রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
জনবল সংকটে ধুকছে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল। এতে চিকিৎসাসেবা নিতে এসে মারাত্মক হয়রানি ও দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়েও দেখা পাচ্ছেন না কাক্সিক্ষত চিকিৎসকের। এক রোগের চিকিৎসা নিতে এসে অন্য রোগের চিকিৎসককে দেখাতে বাধ্য হতে হচ্ছে মানুষকে।
জনবল সঙ্কটে অবস্থা এমন পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে যে, শিশু ওয়ার্ড সামলাচ্ছেন একজন ইন্টার্ন চিকিৎসক। অ্যানেসথেসিয়া দিচ্ছেন যে কোনো মেডিক্যাল অফিসার। চোখের চিকিৎসা করছেন যখন যে চিকিৎসক (সাধারণ মেডিক্যাল অফিসার) দায়িত্বে থাকছেন তিনি। কখনো উপ-সহকারী মেডিক্যাল অফিসাররাও রোগী দেখছেন। সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসকের ২৭টি পদের মধ্যে ১৪টি পদ শূন্য রয়েছে। এর মধ্যে সিনিয়র কনসালটেন্ট (সার্জারি), সিনিয়র কনসালটেন্ট (অর্থ. সার্জারি), সিনিয়র কনসালটেন্ট (চক্ষু), সিনিয়র কনসালটেন্ট (অ্যানেসথেসিয়া), জুনিয়ার কনসালটেন্ট (পেড্রিয়াটিক্স), জুনিয়র কনসালটেন্ট (ইএনটি), জুনিয়র কনসালটেন্ট (প্যাথলজি), জুনিয়র কনসালটেন্ট (অ্যানেসথেসিয়া), আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার, রেডিওলজিস্ট, মেডিক্যাল অফিসারের (হোমিও/ইউনানি/আয়ুর্বেদি) একটি ও মেডিকেল অফিসারের দুইটি পদসহ ১৪টি পদ শূন্য রয়েছে।
এ ছাড়াও নার্সিং সুপার ভাইজার, স্টাফ নার্স, সহকারী নার্স ও স্টোর কিপারের একটি করে ও সিনিয়র স্টাফ নার্সের পাঁচটি পদ শূন্য রয়েছে।
সূত্র আরো জানায়, সদর হাসপাতালের আউটডোরে প্রতিদিন দেড় থেকে দুই শ’ রোগী হয়। সুচিকিৎসা তো দূরে থাক, জনবল সঙ্কটে এত রোগী সামলাতেই হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সরেজমিন সদর হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে, রোগীদের দীর্ঘ লাইন। সেবা নিতে আসা সবার মুখেই হতাশার ছাপ। যারা ডাক্তার দেখাতে পারছেন তারাও খুশি নন। কারণ যে রোগের চিকিৎসক দেখাতে এসেছেন, সেই ডাক্তার নেই। অর্থাৎ পদটি শূন্য রয়েছে। এমনই একজন তালা উপজেলার মীর্জাপুরের ভ্যানচালক জাহাঙ্গীর হোসেন। দীর্ঘদিন দুটি চোখ নিয়ে ভুগছেন তিনি। এসেছিলেন চোখের ডাক্তার দেখাতে। কিন্তু চোখের ডাক্তার না থাকায় সাধারণ মেডিক্যাল অফিসারকে দেখাতেই বাধ্য হলেন তিনি।
তিনি বলেন, কি করবো, চোখের ডাক্তার তো নেই। ভ্যান চালায়। আমরা কি ক্লিনিকে ৫০০ টাকা দিয়ে ভালো ডাক্তার দেখাতে পারি। কিন্তু তালা থেকে সদর হাসপাতালে এসেও যদি ডাক্তার না পায় তাহলে ভাগ্যের দোষ দেয়া ছাড়া কোনো উপায় থাকে না। তারপরও ভয় থাকে, যে ডাক্তার দেখালাম, যদি চিকিৎসা সঠিক না হয়, তাহলে চোখ দুটিই তো শেষ হয়ে যাবে, তখন? প্রশ্ন করেন তিনি।
সদর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে নিউমোনিয়া নিয়ে ভর্তি রয়েছে শ্যামনগর উপজেলার দামদরকাঠির শাহীদ উদ্দিনের তিন মাসের ছেলে। শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে সদর হাসপাতালে এসেও চিন্তামুক্ত হতে পারেননি তিনি। কারণ সদর হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞের পদটি শূন্য। শিশু ওয়ার্ড চালাচ্ছেন ইন্টার্ন চিকিৎসক নাজমুল হাসান ও মেডিক্যাল অ্যাসিসটেন্ট শফিউল্লাহ মুন্না। শূন্য রয়েছে আরএমওর মতো গুরুত্বপূর্ণ পদও। এ পদে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন ডা. হাফিজউল্লাহ। জনবল সঙ্কটে চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বহির্বিভাগের রোগী সামলাতেই রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে। কিন্তু আমাদের তো কিছুই করার নেই। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, অ্যানেসথেসিয়া বিশেষজ্ঞের পদটি শূন্য। তাই যখন যাকে পাই (মেডিক্যাল অফিসার) তাকে দিয়েই কাজ চালানো হয়। জনবল সঙ্কটে কখনো উপ-সহকারী মেডিক্যাল অফিসার দিয়েও রোগী দেখাতে হচ্ছে। কোনো উপায় নেই। এ ব্যাপারে সাতক্ষীরার সিভিল সার্জন তৌহিদুর রহমান বলেন, সদর হাসপাতালে জনবল সঙ্কটে চিকিৎসাসেবা কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে কয়েকবার অবহিত করেছি। ব্যক্তিগতভাবে স্বাস্থ্য সচিবের সাথেও দেখা করেছি। তিনি দ্রুত সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।