Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রাখাইনের খুনিদের বিচার দাবি করলেন তিন নোবেলজয়ী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ৬:১৫ পিএম

মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গা নিধনযজ্ঞকে সুস্পষ্ট গণহত্যা আখ্যা দিয়েছেন বাংলাদেশ সফররত তিন নোবেল বিজয়ী। এটকে পরিকল্পিত গণহত্যা চালানো হচ্ছে অভিযোগ করে দোষীদের আন্তর্জাতিক আদালতে বিচারের মুখোমুখি করার দাবি জানিয়েছেন তারা।

বাংলাদেশ সফররত ইরানের শিরিন এবাদি, ইয়েমেনের তাওয়াক্কুল কারমান ও যুক্তরাজ্যের মরিয়েড মুগুয়ার সোমবার কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করে সাংবাদিকদের সামনে এ দাবি জানান।

আরব বসন্তের দিনগুলোতে ইয়েমেনের বিপ্লবের প্রতীক হয়ে ওঠা সাংবাদিক, অধিকারকর্মী তাওয়াক্কুল কারমান ২০১১ সালে আরও দুইজনের সঙ্গে নোবেল শান্তি পুরস্কার পান। কুতুপালং আশ্রয় শিবির ঘুরে দেখার পর তিনি বলেন, মিয়ানমারে যা হচ্ছে তা গণহত্যা ছাড়া আর কিছু নয়।

 

এরপরও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যদি চুপ থাকে, সেটা পৃথিবীর সব মানুষের জন্য লজ্জার হবে মন্তব্য করে এই নোবেল বিজয়ী বলেন, “যারা এ অপরাধের জন্য দায়ী, তাদেরকে আন্তর্জাতিক আদালতে বিচারের মুখোমুখি করার দাবি জানাচ্ছি।”

রাখাইনের নিরাপত্তা বাহিনীর স্থাপনায় হামলার পর গতবছর ২৫ অগাস্ট থেকে সেনাবাহিনীর এই দমন অভিযান শুরু হয়, যাকে ‘জাতিগত নির্মূল অভিযান’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে জাতিসংঘ ও যুক্তরাষ্ট্র।

অন্যদিকে মিয়ানমারের নোবেল বিজয়ী নেত্রী অং সান সুচির সরকার ওই হামলার জন্য রোহিঙ্গা গেরিলাদের একটি দলকে দায়ী করে আসছে। সেনাবাহিনীর অভিযানকে তারা বলছে ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াই’।

সেনা অভিযান শুরুর পর থেকে গত ছয় মাসে প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা প্রাণ বাঁচাতে সীমান্ত পেরিয়ে আশ্রয় নিয়েছে প্রতিবেশী বাংলাদেশে। গ্রামে গ্রামে হত্যা, ধর্ষণ, জ্বালাও-পোড়াওযের ভয়াবহ বিবরণ পাওয়া যাচ্ছে তাদের ভাষ্যে।

কিন্তু নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডের শান্তি প্রক্রিয়ার জন্য ১৯৭৬ সালে শান্তিতে নোবেল পাওয়া মরিয়েড মুগুয়ার বলছেন, ক্যাম্পের রোহিঙ্গা নারীরা হত্যা-ধর্ষণ আর বর্বরতার যে বিবরণ তাদের সামনে দিয়েছেন, তাতে এটা স্পষ্ট যে মিয়ানমারে পরিকল্পিত নিধনযজ্ঞ চলছে।

“এটা স্পষ্টভাবে স্পষ্টভাবে স্পষ্টভাবে গণহত্যা। বার্মিজ সরকার আর সেনাবাহিনী রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে যা চালাচ্ছে, সেটা মিয়ানমার থেকে, ইতিহাস থেকে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে মুছে ফেলার পরিকল্পিত চেষ্টা।”

আন্তর্জাতিক আদালতে রাখাইনের খুনিদের বিচারের দাবি জানিয়ে এই নোবেল বিজয়ী বলেন, “মানুষ হিসেবে আমরা মিয়ানমার সরকারের এই নীতিকে ধিক্কার জানাই।”

২০০৩ সালে শান্তিতে নোবেল পাওয়া ইরানি নাগরিক শিরিন এবাদি বলেন, রোহিঙ্গা সঙ্কট শুরুর পর ছয় মাস পেরিয়ে গেলেও শরণার্থীদের ঢল থামছে না। বিপুল সংখ্যক শরণার্থীর কারণে বাংলাদেশের মানুষের ওপরও বড় ধরনের চাপ তৈরি হচ্ছে। রোহিঙ্গাদের জন্য বাংলাদেশের মানুষ ও সরকারের ভূমিকার প্রশংসা করেন তিনি।



 

Show all comments
  • Mohammed Shah Alam Khan ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ১০:০৩ পিএম says : 0
    শান্তিতে তিন মহিলা নোবেল বিজয়ী কুতুপালং আশ্রয় শিবির ঘুরে দেখে বলেছেন মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গা নিধনযজ্ঞ সুস্পষ্ট গণহত্যা। বিজয়ীরা গণহত্যার অভিযোগ তুলে দোষীদের আন্তর্জাতিক আদালতে বিচারের মুখোমুখি করার দাবী জনিয়েছেন। এখন প্রশ্ন হচ্ছে আন্তর্জাতিক আদালতে কে বিচার প্রার্থনা করবেন??? আমরা বহুদিন ধরেই শুনে আসছি এই আন্তর্জাতিক বিচারের কথা কিন্তু বিচার আর কেহই চিচ্ছেন না বলেই খালাস। মায়ানমারের সামরিক যান্তা গণহত্যা চালিয়ে রোহিঙ্গাদের নিধন করে মায়ানমারে রোহিঙ্গা শূন্য করে রোহিঙ্গা জাতীকে সমূলে নিশ্চিহ্ন করে এদের সমস্ত ধনসম্পদ আত্মসাৎ করার মহাপরিকল্পনা করেই হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে। এসব কথা বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান সহ জাতিসংঘ বলে আসছে কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য প্রকৃত অর্থে মায়ানমার যান্তার বিরুদ্ধে কোন ব্যাবস্থা আজ পর্যন্ত নেয়া হয়নি। এরজন্য সবাই ভারত, চীন ও রাশিয়াকে দায়ী করছে। আমরা নিজেদেরকে যতই শক্তিশালী মনে করিনা কেন প্রকৃত পক্ষে আল্লাহ্‌ই সর্বশক্তিমান তিনিই কঠিন বিচারক। সত্য প্রতিষ্ঠা কারিরা যতই ছোট দল হউক আল্লাহ্‌ তাদের পক্ষে থেকে তাদেরকে বিজয়ী করেন এটাই সত্য। আমীন
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ