পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সাথে যুক্ত চারটি ইউনিয়নের উন্নয়নে মেগা প্রকল্পের কাজ চলছে। দনিয়া, শ্যামপুর, মাতুয়াইল ও সারুলিয়া ইউনিয়নের কোনো কোনো এলাকায় ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে ড্রেন নির্মাণের কাজ। তবে শুরু থেকেই এই মেগা প্রকল্পের কাজে অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার অভিযোগ উঠেছে। ঠিকাদারের স্বেচ্ছাচারিতায় ধীর গতিতে কাজ চলায় মানুষকে সীমাহীন ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, দনিয়া এলাকার বর্ণমালা স্কুল রোডে পপি হাসপাতাল থেকে গোয়ালবাড়ি মোড় পর্যন্ত ড্রেন নির্মাণের কাজ চলছে। গত বছরের কুরবানীর ঈদের আগে শুরু হওয়া এ কাজে সীমাহীন গাফিলতির অভিযোগ করেছেন এলাকার বাসিন্দারা। তাদের মতে, সামান্য কয়েকশ’ মিটার কাজের জন্য এতো সময় লাগায় এলাকার লাখ লাখ মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ড্রেন খুঁড়ে পঁচা কাদামাটি রাখা হচ্ছে রাস্তার উপর। তাতে একদিকে রাস্তা বন্ধ হয়ে যানবাহন ও মানুষ চলাচলে বিপত্তি ঘটছে। অন্যদিকে, ময়লার গন্ধে রাস্তা দিয়ে হাঁটাও মুশকিল হয়ে পড়েছে। এলাকার বাসিন্দারা জানান, ইতোমধ্যে যতোটুকু ড্রেন নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে তার সবই করা হয়েছে কোনোমতে জোড়াতালি দিয়ে। পুরাতন ড্রেনের গলিত ইট, সুরকি দিয়ে ড্রেনের বেজমেন্ট ঢালাই দেয়া হচ্ছে। এছাড়া, রাস্তার মাপ ৬০ ফুট রেখে ড্রেন নির্মাণের কথা থাকলেও কোনো কোনো স্থানে তা করা হচ্ছে না। ঠিকাদারের লোকজন বিভিন্ন ভবন ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিকের কাছে থেকে উৎকোচ নিয়ে ড্রেন ঘুরিয়ে দিচ্ছে বলে অনেকেরই অভিযোগ। কিছুদিন আগেও অনামিকা টাওয়ারের সামনে এমনিভাবে কমপক্ষে ৪ ফুট জায়গা ছেড়ে দিয়ে ড্রেনের বেজমেন্ট ঢালাই দেয়া হয়েছিল। পরে বিষয়টি ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদেরকে জানানোর পর সেই ঢালাই ভেঙ্গে আবার রাস্তার সীমানা মেপে নতুন করে ঢালাই দেয়া হয়।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ধীর গতিতে ড্রেন নির্মাণ নিয়ে দনিয়া এলাকার বাসিন্দাদের ক্ষোভের শেষ নেই। দনিয়া ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের মেম্বার মোস্তাফিজুর রহমান মঞ্জু বলেন, এতো বড় একটা কাজ হচ্ছে অথচ আজ পর্যন্ত কোনো ইঞ্জিনিয়ারের চেহারাই দেখলাম না। কাজের ধীর গতি নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করে তিনি বলেন, যেভাবে কাজ চলছে তাতে সামনের বর্ষায় আমরা আবার ডুববো। তিনি বলেন, খুবই নি¤œমানের কাজ হচ্ছে। ইঞ্জিনিয়ারও আসেন না, ঠিকাদারও আসেন না। কাজ চলছে শ্রমিক ঠিকাদারের তত্বাবধানে। আর ওই শ্রমিক ঠিকাদার আমাদের কোনো কথাই শোনে না। স্থানীয় এই জনপ্রতিনিধি বলেন, ঠিকাদারের লোকজন তাদের খেয়াল খুমিমতো ড্রেনের ময়লা রাস্তার উপর, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মানুষের বাসা-বাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামনে রাখছে। তাতে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। ময়লার গন্ধে রাস্তা দিয়ে হাঁটাই যায় না। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক লীগ দনিয়া ইউনিয়নের সভাপতি আনোয়ার হোসেন পাঠান বলেন, এখানে ড্রেনের যে কাজ হচ্ছে তা খুবই নি¤œমানের। আমি নিজের চোখে দেখেছি পুরাতন ড্রেন ভেঙ্গে যেসব ময়লা নরম ইট ও সুরকি তুলেছে সেগুলো মেশিনের মধ্যে দিয়ে মিকশ্চার বানিয়ে ড্রেনের বেজমেন্ট ঢালাই দিচ্ছে। সাথে ময়লা মিশ্রিত বালু ও পাথর দিয়ে যেনোতেনোভাবে ঢালাই দেয়া হচ্ছে। এইভাবে ঢালাই দেয়া ড্রেন কয়েক মাসও টিকবে না। শ্রমিক লীগ নেতা আনোয়ার পাঠান বলেন, এরা ড্রেনের ময়লা মাসের পর মাস রাস্তার উপর ফেলে জনগণকে কষ্ট দিচ্ছে। বিশেষ করে ছোট ছোট বাচ্চাদের স্কুলে যাওয়া আসা করতে অনেক কষ্ট হচ্ছে।
আনোয়ারের মতো স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেরই অভিযোগ, শুরু থেকেই এই ড্রেনের কাজ নিয়ে সিটি কর্পোরেশনের সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার, ইঞ্জিনিয়ার ও প্রকল্প পরিচালকের উদাসীনতা চোখে পড়েছে। কোন পর্যন্ত ড্রেন হবে, কোন কোন ভবন ভাঙতে হবে- এসব নিয়ে এলাকার বাসিন্দাদের সাথে কোন আলোচনাই তারা করেনি। এমনকি কোনো নোটিশও দেয়া হয়নি। একদিক থেকে কাজ শুরু করে তা কয়েক মাস বন্ধ রেখে আবার মাঝখান থেকে কাজ শুরু করেছে। যেখানে ১৫জন শ্রমিক লাগে সেখানে ৪/৫জন দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে। মানুষের বাড়ি-ঘর, দোকানপাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামনে রাস্তা কেটে গর্ত করে দিনের পর দিন ফেলে রাখা হচ্ছে। মানুষগুলো ওই বড় ড্রেন পেরিয়ে কিভাবে চলাচল করবে তার কোনো সমাধান নেই। আবার ড্রেন তৈরীর অজুহাতে মেইন সুয়ারেজ লাইন মাসের পর মাস বন্ধ রাখায় দনিয়া এলাকার অনেকাংশ ড্রেনের পানিতে ডুবে আছে। সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, বর্নমালা স্কুলের আশেপাশে মূল ড্রেনের পানি উপচে রাস্তার উপর উঠে গেছে। গোয়ালবাড়ী মোড়ের দিকেও একই অবস্থায় দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে চারিদিকে। এ প্রসঙ্গে যাত্রাবাড়ী থানা আওয়ামী লীগ নেতা ও স্থানীয় বাসিন্দা আবুল কালাম আজাদ বলেন, সিটি কর্পোরেশনের কাজের যে ধীর গতি দেখছি তাতে সামনের বর্ষায় আবার আমরা ডুববো কোনো সন্দেহ নাই। তিনি বলেন, ড্রেনের কাজের জন্য প্রধান সুয়ারেজ লাইন বন্ধ রাখায় অনেক এলাকার বাড়িঘরে ড্রেনের ময়লা দুর্গন্ধযুক্ত পানি ঢুকে যাচ্ছে। অথচ কাজের কোনো গতি নেই। ঠিকাদার তার খেয়াল খুশি মতো কাজ করে তো করে না। এভাবে তো চলতে পারে না। ভুক্তভোগিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এলাকার হাজার হাজার মানুষের মধ্যে সিটি কর্পোরেনের ড্রেনের কাজ নিয়ে ক্ষোভ ও অসন্তোষ রয়েছে। এ প্রসঙ্গে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোঃ আসাদুজ্জামান বলেন, দনিয়া এলাকার রাস্তা, বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামনে থেকে ময়লা আবর্জনা সরানোর জন্য সংশ্লিষ্ট প্রকল্প পরিচালককে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তারপরেও যদি সরানো না হয়ে থাকে তবে আগামীকাল আমি চিঠি ইস্যু করবো।
উল্লেখ্য, নাগরিক সুবিধা বৃদ্ধির জন্য ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের চারটির ইউনিয়নের অবকাঠামোগত উন্নয়নে মেগা প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এতে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৭৩৪ কোটি টাকা। চারটি ইউনিয়নের রাস্তা, নর্দমা, ফুটপাত তৈরী, বৃক্ষরোপণ এবং এলইডি বাতি স্থাপনের লক্ষ্যে কাজ করছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। বরাদ্দকৃত অর্থে ১৫২ কিলোমিটার রাস্তার উন্নয়ন করা হবে। বৃক্ষরোপণ করা হবে ৭ হাজার ৬৩টি, ড্রেনের উন্নয়ন করা হবে ১৫৮ কিলোমিটার। ফুটপাত উন্নয়ন করা হবে ৬ কিলোমিটার। এছাড়া রাস্তায় এলইডি বাতি লাগানো হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।