ১০ ০.০৯৪

রেলিগেশন লিগ
ব্রাদার্স ১১ ৪ ৭ ০ ৮ -০.২৩৭
অগ্রণী ব্যাংক ১১ ৪ ৭ ০ ৮ -০.৩৩৭
কলাবাগান ১১ ২ ৯ ০ ৪ -০.৬৬২

সংক্ষিপ্ত স্কোর
রূপগঞ্জ-শাইনপুকুর
রূপগঞ্জ : ৫০ ওভারে ২০৪/৯ (তুষার ৯৮, মোশাররফ ২৭; শফিউল ২/৩৬, আল আমিন ৪/৪৪, রাজ্জাক ২/৩৩)। অগ্রণী ব্যাংক : ৪৭.১ ওভারে ২১০/৪ (শাহরিয়ার ৮২, শামসুল ৪১, ধীমান ৪৯*; শহীদ ১/৬০, আসিফ ২/৪৬)।
ফল : অগ্রণী ব্যাংক ৬ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচ সেরা : শাহরিয়ার নাফীস (অগ্রণী ব্যাংক)।

শেখ জামাল-ব্রাদার্স
শেখ জামাল : ৪৭.১ ওভারে ১৮৪ (সৈকত ৫৫, তানবীর ৩৩, সানি ৩১; খালেদ ৩/৪১, শুভ ২/৩২, শাখাওয়াত ২/২৫, কাপালী ২/৩৯)। ব্রাদার্স : ৩৯.২ ওভারে ১১০ (মাইশুকুর ২৭, দেবব্রত ২৭; আবু জায়েদ ২/২২, সোহাগ ৩/৩৬, নাজমুল ১/১৭, সানি ৩/২২, রবিউল ১/১১)। ফল : শেখ জামাল ৭৪ রানে জয়ী। ম্যাচ সেরা : ইলিয়াস সানি (শেখ জামাল)।

কলাবাগান-মোহামেডান
কলাবাগান : ৪৭.৫ ওভারে ২৬০ (ওয়ালিউল ৪৬, আশরাফুল ১২৭, মাহমুদুল ৩৩; অনিক ৬/৪৯, মাহমুদুল ২/৪৯)। মোহামেডান : ৪৯.২ ওভারে ২৬৩/৮ (এনামুল (২) ৫৭, রনি ৫১, শামছুর ৩৮, তাইজুল ৩৪*; নাহিদ ২/৩৮, সঞ্জিত ৩/৪৮, মাহমুদুল ২/৫২)। ফল : মোহামেডান ২ উইকেটে জয়ী। ম্যাচ সেরা : কাজি অনিক (মোহামেডান)।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জানজট

২১ মার্চ, ২০১৮
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ