Inqilab Logo

বুধবার, ০৩ জুলাই ২০২৪, ১৯ আষাঢ় ১৪৩১, ২৬ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

প্রশ্ন ফাঁসকারীদের ‘ফায়ারিং স্কোয়াডে’ দেওয়া উচিত -প্রেসিডেন্ট

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৬ মার্চ, ২০১৮, ৯:১১ পিএম

প্রশ্ন ফাঁসকারীদের ‘ফায়ারিং স্কোয়াডে’ দেওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ। তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে প্রশ্নপত্র ফাঁস সবচেয়ে আলোচিত বিষয়ে পরিণত হয়েছে। প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে শিক্ষক-ছাত্র-অভিভাবকদের সংশ্লিষ্টতা নিয়েও বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। ‘দেশের আগামী প্রজন্মকে ধ্বংসের এই প্রক্রিয়ায় যারা জড়িত, তাদের ‘ফায়ারিং স্কোয়াডে’ দেওয়া উচিত।’

মঙ্গলবার (৬ মার্চ) ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহের উদ্বোধনী তিনি এসব কথা বলেন। ছাত্র খারাপ ছিলাম, তবে নকল করিনি মন্তব্য করে প্রেসিডেন্ট বলেন, সব বাবা-মাই চায়, তার সন্তান ফার্স্ট-সেকেন্ড হোক, গোল্ডেন এ প্লাস পাক। কিন্তু যখন শোনা যায় যে বাবা-মাই ছেলেকে নকল সরবরাহ করছে- তা কী করে সম্ভব। তিনি বলেন,“এর চেয়ে লজ্জাজনক-জঘন্য কাজ আর কি হতে পারে! এই বাবা আর মা তার ছেলে-মেয়েকে কী শিখাচ্ছে? তাকে কী বানাতে চাচ্ছে? ভবিষ্যতে তাকে দিয়ে কী হবে? দেশের কী হবে?”

টিউশনি আর কোচিং ব্যবসার সাথে জড়িত শিক্ষকদের বিষয়ে প্রেসিডেন্ট বলেন, “যেসব শিক্ষক ছেলে মেয়েদের শিখাবে, তারা নিজেরাই মার্কেট ভালো করার জন্য, প্রাইভেট পড়াবার মার্কেট ভালো করার জন্য সে যদি প্রশ্ন করে বলে দেয়- ‘এই প্রশ্ন আসবে লেখ’ মার্কেট ভালো হবে, বেশি বেশি (শিক্ষার্থী) পড়তে আসবে, এসব চিন্তা থেকে তারা এইগুলি করতেছে। তারা দেশটাকে কী দিচ্ছে? এখন কথা বলরে তো খারাপ লাগে! দেশ ও জাতির স্বার্থে দে শুড গো টু ফায়ারিং স্কোয়াড। ফায়ারিং স্কোয়াডে দেওয়া উচিত।”

প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ তাদের সময়কার লেখাপড়ার কথা তুলে ধরে বলেন, “আমাদের তো বাবা-মা খবরই নিত না। স্কুলে গেছে কি না! এখন তো সন্তানের সাথে লেগেই থাকে। খেয়াল রাখা ভালো, অসুবিধা নাই। তবে ভালো জিনিস শিখাক। ফার্স্ট-সেকেন্ড হলেই কী হয়? আমিতো খুব খারাপ ছাত্র ছিলাম। আমার মত খারাপ ছাত্র যদি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হতে পারে, তাহলে অত ভালো ছাত্র হওয়ার দরকারটা কী?”

প্রেসিডেন্ট বলেন, কোমলমতি শিক্ষার্থীরা যাতে সুশিক্ষায় শিক্ষিত হতে পারে এবং যে কোনো অন্যায় ও নীতি বিবর্জিত কর্মকাণ্ড থেকে দূরে থাকে, সে লক্ষ্যে শিক্ষক অভিভাবকদের উদ্যোগী হতে হবে। তিনি বলেন, মনে রাখবেন, একজন শিক্ষার্থীর শিক্ষার মূল ভিত্তি রচিত হয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। তাই প্রতিটি শিক্ষার্থী যাতে শক্ত ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত হয়ে শিক্ষাজীবন শুরু করতে পারে, তা নিশ্চিত করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। আর তা করতে পারলেই পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন ও প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা শেষ হয়ে আসবে।”

অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে প্রেসিডেন্ট বলেন, “শিশুরা জাতির ভবিষ্যৎ, তাই অভিভাবকদের প্রতি আমার অনুরোধ, জাতির উজ্জ্বল ভবিষ্যতের স্বার্থে শিশুদের নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তুলুন। পড়াশোনা ও বইয়ের ভারে জর্জরিত না করে তাদের খেলাধুলা ও সুস্থ বিনোদনের পর্যাপ্ত সময় দিন। আমরা যে আনন্দঘন শৈশব পেয়েছি, তাদেরকেও তার স্বাদ দিতে হবে।”

শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে প্রেসিডেন্ট বলেন, “আপনারাই আপনাদের নীতি ও আদর্শ দিয়ে দেশের প্রতিটি শিশুকে দেশ গড়ার কারিগর হিসেবে গড়ে তুলতে পারেন। শিশুদের মাঝে নেতৃত্ব সৃষ্টি করতে পারেন। সমাজের কোন কাজটি ভালো এবং কোন কাজটি মন্দ, কোন কাজটি করলে দেশ ও জাতির উন্নয়ন ঘটবে- সে সম্পর্কে ধারণা প্রদানের পাশাপাশি ভাল কাজের চর্চা করাতে পারেন। তাদের মাঝে দেশাত্মবোধ সৃষ্টি করে দেশপ্রেমী হিসেবে গড়ে তুলতে পারেন। এ জন্য আপনাদের উদ্যোগী ও নিবেদিত হতে হবে।”

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান ফিজারের সভাপতিত্বে জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ উপলক্ষে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে প্রেসিডেন্ট শিক্ষা পদকের জন্য মনোনীত শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠান ও আন্তঃ প্রাথমিক বিদ্যালয় সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পদক বিতরণ করেন।



 

Show all comments
  • Mohammed Shah Alam Khan ৭ মার্চ, ২০১৮, ৬:৩৪ এএম says : 0
    বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ প্রশ্ন ফাঁসকারীদের ‘ফায়ারিং স্কোয়াডে’ দেওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে প্রশ্নপত্র ফাঁস সবচেয়ে আলোচিত বিষয়ে পরিণত হয়েছে। প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে শিক্ষক-ছাত্র-অভিভাবকদের সংশ্লিষ্টতা নিয়েও বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। ‘দেশের আগামী প্রজন্মকে ধ্বংসের এই প্রক্রিয়ায় যারা জড়িত, তাদের ‘ফায়ারিং স্কোয়াডে’ দেওয়া উচিত।’ আমি ওনার প্রতিটি শব্দের সাথে সহমত প্রকাশ করছে। দেশের ভবিষৎ প্রজন্ম ধ্বংস হলে দেশ ধ্বংস হবে এটাই সত্য কাজেই এরা দেশদ্রোহী এদের শাস্তি অবশ্যই ‘ফায়ারিং স্কোয়াডে’ এতে কোন সন্দেহের অবকাশ নেই। রাষ্ট্রপতির আরো একটি কথা আমার কাছে খুবই ভাল লেগেছে সেটা হচ্ছে তিনি বলেছেন, “আমিতো খুব খারাপ ছাত্র ছিলাম। আমার মত খারাপ ছাত্র যদি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হতে পারে, তাহলে অত ভালো ছাত্র হওয়ার দরকারটা কী?” কথাটা অবশ্যই সঠিক কারন খারাপ ছাত্র মানে এটা নয় সে শিক্ষিত নয়, সে ব্যাবহার জানেনা, সে ভুল পথে চলে ইত্যাদি; কাজেই সৎ চরিত্রবান কর্মঠ দেশপ্রেমিক হলেই দেশের মঙ্গলে কাজ করা সম্ভব তার উজ্জল প্রমান আমাদের রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। আমরা মনে করি ওনার এই কথাগুলো যাদের সম্মুখে উনি বলেছেন তারা যেন ওনার কথা গুলো বাস্তবায়িত করেন। সাথে সাথে আমরা চাইব রাষ্ট্রপতির সচিবালয় থেকে ওনার এই কথা গুলো ফলাও ভাবে সারা বাংলাদেশের স্কুল গুলোতে যাচ্ছে কিনা এবং সেভাবে শিক্ষক ও অভিভাবকরা এই উপদেশ মেনে চলছেন কিনা এর মনিটর করা। আল্লাহ্‌ আমাদের সবাইকে সত্য কথা বলতে এবং সততার সাথে চলতে ক্ষমতা দান করুন। আমীন
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রেসিডেন্ট

১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ