গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
চট্টগ্রাম ব্যুরো : চট্টগ্রাম মহানগরীতে গ্যাসের সঙ্কট দিন দিন তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে উঠেছে। আবাসিক গ্রাহকরা পড়েছেন চরম দুর্ভোগে, বাসাবাড়িতে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই রান্নাবান্না বন্ধ প্রায়। শিল্প কারখানার গ্রাহকরাও পড়েছেন চরম দুর্গতিতে। শিল্প, কলকারখানার উৎপাদনে ধস নেমেছে। এতে করে রফতানি খাতের শিল্পেও পড়েছে বিরূপ প্রভাব। এ অবস্থায় গতকাল (শনিবার) চট্টগ্রামের শীর্ষ ব্যবসায়ী-শিল্পপতি সংগঠনসমূহ, সামাজিক সংগঠন-সমিতির নেতৃবৃন্দ অনতিবিলম্বে বন্দরনগরী চট্টগ্রামের গ্যাস সঙ্কট নিরসনে সরকারকে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য জোর দাবি জানিয়েছেন।
চট্টগ্রাম মহানগরীতে গত কয়েক দিন যাবৎ গ্যাসের সরবরাহ অনেক কমে গেছে। ফলে আবাসিক ও শিল্প খাতের গ্রাহকরা চরম দুর্দশার শিকার হচ্ছেন। এ প্রেক্ষিতে সঙ্কট নিরসনে জাতীয় গ্রিড থেকে সরবরাহ বৃদ্ধিতে গত ২১ জানুয়ারি এক পত্রের মাধ্যমে জ্বালানি উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী, প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এমপি ও পেট্রোবাংলা চেয়ারম্যান ইশতিয়াক আহমেদের প্রতি আহবান জানান দি চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি’র সভাপতি মাহবুবুল আলম। তিনি উল্লেখ করেন বিরাজমান গ্যাস সঙ্কটহেতু চট্টগ্রামে শিল্প খাতে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে এবং বিদেশি ক্রেতাদের আদেশ মোতাবেক পণ্য রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। তাছাড়া মহানগরীর গ্যাস নির্ভর হাজার হাজার বাসা বাড়ি, রেস্তোরাঁ এবং খাবারের দোকানগুলোতে গ্যাসের অভাবে রান্না করা যাচ্ছে না। বিশেষ করে শিশু, বয়স্ক নারী-পুরুষ, ক্লিনিক ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগী সবচেয়ে বেশি সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। গ্যাসের অভাবে রাউজান তাপ বিদ্যুৎ ও শিকলবাহা কেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাচ্ছে না। ফলে সার্বিক নাগরিক জীবনে এক অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
মেট্রোপলিটন চেম্বার
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি চট্টগ্রামে শিল্প, বাণিজ্য ও আবাসিক খাতে গ্যাসের স্মরণাতীতকালের মহাসঙ্কটে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এ ভয়াবহ গ্যাস সঙ্কট নিরসনে জরুরি পদক্ষেপের দাবি জানিয়ে বলা হয়, এতে ব্যবসা-বাণিজ্য ও সামাজিক জীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়বে। গতকাল শনিবার জ্বালাীি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সচিব বরাবর প্রেরিত এক পত্রে মেট্রোপলিটন চেম্বার সভাপতি খলিলুর রহমান চট্টগ্রামে স্মরণাতীতকালের গ্যাস সঙ্কট দূরীকরণের লক্ষ্যে আশু পদক্ষেপ গ্রহণের আহŸান জানিয়েছেন। পত্রে বলা হয়, তৎকালীন বাখরাবাদ গ্যাস সিস্টেম লিমিটেডের গ্যাস উৎপাদন ছিল ১ হাজার ৭৪৪ মিলিয়ন ঘনফুট। বর্তমানে কর্ণফুলী গ্যাস সিস্টেম লিমিটেডের সময় ১ হাজার মিলিয়ন ঘনফুট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৭৪০ মিলিয়ন ঘনফুট। এ গ্যাস দিয়ে বর্তমানে বহুজাতিক সার কারখানা কাফকো, রাউজান তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র ইউনিট ১ সহ শিল্প আবাসিক গ্রাহক, সিএনজি স্টেশনসমূহ, বাণিজ্যিক গ্রাহকের জোগান দিচ্ছে। অথচ ১৯ জানুয়ারি ২০১৬ গ্যাস সরবরাহ ছিল ২১০ থেকে ২২৯ মিলিয়ন ঘনফুট মাত্র। যার ফলে বন্ধ হয়েছে শিল্প কারখানা, বিপর্যস্ত হয়ে যাচ্ছে সিএনজিসহ পরিবহন খাত।
উন্নয়ন সংগ্রাম কমিটি
বৃহত্তর চট্টগ্রাম উন্নয়ন সংগ্রাম কমিটির চেয়ারম্যান স্থপতি তসলিম উদ্দীন চৌধুরী ও মহাসচিব এইচ এম মুজিবুল হক শুক্কুর চট্টগ্রামে গ্যাসের তীব্র সঙ্কটে জনজীবনে সৃষ্ট দুর্ভোগ ও ভোগান্তিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে গতকাল শনিবার এক যুক্ত বিবৃতিতে বলেছেন, চট্টগ্রামে দৈনিক ৪০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের চাহিদা থাকলেও কখনও ২৭০ মিলিয়ন ঘনফুটের অধিক গ্যাস সরবরাহ করার কোন রেকর্ড নেই বললেই চলে। তার উপর বর্তমানে সরবরাহ করা হচ্ছে মাত্র ২৩০ মিলিয়ন ঘনফুট। সর্বদা গ্যাস সঙ্কটের কারণে চট্টগ্রামের শিল্প কারখানাগুলো প্রায় বন্ধ হতে চলেছে এবং ব্যবসা বাণিজ্য মুখ থুবড়ে পড়েছে। চট্টগ্রামে প্রায় ৫ লাখ আবাসিক গ্রাহকদের মধ্যে অন্তত ২ লক্ষাধিক গ্রাহকদের ঘরে চুলা জ্বলেনি। নেতৃদ্বয় বলেন, দেশে বর্তমানে ১০০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদন বৃদ্ধি হলেও বিতরণের ক্ষেত্রে চট্টগ্রামের সাথে বিমতাসুলভ আচরণ করা হচ্ছে। তারা অনতিবিলম্বে জাতীয় গ্রিড হতে চট্টগ্রামে সুষম গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করে চট্টগ্রামে গ্যাস সঙ্কট নিরসনে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের জোর দাবি জানান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।