বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
পাঁচশ শয্যার অবকাঠামো আর জনবল দিয়ে ১ হাজার শয্যায় উন্নীত করা বরিশাল শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পুরনো জনবলেরই অর্ধেক পদ শূণ্য থাকায় পুরো হাসপাতালটিই এখন ধুকছে। অথচ এ হাসপাতালে প্রতিদিন চিকিৎসাধীন রোগী থাকছে প্রায় ১৮শ। সংলগ্ন মেডিকেল কলেজের শিক্ষকের প্রায় দুইÑতৃতীয়াংশ পদ শূণ্য থাকায় তারও বিরূপ প্রভাব পড়ছে এ হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যাবস্থায়ও। দক্ষিণাঞ্চলের সর্ববৃহত এ হাপাতালটিতে ৫শ শয্যার বিপরিতে অনুমোদিত ২২৪ জন চিকিৎসক পদের বিপরিতে কর্মরত আছেন মাত্র ১১৩ জন। ১১১টি পদেই কোন জনবল নেই। এমনকি হাসপাতালটির ১০টি ইমার্জেন্সি মেডিকেল অফিসারের পদে কর্মরত মাত্র ৩ জন। ফলে এ হাসপাতালের দরজায় পা রেখেই চিকিৎসা প্রত্যাশীদের বিপদে পড়তে হচ্ছে।
চিকিৎসকের অভাবের সাথে সংশ্লিষ্ট অনেকের আন্তরিকতার ঘাটতিতে সরকারী এ চিকিৎসা সেবা প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসা লাভ অত্যন্ত দুরুহ বলে অভিযোগ রোগী ও তাদের স্বজনদের। এমনকি অনেক চিকিৎসক নিয়মমত হাসপাতালে রোগী না দেখায়ও অনেক রোগীকেই বাড়তি দিন হাসপাতালে থাকতে হচ্ছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। অনেক ওয়ার্ডেই চিকিৎসা ব্যবস্থার সিংহভাগ ইন্টার্ণ চিকিৎসকদের ওপর নির্ভরশীল বলেও অভিযোগ রোগীদের। এ হাসপাতালের মেঝেতে এখন বেডের প্রায় সমান রোগী। কোন কোন ওয়ার্ডে বিভাগীয় প্রধান সহ সহযোগী ও সহকারী অধ্যপকগন নিয়মিত ওয়ার্ডে না আসায় রোগীদের দূর্ভোগ চরমে। শিশু বিভাগ সহ অনেক ওয়ার্ডেই সমমত সঠিক চিকিৎসা না পেয়ে হাসপাতালে বাড়তি দিন অবস্থান করতে হওয়ায় রোগীদের আর্থিক ক্ষতিও বাড়ছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। প্রায় প্রতিটি ওয়ার্ডেই ক্ষমতার দ্বিগুনেরও বেশী রোগী চিকিৎসাধীন থাকছে।
হাসপালটির নিজস্ব জনবল সংকট পরিস্থিতিকে ক্রমশ জটিল করে তুলছে। বিভিন্ন বিভাগের ৩৩টি রেজিস্ট্রার পদের ১৪টিই শূন্য। ৬৬টি সহকারী রেজিস্ট্রার পদের বিপরিতে ৪৭টিতেই কোন জনবল নেই, কর্মরত মাত্র ১৯ জন। নবসৃষ্ট ২০টি মেডিকেল অফিসার পদে আছেন মাত্র ৬জন। ২০টি ইনডোর মেডিকেল অফিসার পদের বিপরিতে কর্মরত ১২ জন।
এছাড়া হাসপাতালটির বহির বিভাগের মেডিকেল অফিসার, সহকারী সার্জন, রেডিওলজিস্ট, স্বতন্ত্র রক্তরোগ, রেডিও থেরাপিস্ট ও ডেন্টট সার্জন-এর ৪৬টি পদের বিপরিতে কর্মরত মাত্র ২৯ জন। এমনকি এ হাসপাালটিতে ডেন্টাল বিভাগের একমাত্র জুনিয়র কনসালটেন্ট-এর পদটিতেও কোন জনবল নেই দীর্ঘদিন ।
এছাড়া শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৩য় শ্রেণীর ১৪৬টি পদের ৩৭টি পদ শূণ্য। তবে এর চেয়েও খরাপ অবস্থা ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারী নিয়ে। ৫শ শয্যার জন্য মঞ্জুরিকৃত ৪২৬টি ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারীর পদের ১৭৭টি পদে কোন জনবল নেই। ফলে গোটা হাসপাতালটিতে অপরিচ্ছন্নতার ছাপ স্পষ্ট। অনেক ওয়ার্ডেই নাকে রুমাল দিয়ে থাকতে হচ্ছে রোগীদের। হাসপাতালের প্রায় সব ওয়ার্ডের শৌচাগারগুলো ব্যাবহারের অনেকটা অনুপযোগী।
এসব বিষয়ে শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হসপাতালের পরিচলক ডাঃ সাইফুল ইসলামের সাথে আলাপ করা হলে তিনি জানান, জনবল সংকটের বিষয়টি নিয়মিতভাবেই স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও মন্ত্রনালয়কে অবহিত করা হচ্ছে। খুব শিঘ্রই কিছু চিকিৎসক নিয়োগের সম্ভবনা রয়েছে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারী নিয়োগের বিষয়টিও প্রক্রিয়াধীন বলে পরিচালাক জানান। ওয়ার্ডে সিনিয়র চিকিৎসকদের অনুপস্থিতির বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষন করা হলে পরিচালক বলেন, তারা মেডিকেল কলেজে কর্মরত, তারপরেও বিষয়টি নিয়ে তাদের সাথে নিয়মিত কথা বলে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।