মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
টাইমস অব ইন্ডিয়া : কংগ্রেস আগামী লোকসভা নির্বাচনে বিজেপিকে পরাজিত করতে সমমনা দলগুলোর সাথে সহযোগিতা করবে। কংগ্রেস ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনের পরিবর্তে ব্যালট পেপারে ফিরে আসার দাবি জানিয়েছে।
অ-এনডিএ দলগুলোর সাথে, এমনকি অতীতে রাজনৈতিক প্রতিদ্ব›দ্বী ছিল এমন দলের সাথেও কাজ করার ইঙ্গিত দিয়ে কংগ্রেস বলে, তারা জোট গঠনের ক্ষেত্রে বাস্তব দৃষ্টিভঙ্গির পরিচয় দেবে। এতে দলীয় নেতৃতে¦র যে মনোভাব প্রতিফলিত হয়েছে তা হল বিজেপির বর্তমান রাজনৈতিক প্রাধান্য মোকাবেলায় সম্ভাব্য বৃহত্তম জোট গড়তে হবে।
শনিবার নয়াদিল্লীর ইন্দিরা গান্ধী স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত কংগ্রেসের ৮৪ তম প্লেনারি অধিবেশনে কংগ্রেসের এই সমন্বয়ী কৌশল গ্রহণের কথা প্রকাশ পায়। এর কারণ হচ্ছে সাম্প্রতিক লোকসভা উপ নির্বাচনে বিজেপির বিপত্তি , পাশাপাশি উত্তর প্রদেশের গোরখপুর ও ফুলপুর লোকসভা নির্বাচনে জয়লাভের ব্যাপারে তাদের সীমাবদ্ধতা। তাছাড়া রাজস্থানে দু’টি লোকসভা আসন দখলের ঘটনা কংগ্রেসকে এটা ভাবতে উৎসাহ যুগিয়েছে যে এ বছরের পরের দিকে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোতে নির্বাচনে তাদের একটা সুযোগ আসতে পারে।
ইউপিএ-র আদলে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে সমমনা দলগুলোকে নিয়ে জোট গঠনের ইচ্ছার বিয়য়টি ব্যাখ্যা করেন দলের নেত্রী সোনিয়া গান্ধী। তিনি ২০০৪ সালে ইউপিএ জোট গঠন করেন যা কংগ্রেসকে ক্ষমতায় আনে। ২০১৪ সাল পর্যন্ত পরপর দু’ মেয়াদ কংগ্রেস ক্ষমতায় ছিল। নেত্রী অনানুষ্ঠানিক ভাবে বিরোধী নেতাদের সাথে কথা বলছেন জোট গড়ার সম্ভাবনা নিয়ে। বিজেপি সম্প্রতি উড়িষ্যা ও উত্তর পূর্ব ভারতের নির্বাচনে ভালো ফল করেছে।
কংগ্রেসের রাজনৈতিক প্রস্তাবে ইভিএম বাতিলের দাবি করা হয়। এতে স্পষ্ট হয় যে সাম্প্রতিক নির্বাচনে বিরোধী দলের বিজয়ও কংগ্রেসকে বিশ^াস করাতে পারেনি যে ইভিএম মেশিনকে তাদের বিজয় ছিনিয়ে নেয়ার কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে না। প্রস্তাবে বলা হয় যে ভোটিং মেশিনের ব্যাপারে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সন্দেহ রয়েছে। কংগ্রেসের এ দাবি ইভিএম মেশিনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণাকারীদের জন্য সবুজ সংকেত।
সর্ব ভারতীয় কংগ্রেস কমিটির গোপন বৈঠকে সোনিয়া গান্ধী পাচমারি ব্রেনস্টর্মিং সেশনের কথা উল্লেখ করেন এটা বলার জন্য যে কংগ্রেস ১৯৯৮ সালে একটি ঐকমত্যে পৌঁছে যে দলটি অন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে জোট করবে না। কিšুÍ পাঁচ বছর পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ২০০৩ সালে সিমলা অধিবেশনে আমরা সমমনা দলগুলোর সাথে কাজ করার সিদ্ধান্ত নেই। আর এর ফলেই ২০০৪ সালে আমরা লক্ষ্য অর্জনে সক্ষম হই যা লোকে অসম্ভব মনে করেছিল।
সোনিয়া গান্ধী বলেন, কংগ্রেস ২০০৪ সালে মনোমোহন সিং-এর নেতৃতে¦ আমরা কেন্দ্রীয় সরকার গঠন করি। তিনি বলেন, ২০০৪ সালে গঠিত সরকারের সাফল্যের ভিত্তিতেই ২০০৯ সালে আমরা বৃহত্তর ম্যান্ডেট লাভ করি।
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ২০১৯ সালের নির্বাচনে বিজেপি বিরোধী জোট গঠন বিরোধী শিবিরের আলোচনার মূল বিষয়ে পরিণত হয়েছে। সোনিয়া ও রাহুল গান্ধী চারটি পৃথক উপলক্ষে সম্ভাব্য মিত্রদের কাছে এ বিষয়ে আবেদন জানিয়েছেন। সোনিয়া গান্ধী মঙ্গলবার বিরোধী দলগুলোর জন্য এক নৈশভোজের আয়োজন করেন।
এর পাশাপাশি মমতা বন্দোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেস ও শরদ পাওয়ারের এনসিপির মত দলগুলো আঞ্চলিক দলগুলোর সাথে সমান্তরাল আলোচনা শুরু করেছে।
আনন্দ বাজার পত্রিকার খবরে বলা হয়, ভালোবাসাকে আঁকড়ে ধরে বিজেপির বিদ্বেষের রাজনীতির মোকাবিলার ডাক দিয়েছেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী। একই মঞ্চ থেকে ইউপিএর চেয়ারপারসন সোনিয়া গান্ধী বললেন, কংগ্রেস মানুষের দল। মানুষের সুখ-দুঃখের অংশীদার। কংগ্রেস সব সময় অন্যায়ের বিরুদ্ধে স্বর তোলে। সবাইকে একজোট করে কংগ্রেসকেই প্রতিশোধমুক্ত ভারত গড়ে তুলতে হবে।
দু’ দিনব্যাপী কংগ্রেস প্লেনারি অধিবেশনের প্রথম দিন শনিবার সারা দেশ থেকে আসা কংগ্রেস প্রতিনিধিদের সামনে রাহুল-সোনিয়া ২০১৯-এর সাধারণ নির্বাচনের সুর বেঁধে দেন।
রাহুল বলেন, ‘কংগ্রেস ও বিজেপির মধ্যে আসমান-জমিন ফারাক। বিজেপি বিশ্বাস করে বিদ্বেষে, কংগ্রেসের শক্তি মানুষের ভালোবাসা। দেশজুড়ে বিদ্বেষের বীজ ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। মানুষ মানুষের সঙ্গে হানাহানি করছে। দেশ ক্লান্ত। মানুষ মুক্তি চাইছে। নতুন পথের সন্ধান করছে। কংগ্রেস সেই পথের সন্ধান দেবে।’
রাহুলের সংক্ষিপ্ত ভাষণের পর সোনিয়া চড়া সুরে বিজেপিকে বিঁধে বলেন, ‘মোদি সরকার ক্ষমতার নেশায় বিভোর। তারা দেশজুড়ে ঘৃণা ও দ্বেষ ছড়িয়ে দিচ্ছে। স্বৈরতন্ত্রের ছোবলে দেশ জেরবার। কংগ্রেস কোনো দিন কোনো চ্যালেঞ্জের সামনে মাথা নোয়াননি। নোয়াবেও না। একজোট হয়ে এই চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করবে।’
কংগ্রেস যে নিছকই এক রাজনৈতিক দল নয়, একটা দৃষ্টিভঙ্গি, প্রতিনিধিদের সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে সোনিয়া বলেন, সনাতন ভারতীয় ম‚ল্যবোধগুলো কংগ্রেসই রক্ষা করে চলেছে। করবেও। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ¯েøাগান, ‘সবকা সাথ সবকা বিকাশ’ এবং দুর্নীতিরোধে ‘না খাউঙ্গা, না খানে দুঙ্গা’ প্রতিশ্রুতির উল্লেখ করে তিনি বলেন, এসব নাটকবাজি। মানুষের কাছে এই নাটক ধরা পড়ে গেছে। সোনিয়া আরও বলেন, ‘৪০ বছর আগে কর্নাটকের চিকমাগালুর থেকে ইন্দিরা গান্ধীর জয় কংগ্রেসকে অপ্রতিরোধ্য করে তুলেছিল। আমার বিশ্বাস, এবারও কর্নাটকের ভোট কংগ্রেসকে সেভাবেই গড়ে তুলবে।’
এই অধিবেশনে যে রাজনৈতিক প্রস্তাব শনিবার গৃহীত হয়, তাতে সমভাবাপন্ন দলগুলোর সঙ্গে ন্য‚নতম কর্মস‚চির ভিত্তিতে জোট গড়ার আগ্রহ দেখানো হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।