Inqilab Logo

শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভারতকে কাঁদিয়ে ফাইনালে উইন্ডিজ

প্রকাশের সময় : ১ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্পোর্টস রিপোর্টার : শেষ ৩ বলে জয়ের জন্য দরকার ৩ রান। স্ট্রাইকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ অলরাউন্ডার আন্দ্রে রাসেল। আর বোলিংয়ে ভারতীয় অলরাউন্ডার বিরাট কোহলি। দৌড় শুরু করলেন কোহলি বল করতে। করলেনও। কিন্তু সেই বল উচুঁ করে হওয়ায় ভাসিয়ে দিলেন রাসেল। সঙ্গে সঙ্গে জয়ের বুনো উল্লাস ক্যারিবীয় শিবিরে। আন্দ্রে রাসেলের ছয়ের মারেই নিশ্চিত হলো ওয়েস্ট ইন্ডিজের বড় জয়। দু’বল হাতে রেখেই তারা স্বাগতিক ভারতের বিপক্ষে ৭ উইকেটের জয় তুলে নিয়ে পৌঁছে গেল টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে। গতকাল মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে ধোনি-কোহলিদের সামনে ক্যারিবিয়ান ক্যালিপসো সুরের জয়জয়কার। ফলে আগামী রোববার ইডেন গার্ডেন্সে আসরের ফাইনালে ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
কাল টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সেমিফাইনালকে ঘিরে ছিলো টান টান উত্তেজনা। ভারত-ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচের চেয়ে বেশী আলোচনায় ছিলেন দু’দলের দুই তারকা ক্রিস গেইল ও বিরাট কোহলি। যদি ম্যাচে কোহলিই জ্বলে উঠেছিলেন। কিন্তু জয়ের শেষ হাসি হাসলেন ব্যাটিং দানব গেইল। ম্যাচে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ভারত বিরাট কোহলির ব্যাটিং তাÐবে নির্ধারিত ২০ ওভারে ২ উইকেটে তুলে ১৯২ রান। এ ম্যাচেও ভারতের ত্রাতা হিসেবে আবির্ভাব ঘটে কোহলির। তিনি ১১ চার ও এক ছয়ের মারে ৪৭ বলে ৮৯ রানের দৃষ্টিনন্দন একটি ইনিংস খেলেন। ব্যাটিংয়ে নেমে ইনিংসের অষ্টম ওভারে বিদায় নেন ব্যাটে ঝড় তোলা ওপেনার রোহিত শর্মা। স্যামুয়েল বদ্রির বলে এলবির ফাঁদে পড়েন ৩১ বলে ৪৩ রান করা রোহিত। তার ইনিংসে ছিল তিনটি চার আর তিনটি ছয়ের মার। প্রথম ৩৫ বলে দলীয় অর্ধশতক আসে ভারতের। পাওয়ার প্লে’র ছয় ওভারে ভারত বিনা উইকেটে তুলে নেয় রান। আর এক উইকেট হারিয়ে ৭৬ বলে আসে তাদের দলীয় শতক। ইনিংসের ১৬তম ওভারে রাহানে বিদায় নেন। ৩৫ বলে দুটি চারের সাহায্যে ৪০ রান করেন তিনি। আন্দ্রে রাসেলের বলে বাউন্ডারি সীমানায় ব্রাভোর হাতে ধরা পড়েন রাহানে। এরপর হাল ধরেন বিরাট কোহলি ও অজিঙ্কা রাহানে। ৩৫ বলে ৪০ রান করে আন্দ্রে রাসেলে বলে ক্যাচ তুলে প্যাভিলিয়নে ফিরেন রাহানে। ভারতের দলীয় রান তখন ১৫.৩ ওভারে ১২৮। রাহানে আউট হওয়ার পর ক্রিজে আসেন অধিনায়ক এমএস ধোনি। তিনি সঙ্গ দিতে থাকেন কোহলিকে। মাত্র ৩৩ বলে নিজের অর্ধশতক পূরণ করেন ইনফর্ম কোহলি। এবারের আসরে এটি তার তৃতীয় অর্ধশতক। ১৭ ওভারে দেড়শ রান পূর্ণ করে টিম ইন্ডিয়া। শেষ পর্যন্ত বিরাট কোহলির ৪৭ বলে ৮৯ রানে অপরাজিত থাকেন। এই ইনিংস খেলতে ১১ চার ও একটি ছক্কা মেরেছেন তিনি। ধোনি ৯ বলে অপরাজিত ১৪ রান করেন। ক্যারিবিয়ানদের পক্ষে একটি করে উইকেট পান আন্দ্রে রাসেল ও স্যামুয়েল বদ্রি।
জবাবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২ বল হাতে রেখেই ৩ উইকেটে ১৯৬ রান সংগ্রহ করে বড় জয় তুলে নেয়। ১৯৩ রানের বিশাল লক্ষ্যে খেলতে নেমে শুরুতেই ফিরে যান ক্রিস গেইল। ৬ বলে মাত্র ৫ রান করে বুমরাহ’র বলে বোল্ড আউট হন তিনি। তবে গেইল ব্যর্থ হলেও ঠিকই জ্বলে উঠেন জনসন চার্লস। আউট হওয়ার আগে তিনি হাফসেঞ্চুরি করেন। গেইল ফিরে যাওয়ার পর তাকে অনুসরণ করে স্যামুয়েলসও। তিনি দলীয় ১৯ রানে নেহরার বলে রাহানের হাতে ক্যাচ তুলে দেন। এরপরই দলের হাল ধরেন জনসন চার্লস ও লেন্ডেল সিমন্স। ৩৩ বলেই অর্ধশতক করেন জনসন। রান রেটের গতি সমানতালে বাড়িয়ে চলেন তিনি। আর তাকে সঙ্গ দিতে থাকেন সিমন্স। ১৪তম ওভারে কোহলিকে বোলিংয়ে এনে চমক দেন অধিনায়ক ধোনি। তবে বল হাতেও অধিনায়কের আস্থার প্রতিদান দিলেন এই অলরাউন্ডার। নিজ ওভারে প্রথম বলেই চার্লসকে নেহরার হাতে ক্যাচে পরিণত করে দলকে ব্রেক থ্রু এনে দেন কোহলি। ফলে ১৩.১ ওভারে ১১৬ রানে তৃতীয় উইকেট হারায় উইন্ডিজরা। এরপর ক্রিজে আসেন আন্দ্রে রাসেল। অন্যপ্রান্তে ৩৫ বলে অর্ধশতক নিয়ে ব্যাট করছিলেন সিমন্স। ভারতীয় বোলারদের ওপর চড়াও হয়ে ওঠেন এই দুজন। শেষ চার ওভারে উইন্ডিজদের টার্গেট দাঁড়ায় ৪২ রান। ১৭তম ওভার করতে আসেন আশীষ নেহরা। এই ওভারে আসে ১০ রান। ১৮ বলে ক্যারবীয়দের লক্ষ্য দাঁড়ায় ৩২ রান। ১৮তম ওভার করতে আসেন যশপ্রিত বুমরাহ। প্রথম তিন বলে ডট দেওয়ার পর চতুর্থ বল উঠিয়ে মারেন সিমন্স। সীমান্ত ঘেঁষে দুর্দান্ত এক ক্যাচ ধরেছিলেন কোহলি। কিন্তু পরে দেখা গেল ক্যাচ ধরার সময় তার পা সীমান্ত দড়ি স্পর্শ করেছে। ফলে ছক্কা। ওই ওভারে আসে ১২ রান। শেষ দুই ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রয়োজন দাঁড়ায় ২০ রান। ৪৯ বলে ৮১ রানে ক্রিজে সিমন্স। ১২ বলে ২২ রানে আন্দ্রে রাসেল। ১৯তম ওভারটি করতে আসেন রবীন্দ্র জাদেজা। এই ওভারে এক ছয় এবং এক চারে আসে ১২ রান। শেষ ওভারে জয়ের জন্য ওয়েস্ট ইন্ডিজের দরকার ৮ রান। ওই ওভারের তৃতীয় ও চতুর্থ বলে চার ও ছয় মেরে ভারতে কাঁদিয়ে ফাইনালে দলকে পৌঁছে দেন আন্দ্রে রাসেল। ৫১ বলে ৮৩ রানের ইনিংসে ৫টি ছয ও ৭টি চার মারেন সিমন্স। ২০ বলে ৪৩ রানের ইনিংস খেলতে চার ছয় ও তিন চারের মার মারেন আন্দ্রে রাসেল। ভারতের পক্ষে নেহরা, বুমরা ও কোহলি একটি করে উইকেট পান। ম্যাচ সেরার পুরষ্কার পান উইন্ডিজ ব্যাটসম্যান লেন্ডল সিমন্স।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারতকে কাঁদিয়ে ফাইনালে উইন্ডিজ
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ