পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নূরুল ইসলাম : বহু প্রতীক্ষিত দোহাজারী-গুনদুম রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। এটি বাস্তবায়ন হলে ২০২০ সালে সারা দেশের সঙ্গে পর্যটন শহর কক্সবাজার রেল নেটওয়ার্কের মধ্যে চলে আসবে। রেলওয়ে সূত্র জানায়, উদ্বোধনের দিন থেকেই ঢাকা-কক্সবাজার রেলপথে বিলাসবহুল পর্যটন ট্রেন পরিচালনার পরিকল্পনা নিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। এজন্য ১২ সেট অত্যাধুনিক ট্যুরিস্ট কার আমদানির একটি প্রকল্পও হাতে নিয়েছে সংস্থাটি। রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘ সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারের সঙ্গে রাজধানী ঢাকার দূরত্ব আরো কমিয়ে আনতে ঢাকা-কক্সবাজার রেলপথে বিরতিহীন ট্রেন পরিচালনার পরিকল্পনা নিয়েছে রেলওয়ে। এর মধ্যে ঢাকা-কক্সবাজার-ঢাকা রেলপথে সাধারণ ট্রেনের পাশাপাশি প্রতিদিন ঢাকা থেকে সরাসরি (ন্যুনতম কয়েকটি বিরতিযুক্ত) কয়েকটি সম্পূর্ণ এসি ট্রেন যাতায়াত করবে। এসব ট্রেনে পর্যটক হিসেবে চলাচলরত যাত্রীদের সুবিধার্থে ট্যুরিস্ট কার সংযোজন করা হবে। এসব ট্যুরিস্ট কারে সুপরিসর বার্থ সার্ভিস ছাড়াও রেলের নিজস্ব ক্যাটারিং সার্ভিস, সার্বক্ষণিক গার্ড, ওয়েটার সুবিধা ও যাত্রাপথে প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখার ব্যবস্থা থাকবে। এ বিষয়ে রেলের পূর্বাঞ্চলের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, ট্যুরিস্ট কার প্রকল্পের বিষয়ে কয়েক দফা বৈঠকের পর পরিবহন বিভাগের কাছে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে। রেলের পরিবহন বিভাগও এ বিষয়ে ইতিবাচক মতামত দিয়েছে। এ নিয়ে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের পর একটি প্রকল্প উন্নয়ন প্রস্তাবনা (ডিপিপি) তৈরি করা হবে। ২০২০ সালের মধ্যে ঢাকা-কক্সবাজার রেলপথে ট্রেন পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় কোচ আমদানির পাশাপাশি ট্যুরিস্ট কারও আমদানি করা সম্ভব হবে।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, চট্টগ্রামের দোহাজারী হতে রামু হয়ে কক্সবাজার এবং রামু হতে মিয়ানমারের কাছে গুনদুম পর্যন্ত ডুয়েল গেজ রেললাইন নির্মাণ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে গত মাসে। ১৮ হাজার ৩৪ কোটি টাকার প্রকল্পটি দুটি ভাগে ভাগ করে সম্পাদন করা হবে। প্রথম ভাগ দোহাজারী থেকে চকরিয়া পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণ করবে যৌথভাবে চায়নার সিআরইসি ও বাংলাদেশের তমা কনস্ট্রাকশন কোম্পানী। প্রথম ভাগের চুক্তিমূল্য ২৬৮৭ কোটি ৯৯ লাখ ৩৪ হাজার টাকা। দ্বিতীয় ভাগে চকরিয়া থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণ করবে যৌথভাবে চায়নার সিসিইসিসি ও বাংলাদেশের ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিঃ। এই অংশের চুক্তি মুল্য ৩৫০২ কোটি ৫ লাখ ২ হাজার টাকা। এই প্রকল্পের মাধ্যমে ১০২ কি.মি. নতুন ডুয়েল গেজ রেললাইন নির্মাণ করা হবে। এতে ১৮৪ টি ছোট বড় রেলসেতু, ৯ টি স্টেশন বিল্ডিং, প্লাটফরম ও সেড নির্মান করা হবে। এছাড়াও সমুদ্রের ঝিনুকের আদলে কক্সবাজারে একটি আইকনিক স্টেশন বিল্ডিং বানানো হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ে করিডরের সঙ্গে যুক্ত হবে বাংলাদেশ। একই সাথে রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নের মাধ্যমে পর্যটন নগরী কক্সবাজারের পর্যটন সুবিধা বৃদ্ধি পাবে।
রেলওয়ে প্রকৌশল দপ্তরের তথ্যমতে, দুই মাস আগে গেল বছরের ডিসেম্বরে ঢাকা-কক্সবাজার রেলপথে ট্যুরিস্ট কারসংবলিত ট্রেন পরিচালনা নিয়ে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথে ট্রেন চলাচল শুরুর দিন থেকে বিলাসবহুল ট্রেন পরিচালনার সিদ্ধান্ত হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে পূর্বাঞ্চলের যন্ত্র প্রকৌশল দপ্তর পরিবহন বিভাগের কাছে ট্যুরিস্ট কার আমদানির বিষয়ে মতামত চায়। গেল বছরের ১১ জানুয়ারি রেলের পরিবহন বিভাগ যন্ত্র প্রকৌশল দপ্তরকে প্রাথমিকভাবে মোট ১২টি ট্যুরিস্ট কার ক্রয়ের জন্য অনুরোধ জানিয়ে একটি চিঠি দেয়। চিঠিতে ঢাকা-কক্সবাজার-ঢাকা রেলপথে শতভাগ এসি ট্রেনে ট্যুরিস্ট কার সংযোজনের বিষয়ে পরিবহন বিভাগের অনাপত্তি জানিয়ে দেয়া হয়। ওই চিঠিতে ঢাকা থেকে সরাসরি (পথিমধ্যে কয়েকটি বিরতিযুক্ত ট্রেন) কক্সবাজারে ট্রেন পরিচালনায় ট্যুরিস্ট কার সংযোজন রেলের পাশাপাশি দেশের পর্যটন শিল্পকে এগিয়ে নেবে বলেও উল্লেখ করা হয়।
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, পূর্বাঞ্চলে সবচেয়ে জনপ্রিয় ট্রেন সুবর্ণ ও সোনার বাংলা এক্সপ্রেস। ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথে বিরতিহীন এ দুটি ট্রেনের প্রায় শতভাগ আসনের টিকিট বিক্রি হয়ে যায়। মাত্র ৫ ঘণ্টা ১০ মিনিটে ঢাকা-চট্টগ্রাম-ঢাকা রেলপথে যাত্রী পরিবহনের কারণে ট্রেন দুটির জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়ছে। ঢাকা-কক্সবাজার-ঢাকা রেলপথ চালু হলে এর চেয়েও উন্নতমানের বিলাসবহুল আন্ত:নগর ট্রেন পরিচালনার পরিকল্পনা করেছে রেলওয়ে। রেলওয়ের মহাপরিচালক মোঃ আমজাদ হোসেন বলেন, রেলওয়ের অগ্রাধিকার প্রকল্প দোহাজারী-গুনদুম রেললাইন নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শেষ হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের আগেই কক্সবাজারের সঙ্গে কাঙ্খিত ট্রেন সার্ভিস পরিচালনার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। সাধারণ ট্রেন সার্ভিসের পাশাপাশি বিশেষায়িত পর্যটন কার যুক্ত করতে একটি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। ঢাকা থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত এসি কোচসংবলিত ট্রেন পরিচালনার চিন্তাভাবনা চলছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।