রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
ফেনী জেলা সংবাদদাতা: ফেনী জেলার পরশুরাম উপজেলায় অবমূল্যায়িত হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের মূল সংগঠক ও প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের। হাইব্রিডরা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা অফিস থেকে শুরু করে সর্বত্র নিজেদের আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করেছে। ত্যাগী ও চিহ্নিত মুক্তিযোদ্ধারা জানান, সংগঠনের বিভিন্ন কার্যক্রম, আচার-অনুষ্ঠান এবং গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের বিষয়ে তাদের মূল্যায়ন তো দূরের কথা, অবহিতও করা হয় না।
এদিকে সারাদেশের মতো পরশুরামেও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি বিলুপ্ত হয়েছে। কিন্তু কমান্ডার হুমায়ুন শাহরিয়ার এখনো পূর্বের কার্যালয়ে নিয়মিত কর্মকাÐ পরিচালনা করছেন বলে অনুসন্ধানে মুত্তিযোদ্ধাদের অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে।
১৯৭১ সালের ৭ মার্চ শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশক্রমে ১০ মার্চ থানা পরশুরাম গণমুক্তি সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয়। পরশুরাম থানার তৎকালীন আহŸায়ক ও উপজেলায় মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক বাসপদুয়া গ্রামের আবুল কাশেম চৌধুরী জানান, ১৯৭৭-৮২ সাল পর্যন্ত তিনি থানা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। এরপর ১৯৮৩-১৯৯০ সাল পর্যন্ত তিনি থানা আ.লীগের সভাপতি পদে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৬ সাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত তিনি উপজেলা আ.লীগের উপদেষ্টা পদে রয়েছেন। কাশেম চৌধুরী জানান, পরশুরামে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা অবহেলিত। মুক্তিযুদ্ধের সময় ২ নম্বর সেক্টরের সাধারণ মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলামকে প্লাটুন কমান্ডার সাজিয়ে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটির সদস্য করার প্রস্তাব এবং এক তালিকার মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা প্রদানের বিরোধিতা করেন তিনি।
একপর্যায়ে কে বা কারা উপজেলা যাচাই-বাছাই কমিটির কাছে কাশেম চৌধুরীকে মুক্তিযোদ্ধা তালিকা থেকে বাদ দেয়ার লিখিত অভিযোগ করেন। কিন্তু যাবতীয় প্রমাণাদি উপস্থাপন করায় কমিটি তাকে মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী সংগঠক হিসেবে ঘোষণা দেয়। কাশেম চৌধুরী ও মুক্তিযোদ্ধা কাজী আবুল কাশেম আরো জানান, যুদ্ধকালীন থানা আ.লীগের কার্যকরী সভাপতি মরহুম আনোয়ারুল হক মজু, সাধারণ সম্পাদক মরহুম আমিনুল করিম মজু, খোকা মিয়া, মহকুমা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এস হুদা, ওয়াহিদুর রহমান মজু, জাহাঙ্গীর খÐলী, মাখন লাল সরকার, প্রয়াত সুকুমার নাথ, ফকির আবুল কাশেম চৌধুরী, মোস্তফা রবিউল হোসেন, এয়াকুব চৌধুরীসহ সংগ্রাম পরিষদের বহু সদস্য অবমূল্যায়িত হয়ে মারা গেছেন।
মৃত্যুর পরও তাদের কেউ স্মরণ করেনি। মুক্তিযোদ্ধা কাজী আবুল কাশেম বলেন, দেশ স্বাধীনের পাঁচ দশক পরও তিনি বাবুর্চির কাজ করে সংসার চালান। তার সামান্য পরিমাণ বসতভিটা থাকলেও অর্থাভাবে ঘর করতে পারেননি। সরকার গৃহহীন মুক্তিযোদ্ধাদের ঘর নির্মাণের আশ্বাস দিলে তিনি আবেদন করেন।
কিন্তু উপজেলা কমান্ডার হুমায়ুন শাহরিয়ার সুপারিশ না করায় তিনি ঘর পাননি। বর্তমানে পাঁচ সন্তান নিয়ে তিনি একটি টিনশেড ঘরে ভাড়া থেকে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। উল্লিখিত অভিযোগের বিষয়ে জানতে সাবেক উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার হুমায়ুন শাহরিয়ারকে ফোন করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। বর্তমানে তিনি মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার না হয়েও নিয়মিত অফিসে বসে কার্যক্রম পরিচালনা করছেন এমন প্রশ্নে ওই প্রতিনিধিকে সরাসরি তার সাথে দেখা করতে বলেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, তিনি মুক্তিযোদ্ধা প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। হুমায়ুন অফিসে বসেন কি না তা তিনি জানেন না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।