Inqilab Logo

বুধবার, ০৩ জুলাই ২০২৪, ১৯ আষাঢ় ১৪৩১, ২৬ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

উয়ারী-বটেশ্বরে জাদুঘর উদ্বোধন আজ

প্রত্মতত্ত্ব আবিষ্কারের ১৮ বছর

| প্রকাশের সময় : ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

সরকার আদম আলী, নরসিংদী থেকে : আবিষ্কারের দীর্ঘ ১৮ বছর পর বাংলাদেশ তথা উপমহাদেশের বিখ্যাত প্রতœস্থল নরসিংদীর উয়ারী বটেশ্বরে স্থাপিত হয়েছে ‘উয়ারী বটেশ্বর দূর্গ-নগর উন্মুক্ত জাদুঘর’ নামে একটি ভিন্নধর্মী বিরল জাদুঘর। ৪ হাজার বছর পুরনো গর্তনিবাস আড়াই হাজার বছরের পুরনো চুন-সুরকি নির্মিত রাস্তা বৌদ্ধ পদ্ম মন্দির, বৌদ্ধ মন্দির ও বৌদ্ধ বিহারিকা, ইস্টক নির্মিত একটি বিশেষ অদ্বিতীয় স্থাপত্য বৌদ্ধ কুন্ড/পুকুনিয়াসহ বিভিন্ন স্থাপত্য ও বিভিন্ন প্রতœসম্পদ সমৃদ্ধ দেশের এই একমাত্র বিরল জাদুঘরটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করবেন মনোহরদী-বেলাব’র এমপি এড. নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন। এ উপলক্ষ্যে ঐতিহ্য অন্বেষণ নামে একটি পুরাতাত্তি¡ক রিসার্চ সেন্টার প্রতœস্থলে উয়ারী বটেশ্বর, দূর্গ-নগর, উন্মুক্ত জাদুঘর ও দীর্ঘস্থায়ী ঐতিহ্য পোষ্টার বিতরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।  এতে প্রধান অতিথি ছাড়াও ঐতিহ্য অন্বেষণের বিভিন্ন কর্মকর্তা ও ট্রাস্টিরা বক্তৃতা করবেন। ঐতিহ্য অন্বেষণের নির্বাহী পরিচালক ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতœতত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. সুফী মোস্তাফিজুর রহমান জানান ২০০০ সাল থেকে বেলাব উপজেলার উয়ারী বটেশ্বরে খনন কাজ শুরু করেন ড. সুফী মোস্তাফিজের নেতৃত্বে ঐতিহ্য অন্বেষণের একটি খনন দল। ২০০০ সালে খনন কাজ শুরুর পূর্বে উয়ারী বটেশ্বরে জরীপ চালিয়ে ৫০ টি প্রতœস্থান চিহ্নিত করেন ড. সূফী মোস্তাফিজের নেতৃত্বাধীন খনন দল। দীর্ঘ ১৮ বছরে উপর্যুক্ত মূল্যবান স্থাপনাসহ ছাপাংকিত মুদ্রা, উত্তর ভারতীয় কালো মসৃণ মৃৎপাত্র, রোলেটেড মৃৎপাত্র, নবযুক্ত মৃৎপাত্র, ধাতব নিদর্শন, স্বল্প মূল্যবান পাথর ও কাঁচের প্রতীক পোড়ামাটি ও পাথরের শিল্প বস্তু, বাটখারা ইত্যাদি অমূল্য প্রতœবস্তু আবিষ্কার করেন। কিন্তু ১৮ বছরের পরিশ্রমে যেসব পুরনো স্থাপত্য ও মূল্যবান প্রতœবস্তু আবিষ্কৃত হয়েছে তা জনগণের সামনে স্থায়ী প্রদর্শন করার কোন সুযোগ সৃষ্টি করা যায়নি। অর্থের অভাবে আবিষ্কৃত প্রতœস্থলের স্থাপনাগুলো মাটি দিয়ে ঢেকে রাখতে হয়েছে। অন্যান্য প্রতœবস্তুগুলো ল্যাবরেটরী ও প্রতœতত্ব অধিদপ্তরে জমা দিয়ে রাখতে হয়েছে। যার ফলে দেশ ও বিদেশের বহুসংখ্যক প্রতœতাত্বিক, ঐতিহাসিক ও পর্যটকরা উয়ারী বটেশ্বরে গিয়ে বিফল মনোরথে ফিরে গেছেন। এ অবস্থা দূরীকরণ ও উয়ারী বটেশ্বরের ঐতিহাসিক স্থাপনা ও প্রতœবস্তুগুলো সারাবছর স্থায়ীভাবে প্রদর্শনের জন্য পর্যটকদের সুবিধার্থে উন্মুক্ত জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। তিনি জানান, এ ধরনের জাদুঘর বাংলাদেশে এই প্রথম নির্মিত হয়েছে।
জাদুঘরে প্রতœবস্তুর মডেল, রেপ্লিকা, প্রতœবস্তু, প্রতœবস্তুর আলোকচিত্র, বিবরণ, বিশ্লেষণ প্রদর্শন করা হয়েছে। এ ছাড়া জাদুঘরে প্রতি ঘন্টায় উয়ারী-বটেশ্বর ডকুমেন্টারী ও ধারণকৃত প্রতœনাটক প্রদর্শনের ব্যবস্থা থাকবে। ড. সুফী মোস্তাফিজ আরো জানান, এলাকার জনগণই উয়ারী-বটেশ্বরের ঐতিহ্যের ধারক-বাহক। স্থানীয় জনগণের মধ্যে প্রাচীন ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক গণসচেনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন স্কুলে দীর্ঘস্থায়ী ঐতিহ্য পোস্টার বিতরণ করা হবে। উন্মুক্ত জাদুঘর উদ্বোধন করা হলে দেশ, বিদেশের প্রতœতাত্বিক, পর্যটক, স্কুল-কলেজের ছাত্র, শিক্ষকদের জন্য এ জাদুঘর থেকে উয়ারী-বটেশর সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য, উপাত্ত সংগ্রহের সুযোগ সৃষ্টি হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জাদুঘর

১৫ জানুয়ারি, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ