Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অপরিকল্পিত স্লুইস গেট নির্মাণে জনদুর্ভোগ

প্রকাশের সময় : ৪ মার্চ, ২০১৮, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১২:০৫ এএম, ৪ মার্চ, ২০১৮

ফুলপুর (ময়মনসিংহ) উপজেলা সংবাদদাতা : ময়মনসিংহের ফুলপুরে বন্যা নিয়ন্ত্রণের নামে অপরিকল্পিত ভাবে স্লুইস গেট নির্মাণে অকাল বন্যা সৃষ্টিসহ সারা বছর যাতায়াতের চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন এলাকাবাসি। জানা যায়, ফুলপুর উপজেলার সদর ইউনিয়নকে বন্যা মুক্ত রাখতে স্থানীয় সরকার অধিদপ্তরাধীন পানি সম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ২০১৩ সনে জাইকার অর্থায়ন ও এলজিইডির বাস্তবায়নে প্রায় সাড়ে ৪ কোটি টাকার প্রকল্প বরাদ্দ হয়। এ প্রকল্প বাস্তবায়নে উজান থেকে বন্যার পানি প্রবেশের জায়গায় বাধ বা স্লুইস গেট নির্মাণ না করে বাখাই- বাঁশতলা সড়কের বাতিকুড়া গ্রামের বটখালি খাল দিয়ে পানি নিষ্কাশনের জায়গায় সামন্য খননসহ প্রায় ২৭ ফুট দৈর্ঘ্যরে ব্রিজসহ স্লুইস গেট নির্মাণ করা হয়। এতে পানি বের হওয়ার জন্য মাত্র ৫/৬ ফুট দৈর্ঘ্য প্রস্থের ৪ টি গেট রাখা হয়। নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার পর পরই ২০১৫ সনে নাকানন্দি ও কুড়িয়া নদীসহ উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানি স্লুইস গেট দিয়ে বের হওয়ার সংকুলন না হয়ে এলাকায় ব্যাপক বন্যার সৃষ্টি করে। এক পর্যায়ে পূর্ব পাশের রাস্তা ভেঙে পানি বের হয়ে অপর একটি খালের সৃষ্টি হয়। আগে এলাকাবাসি বাশের সাঁকো দিয়ে খাল পারাপার হতে পারলেও পরে তাও বন্ধ হয়ে যায়। এ প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যাপক অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগসহ এলাকায় তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি করে। পরে ২০১৬ সনে প্রায় ১ কোটি ৩১ লাখ ২০ হাজার টাকার অপর একটি প্রকল্প বরাদ্দ দিয়ে আগের স্লুইস গেট সংযুক্ত করে প্রায় ২৯ ফুট দৈর্ঘ্যরে অপর একটি স্লুইস গেটসহ ব্রিজ নির্মাণ করা হয়। এতে পানি বের হওয়ার জন্য মাত্র ৫/ ৬ ফুট দৈর্ঘ্য প্রস্থের ৩ টি গেট রাখা হয়। পরের বছরও বন্যার পানি নিষ্কাশন হতে না পেরে স্লুইস গেটের অপর পাশের প্রায় ৫শ’ ফুট সড়কসহ ভেঙে অপর একটি খাল হয়। বর্তমানে এলাকবাসি সড়ক ছেড়ে মাঠ দিয়ে অতি কষ্টে খাল পারাপার হয়ে চলাচল করছেন। প্রায় ৬ কোটি টাকা ব্যয় বরাদ্দে নির্মিত স্লুইস গেট বন্যা নিয়ন্ত্রণের কাজে না এসে উল্টো জলাবদ্ধতাসহ অকাল বন্যার সৃষ্টি হয়ে রাস্তা ভেঙে এখন তাদের গলার ফাঁস হয়ে দাড়িয়েছে। এ ব্যাপারে বাতিকুড়া গ্রামের সুরুজ আলী খা জানান, শুধু অর্থের হরিলুট করতেই এ ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। বর্তমানে উৎপাদিত ফসল বিক্রি করতে আধা কিলো দূরের বাজারে যেতে না পেরে ৫ কিলো দূরে যেতে হচ্ছে। তামশাটা ভেঙে ব্রিজ করে দিলেই রক্ষা হবে। বাঁশতলা গ্রামের সিরাজ আলী জানান, স্লুইস গেট নির্মাণে এক খাল ভেঙে তিন খাল হয়েছে। বর্তমানে যাতায়ত সমস্যায় ছোট বাচ্চাদের স্কুলে যাওয়া বন্ধ রয়েছে। বনগাঁও গ্রামের আব্দুল শহিদ জানান, স্লুইস গেট নির্মাণে জলাবদ্ধতায় ৩ বছর ধরে আমাদের প্রায় ১০ একর জমির ফসল পাচ্ছি না। ফুলপুর ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম জানান, ভাঙনের জায়গায় একটি ব্রিজ নির্মাণসহ সড়ক মেরামত করা জরুরী প্রয়োজন। যা বাস্তবায়নের জন্য উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে বারবার জানিয়েছি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফুলপুর উপজেলা প্রকৌশলী সালেহ হাসান প্রামানিক জানান, উজানে জায়গা না পাওয়ায় স্লুইস গেট হয়নি। ভাঙনের স্থানে একটি ব্রিজ নির্মাণসহ রাস্তা মেরামতের প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। ৫/৬ মাসের মধ্যে কাজ হতে পারে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জনদুর্ভোগ

৩১ জানুয়ারি, ২০২২
৩ জানুয়ারি, ২০২২
৩১ ডিসেম্বর, ২০২১
২৭ জানুয়ারি, ২০২১
১৪ আগস্ট, ২০২০

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ