রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
নরসিংদী থেকে সরকার আদম আলী : নরসিংদী জেলা শহরের ট্রাফিক ব্যবস্থার ভিত নড়বড়ে হয়ে পড়েছে। যখন তখন যেখানে সেখানে যানজট লেগে ঘন্টার পর ঘন্টা কেটে যাচ্ছে। জট নিরসনে ট্রাফিক পুলিশের দেখা পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে স্কুল-কলেজ, মাদরাসার হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রী সঠিক সময়ে স্কুলে যেতে পারছে না। গন্তব্যে পৌঁছুতে পারছে না হাজার হাজার ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন পেশাজীবি শ্রেণীর মানুষ। যানজটে আটকা পড়ে খেটে খাওয়া মানুষের গুরুত্বপূর্ণ কর্মঘন্টার অপচয় ঘটছে। আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে গতরখাটা মানুষ। দিনের বেশীরভাগ সময়ই কেটে যাচ্ছে যানজটে আটকা পড়ে।
গুরুত্ব অনুসারে ট্রাফিক স্পট বিন্যাসে ব্যর্থতা, শহরের গুরুত্বপূর্ণ ও জনবহুল স্থানগুলোতে ট্রাফিক পুলিশ নিয়োগে অনিয়ম, ট্রাফিক স্পটে কর্তব্যরত পুলিশের অবহেলা, যখন তখন ট্যাঙ্ক, লরী, কভার্ডভ্যান, ট্রাক, ট্রাক্টর, ভটভটি, ব্যাটারী চালিত ত্রি-চক্রযানসহ বিভিন্ন মালবাহী বেআইনী যানবাহনের অবাধ চলাফেরার কারণে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। শহরের এই দুরাবস্থা নিরসনে কেউ এগিয়ে আসছে না।
নরসিংদী জেলা শহর একটি জনবহুল শহর। সড়ক, নৌ ও রেলপথের এক গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগস্থলে অবস্থিত এই জেলা শহরে প্রতিদিন এই ৩ টি পথে হাজার হাজার মানুষ যাতায়াত করে। শিল্প ও ব্যবসার জন্য বিখ্যাত শহর হিসেবে নরসিংদীতে বিভিন্ন এলাকা থেকে নৌ-পথে কয়েক হাজার মানুষ নিয়মিত আসা যাওয়া করে। একইভাবে রেলপথ ও সড়কপথেও ৬ টি উপজেলাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ যাতায়াত করে। কিছু কিছু যাত্রী ঢুকে বিভিন্ন যানবাহনে চড়ে। আবার কিছু কিছু যাত্রী শহরে ঢুকে যানবাহনে চড়ে। এসব হাজার হাজার যাত্রীদেরকে বহন করে সিএনজি চালিত থ্রী-হুইলার, ব্যাটার চালিত থ্রী-হুইলার, রিক্সা, ভটভটি, হলার, প্রাইভেটকার ইত্যাদি যানবাহন। ভোর রাত থেকে নরসিংদী শহরে বহিরাগত লোকজন ঢুকতে থাকে। কিন্তু এসব যানবাহন নিয়ন্ত্রণে শহরের গুরুত্বপূর্ণ জনবহুল এলাকাগুলোতে কোন স্থায়ী ট্রাফিক স্পট নির্ধারণ করতে পারেনি জেলা ট্রাফিক পুলিশ। সকল প্রবেশদ্বারসমূহে ট্রাফিক পুলিশ থাকে না। শহরের মধ্যবর্তী রেলক্রসিংটি মানুষের দু:খ হয়ে দেখা দিয়েছে। এই রেলক্রসিং দিয়ে প্রতিদিন ৩৩ জোড়া ট্রেন চলাচল করে। দিনের প্রায় ১২ ঘন্টা লেবেল ক্রসিংয়ে যানজট লেগে থাকে। প্রয়োজনীয় সংখ্যক ট্রাফিক পুলিশের অভাবে লেবেল ক্রসিংয়ে যানজট দু:স্হ হয়ে দেখা দিয়েছে। শহরের অন্যান্য যানজটগুলো হলো বোঝার উপর শাকের আটির মতো। নদীপথে যেসব যাত্রীরা শহরে ঢুকে তাদের মধ্যে বেশীরভাগ হচ্ছে স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রী, শহরের শিল্প এলাকার শ্রমিক ও বিভিন্ন শ্রেণীর ব্যবসায়ী। ভোরবেলায় নদীপথের যাত্রীরা শহরে ঢুকে পুরনো লঞ্চঘাট, বিপিন সাহার ঘাট ইত্যাদি নৌঘাট দিয়ে। শহরে ঢুকেই তারা যানজটের সম্মূখীন হয়। সড়কপথে ছাত্র-ছাত্রী, ব্যবাসায়ীরা ঢোকে পুটিয়া-নরসিংদী, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ভেলানগর, সাহেপ্রতাপ এবং নরসিংদী-রায়পুরা সড়ক দিয়ে। ভোর থেকে এসব পথে হাজার হাজার মানুষ শহরে ঢোকে যানজটের শিকার হলেও নির্ধারিত স্থানগুলোতে ট্রাফিক পুলিশ ঢুকে বেলা ১০ টায়। যার ফলে সকালে ট্রাফিক পুলিশের অভাবে সারা শহরের জীবযাত্রা প্রায় অচল হয়ে পড়ে। ইজিবাইক, সিএনজি, ব্যাটারীচালিত রিক্সা, প্যাডেল চালিত রিক্সা, বে-আইনী ভটভটি, বে-আইনী ট্রাক্টর (ইছার মাথা), বালু ও ইটবাহী ট্রাক, বড় আকৃতির কভার্ডভ্যান, শেলো ইঞ্জিন চালিত ভ্যানগাড়ী, শেলো ইঞ্জিন চালিত থ্রী-হুইলার, সাইকেল, মোটর সাইকেল ইত্যাদি যানবাহনে শহরের বিভিন্ন রাস্তায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। মানুষ ঘন্টার পর ঘন্টা যানজটে পড়ে সীমাহীন দূর্ভোগের শিকার হয়। কিন্তু কেউ যানজট নিরসনে এগিয়ে আসে না। এভাবে প্রতিদিন ডিসি রোড, শহরের সদর রোড, ক্যাপ্টেন হেমেন্দ্র সাহার মোড়, বাজীর মোড়, বাজার মোড়, পৌরসভার মোড়, ব্রাহ্মন্দী শিক্ষা চত্বর, ব্রাহ্মন্দী রেলক্রসিং, ওভারব্রীজ সংলগ্ন খালপাড়, রেলষ্টেশন মোড় ইত্যাদি প্রতিটি রাস্তা ও মোড়ে নিত্যদিন যানজট লেগে থাকে। সকাল থেকে শুরু করে রাত ৮ টা পর্যন্ত অব্যাহত যানজটে মানুষের জীবনযাত্রা অচল প্রায় হয়ে পড়ছে। জেলা ট্রাফিক পুলিশ এসব যানজট নিরসনে কোন কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারছে না। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত প্রকৃত যানজট বা জনগুরুত্বপূর্ণএলাকাগুলোতে ট্রাফিক পুলিশ পোস্টিং দেয়া হয় না। পক্ষান্তরে ট্রাফিক পুলিশের জন্য সুবিধাপূর্ণ এলাকাগুলোতে একাধিক পুলিশ নিয়োগ দেয়া হয়। প্রতিদিন ভেলানগর জেলখানার মোড় থেকে স্টেডিয়াম পর্যন্ত ২০ থেকে ২৫ জন ট্রাফিক পুলিশ নিয়োজিত থাকে। অথচ সচেতন যাত্রীদের মতে এখানে ২ থেকে ৩ জন পুলিশই যথেষ্ট হতে পারে। পৌরসভার মোড়ে ৩ জন পুলিশের প্রয়োজন। এখানে মাঝে মধ্যে একজন ট্রাফিক কনস্টেবল দেখা যায়। হেমেন্দ্র সাহার মোড়ে ঘন্টার পর ঘন্টা যানজট লেগে থাকে। এখানে কোন ট্রাফিক পুলিশ খুব কমই দেখা যায়। বাজারের মোড় ও বাজীর মোড়ে কোন ট্রাফিক পুলিশ নিয়োগ করতে দেখা যায়নি। ব্রাহ্মন্দী, বৌয়াকূড় সীমানায় রেলক্রসিংয়ে ট্রেনের সময় হলেযেমন যানজট সৃষ্টি হয়। তেমনি ট্রেনের সময় ছাড়াও যানজট লেগে থাকে। এখানে মাঝে মধ্যে দু একজন ট্রাফিক কনস্টেবল দেখা গেলেও তারা তাদের নিজেদের কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকতে দেখা যায়। শহরের ভিতর কোন ট্রাফিক পুলিশের কর্মকর্তাকে ডিউটি করতে দেখা যায় না। রহস্যজনক কারণে তারা থাকেন ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের মাধবদী, পাঁচদোনা, সাহেপ্রতাপ, ভেলানগর, ইটাখোলা ইত্যাদি এলাকায়। এসব জায়গাগুলোর যেখানে ১ বা ২ জন কনস্টেবল বা কর্মকর্তা থাকলেই যথেষ্ট সেখানে এত সংখ্যক পুলিশ কর্মকর্তা ও কনস্টেবল সেখানে থেকে কি জনস্বার্থে কাজ করেন না নিজেদের স্বার্থে কাজ করেন তা নিয়ে জনমনে ব্যাপক প্রশ্নের উদ্রেক করেছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।