পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : চলমান এসএসসি পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁসের সাথে এবার নতুন বিতর্ক যুক্ত হয়েছে। সারাদেশের সকল কেন্দ্রে অভিন্ন প্রশ্নে পরীক্ষা হলেও রাজধানীর মান্ডা হায়দার আলী স্কুল এন্ড কলেজ কেন্দ্রে ভিন্ন প্রশ্নে পরীক্ষা নিয়েছে দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকেরা। আর এতে বিপাকে পড়েছেন ওই কেন্দ্রের সব পরীক্ষার্থীই। খাতা মূল্যায়নের সময় পরীক্ষকের হাতে যে প্রশ্ন থাকবে তার সাথে উত্তরপত্রের মিল না থাকলে ফেল হতে পারে তারা সবাই। কেন্দ্রের ভূক্তভোগী শিক্ষার্থীদের স্কুলগুলো জানিয়েছে ভিন্ন প্রশ্নে পরীক্ষা নেয়ার কারণে খাতা মূল্যায়নে সমস্যা হবে। এমনকি ফেল হতে পারে সব শিক্ষার্থীই।
জানা যায়, গতকাল (বৃহস্পতিবার) এসএসসির বিজ্ঞান বিভাগের উচ্চতর গণিত, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের সাধারণ বিজ্ঞান বিষয়ে পরীক্ষা ছিল। এসএসসিতে প্রতিটি পরীক্ষাই সারাদেশের অভিন্ন প্রশ্নে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তবে প্রশ্নফাঁস রোধে পরীক্ষার জন্য প্রতিটি কেন্দ্রে দুটি করে সেট প্রশ্ন পাঠানো হয়। পরীক্ষা শুরুর আধ ঘণ্টা আগে শিক্ষা বোর্ড থেকে এসএমএসের মাধ্যমে কেন্দ্র সচিবদের জানিয়ে দেয়া হয় কোন সেটে পরীক্ষা হবে। প্রতিটি পরীক্ষার মতো গতকালও উচ্চতর গণিত ও সাধারণ বিজ্ঞান বিষয়ে পরীক্ষার জন্য প্রশ্নের সেটের তথ্য এসএমএসের মাধ্যমে কেন্দ্র সচিবদের জানানো হয়। ম্যাসেজের নির্দেশনা অনুযায়ি সারাদেশের সকল কেন্দ্রের উচ্চতর গণিত ও সাধারণ বিজ্ঞানের ‘ক’ সেটের পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়। তবে হায়দার আলী স্কুল এন্ড কলেজ কেন্দ্রের তিনটি স্কুলের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা গ্রহণ করা হয় ‘খ’ সেটে। শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা শেষে বের হয়ে অন্যান্য স্কুলের শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনা করলে জানতে পারে তাদের কেন্দ্রের প্রশ্নের সাথে অন্য কেন্দ্রের প্রশ্নের কোন মিল নেই। বিষয়টি নিয়ে হায়দার আলী স্কুল এন্ড কলেজ কেন্দ্রের তিন প্রতিষ্ঠান মানিকনগর মডেল হাইস্কুল, অভয় বিনোদিনি স্কুল এবং কমলাপুর স্কুল এন্ড কলেজের পরীক্ষার্থী, অভিভাবক ও এসব স্কুলের শিক্ষকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বেশ কয়েকজন অভিভাবক ইনকিলাব অফিসে এসে হায়দার আলী কেন্দ্রের প্রশ্ন এবং অন্য কেন্দ্রগুলোতে হওয়া প্রশ্নের কপি দেখিয়ে বলেন, কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকদের ভুলে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবনের ক্ষতি হয়ে যাবে।
মানিকনগর হাইস্কুলের একজন শিক্ষার্থীর অভিভাবক আবুল কালাম আজাদ বলেন, সারাদেশের সাথে হায়দার আলী কেন্দ্রের প্রশ্নে মিল না থাকার বিষয়টি আমরা জানি। কিন্তু যারা খাতা মূল্যায়ন করবেন তারা তো জানেন না এখানে ‘ক’ সেটে নাকি ‘খ’ সেটে পরীক্ষা হয়েছে। মূল্যায়নের সময় যখন দেখবেন প্রশ্নের সাথে উত্তরপত্রের মিল নেই তখন সকলেই ফেল করবে।
শিক্ষকরা জানান, সারাদেশে অভিন্ন প্রশ্নে পরীক্ষা গ্রহণ করায় শিক্ষকরা ‘ক’ সেটের প্রশ্নে খাতা মুল্যায়ন করবে। কিন্তু আমাদের স্কুলের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা ‘খ’ সেটে গ্রহণ করায় সেই প্রশ্নের সাথে কোন মিল থাকবে না। স্বাভাবিকভাবে উত্তরপত্রের উত্তরও মিল থাকবে না। এতে করে এসব পরীক্ষার্থীর খাতায় নাম্বারিংংেয় সমস্যা হবে। ভাল ছাত্ররা কম নম্বর পাবে, ফেলও করতে পারে সকল শিক্ষার্থী। তারা আরও জানান, পরীক্ষা শুরুর পর ওএমআর সিটের টপ সিট অংশ ছিড়ে নেয়া হয়। ফলে খাতা বোর্ডে জমা হওয়ার পর তা চিহ্নিত করাও কঠিন হয়ে যাবে।
মানিকনগর মডেল হাই স্কুলের প্রভাতী শাখার শিফট ইনচার্জ সুপ্রজিত দাস বলেন, স্কুলের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিয়ে বের হয়ে দেখে অন্য কেন্দ্রের সাথে প্রশ্নে অমিল। বিষয়টি কয়েকজন শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা আমাকে জানায়। এরপর আমি কেন্দ্র সচিবকে না পেয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত একজন শিক্ষককে জানায় এবং ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রককে অবহিত করি। তিনি আমাদেরকে লিখিতভাবে বিষয়টি জানানোর জন্য বলেছেন।
মানিকনগর মডেল হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক ফেরদৌসী ইয়াসমিন বলেন, ভিন্ন প্রশ্নে পরীক্ষা গ্রহণ করায় শিক্ষার্থীদের অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যাবে। খাতা দেখার সময় পরীক্ষক দেখবেন না কোনটি ‘ক’ ও কোনটি ‘খ’ সেটে পরীক্ষা হয়েছে। সারাদেশে ‘ক’ সেটের পরীক্ষা হওয়ায় মূল্যায়নের জন্য তাদের হাতে ওই সেটেরই প্রশ্ন থাকবে। তারা সেই প্রশ্ন অনুযায়ি খাতা মূল্যায়ন করবেন এবং নাম্বারিং করবেন। কিন্তু আমাদের শিক্ষার্থীদের খাতায় যখন ‘খ’ সেটের প্রশ্নের উত্তর থাকবে তারা স্বাভাবিকভাবে কোন নম্বার দিবে না। কেন্দ্র সচিব কিংবা বোর্ডে যোগাযোগ করেছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, কেন্দ্র সচিবের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি তবে ওই স্কুলের অন্য একজনকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। রোববার বোর্ডে যোগাযোগ করা হবে।
হায়দার আলী স্কুল এন্ড কলেজ কেন্দ্রে সচিবের অনুপস্থিতিতে দায়িত্ব পালন করা শিক্ষক আব্দুল কাদের বলেন, তাকে কেন্দ্র সচিব ফোন দিয়ে ‘খ’ সেটে পরীক্ষা নিতে বলেছেন। সচিবের নির্দেশনা মেনেই তিনি ওই সেটে পরীক্ষা নিয়েছেন। এ বিষয়ে জানার জন্য কেন্দ্র সচিব মোশাররফ হোসেনকে ফোন করলে তিনি ফোন কেটে দেন। ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক তপন কুমার সরকারকে ফোন দিলে তিনি প্রথমে ফোন ধরেননি। এরপর এসএমএস পাঠালো ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।