পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মহামান্য প্রেসিডেন্টের বিদেশ সফর দেশের জনগণের জন্য খুশির খবর। কিন্তু আমাদের মহামান্য প্রেসিডেন্ট মোঃ আবদুল হামিদের ভারতের আসাম রাজ্য সফরে একজন মূখ্যমন্ত্রীর জন্য অপেক্ষা করা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তোলপাড় চলছে। আলোচনা-সমালোচনা ও বিতর্ক চলছে। কেউ কেউ দুঃখ করে প্রশ্ন তুলে বলছেন, ভারত বন্ধু এবং বড় দেশ ঠিক আছে। কিন্তু আমরাও মুক্তিযুদ্ধ করে স্বাধীনতা অর্জন করা আত্মমর্যাদা সম্পন্ন জাতি। বন্ধুত্বের নিদর্শন রাখতে গিয়ে ভারতের তাবেদারী করে নিজেদের আর কত নীচে নামতে হবে?
মহামান্য প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন রাষ্ট্রের প্রধান এবং এক নম্বর নাগরিক। সাংবিধানিক ভাবে তিনি হলেন সবচেয়ে সন্মানিত ব্যাক্তি। সে জন্যই প্রেসিডেন্ট নাম উচ্চারণের আগে ‘মহামান্য’ শব্দ ব্যবহার করা হয়। আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত রেওয়াজ হলো এক দেশের প্রেসিডেন্ট কোনো দেশে সফরে গেলে তাঁকে স্বাগত জানিয়ে গ্রহণ করেন সমমর্যাদার ব্যাক্তি। তথা ওই দেশের মহামান্য প্রেসিডেন্ট। কারণ প্রেসিডেন্ট রাষ্ট্রের প্রতিনিধিত্ব করে থাকেন। কিন্তু ভারতে ঘটলো অন্যরকম ঘটনা।
‘এ্যাডভান্টেজ আসাম’ শীর্ষক বিশ্ব শিল্প বিনিয়োগ সম্মেলনে যোগদান করতে ৮ ফেব্রæয়ারী বৃহস্পতিবার আমাদের মহামান্য প্রেসিডেন্ট মোঃ আবদুল হামিদ ভারতের আসাম যান। বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান আসামের গভর্নর জগদীশ মুখী। বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট তথা ভিভিআইপি অতিথিকে রাখা হয় পাঁচ তারকাত হোটেল ভিয়াস্তায়। হোটেলে তার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বিষয়াদি নিয়ে আলোচনা করেন বিজেপি নেতা আসামের মূখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোয়াল। মূলত বিতর্ক এখানেই। খবরে প্রকাশ বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের জন্য ভেন্যুতে পৌঁছে মূখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোয়ালের জন্য আপেক্ষা করতে থাকেন। ১০ মিনিট অপেক্ষার পর সনোয়াল আসেন এবং বৈঠক শুরু হয়। সেখানে বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট মহামান্য অতিথির জন্য মূখ্যমন্ত্রীর অপেক্ষা করার কথা; সেখানো উল্টো বন্ধু রাষ্ট্রের অতিথি প্রেসিডেন্ট অপেক্ষা করেন একজন মন্ত্রীর মর্যাদার মূখ্যমন্ত্রীর জন্য।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আসামের মূখ্য মন্ত্রীর জন্য বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট মোঃ আবদুল হামিদের একটি ছবি দিয়ে বলা হয়, ‘ভারতের একজন মূখ্যমন্ত্রী পদমর্যাদায় বাংলাদেশের একজন মন্ত্রীর সমতুল্য। ছবিটিতে খেয়াল করে দেখুন একজন মূখ্যমন্ত্রীর জন্য অপেক্ষা করছেন আমাদের প্রেসিডেন্ট। আসামের হোটেল ভিয়াস্তায় মূখ্যমন্ত্রী সর্বনন্দ সনোয়ারের জন্য ১০ মিনিট অপেক্ষা করে তারপর সাক্ষাত পেয়েছেন আবদুল হামিদ। একটি দেশের প্রেসিডেন্ট হয়ে অন্য একটি দেশের রাজ্যের মূখ্যমন্ত্রীর জন্য অপেক্ষা করা বা অপেক্ষা করিয়ে রাখা কূটনৈতিক শিষ্টাচার বিবর্জিত কাজ। কিন্তু আমরা আমাদের দেশের মেরুদÐ ভারতের কাছে এমন ভাবে বর্গা দিয়েছি যে, ভারতের আসাম রাজ্যের একজন মূখ্যমন্ত্রী আমাদের (বাংলাদেশ) প্রেসিডেন্টকে শিষ্টাচার দেখানোর মতো যোগ্য মনে করেন না’।
এদিকে গত জানুয়ারী মাসে ‘আন্তর্জাতিক সাহিত্য সম্মেলনে যোগদান করতে ভারতের সাবেক প্রেসিডেন্ট প্রবীণ রাজনীতিক প্রণব মুখার্জী বাংলাদেশ সফরে আসেন। ভারতের সাবেক প্রেসিডেন্ট অথচ বাংলাদেশের পক্ষ থেকে তাকে সর্বচ্চো সম্মান জানানো হয়। বাংলাদেশের জনগণ প্রণব মুখার্জীকে যথাযোগ্য মর্যাদা দিয়ে সম্মানিত করেছেন; নিজেরাও সম্মানিত হয়েছেন। বিবাহিত জীবনে প্রবণ মুখার্জী বাংলাদেশের জামাতা; এদেশের অনেক রাজনীতিকের সঙ্গে তার রয়েছে ব্যাক্তিগত সম্পর্ক। কিন্তু অতিথি চলে যাওয়ার পর জনগণের দৃষ্টিতে আটকে যায় একটি ছবি। ছবিতে দেখা যায় প্রণব মুখার্জী চেয়ারে আয়েস করে অসে আছেন। তাঁর পিছনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন বাংলাদেশের সাবেক প্রেসিডেন্ট হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ, জাতীয় সংসদের স্পীকার ড. শিরিন শারমিন চৌধুরী, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মহিতসহ কয়েকজন মন্ত্রী। ছবির মর্মার্থ এমন রাজা বসে আছেন অতি উৎসাহী কর্মচারীরা তাঁর সঙ্গে ছবি তুলতে পোজ দিতে পিছনে দাঁড়িয়েন। ছবিটিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক বিতর্কের জন্ম দিয়েছিল।
শুধু কী তাই? ২০১৫ সালের ১৮ এপ্রিল ৫ দিনের সফরে বাংলাদেশের মহামান্য প্রেসিডেন্ট মোঃ আবদুল হামিদ ভারত যান। সফরের সময় তাকে আগ্রার তাজমহল দেখানোর জন্য নেয়া হয়। তাকে (প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ) আগ্রায় যে হোটেলে রাখা হয় সেখানে লিফট ছিল ঝুকিপূর্ণ। তাজমহল দেখানোর জন্য নেয়া হয় ব্যাটারীচালিত একটি সাধারণ পরিবহনে। তিনি দিল্লী, জয়পুর, আজমির শরীফ, কোলকাতা, শান্তি নিকেতন সফর করেন। বাংলাদেশের প্রেসিডেন্টের রাজস্থানের আজমির শরীফ জিয়ারতের সময় সাধারণ মানুষের নিয়ন্ত্রণের কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ভারতের টাইমস অব ইন্ডিয়ার এই খবর ফলাও করে প্রচার করা হয়।
একই তিনটি ঘটনা স্বাধীন জাতি হিসেবে আত্মমর্যাদায় আঘাত লাগায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এতো বিতর্ক। প্রশ্ন হলো আমাদের আর কত নীচে নামতে হবে?
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।