Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

তরুণরা ঝুকছে অনুবাদে

| প্রকাশের সময় : ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

এহসান আব্দুল্লাহ : বাংলা সাহিত্যে অনুবাদের প্রভাব রয়েছে সেই প্রাচীন যুগ থেকেই। প্রাচীন আর্য, মৌর্য, গুপ্ত, পাল ও অন্যান্য স¤্রাজ্যের সময় থেকেই বাংলা সাহিত্যে অনুবাদের প্রচলন হতে থাকে। মধ্যযুগে মুসলিম শাসনামলে বাংলায় অনুবাদ সাহিত্য তার সমৃদ্ধির শিখরে উপনিত হয়। শাহ মুহাম্মদ সগীর, জৈনুদ্দিন, চাঁদ কাজি, শেখ কবিররা মধ্যযুগে বাংলা সাহিত্যকে আরো সমৃদ্ধ করে তোলেন তাদের নানা অনুবাদ সাহিত্যের মধ্য দিয়ে। এতে করে প্রতিনিয়তই বাংলা সাহিত্য হয়ে উঠে আরো সমৃদ্ধশালী ও শক্তিমান।
মধ্যযুগে সুলতানি আমল ও মোঘল আমলে আরবি, ল্যাটিন ও ফার্সী ভাষা থেকে প্রচুর গ্রন্থ বাংলায় অনুবাদ করা হয় রাজকীয় পৃষ্ঠপোষকতায়। এর মাঝে যেমন ছিল উপন্যাস, উপাখ্যান তেমনি ছিল ভাষা সাহিত্য ও বিজ্ঞানের গ্রন্থও।
বাংলা অনুবাদ সাহিত্যের কদর এতটুকুও কমেনি এই আধুনিক যুগে এসেও। তেমনটাই দেখা যায় বাংলার বৃহত্তম গ্রন্থমেলা অমর একুশে গ্রন্থমেলার প্রাঙ্গন ঘুড়ে। বইমেলায় অনুবাদ সাহিত্যের কদর অন্যান্য সাহিত্যের তুলনায় প্রতিবারই বেশি থাকে বলে জানান বিভিন্ন প্রকাশনীর বিক্রয়কর্মীরা। মেলায় অন্যান্য বইয়ের তুলনায় অনুবাদের বই কাটতিও যায় বেশি। সেক্ষেত্রে সেরা অনুবাদকের বইগুলোই পাঠকরা বেশি কিনে থাকেন। এর বাহিরে থ্রিলার, মিস্ট্রি, ভ্রমণ ও সাহিত্য বিষয়ক অনুবাদের বইগুলোর কাটতি বেশি হয়ে থাকে বলে জানান বিক্রেতারা। স্টলগুলো ঘুড়েও তেমনটাই দেখা মেলে।
ঐতিহ্য প্রকাশনীর ব্যবস্থাপক আমজাদ হোসেন কাজল বলেন, আমাদের স্টলে অনুবাদ সাহিত্যই বেশি চলে। গ্রাহকরা এসে প্রথমে এগুলোর দিকেই ঝুকে থাকে বেশি। তাই প্রতিবছরই আমরা অনুবাদ বইয়ের দিকে বিশেষ নজর দিয়ে থাকি।
সংবেদ প্রকাশনীর বিক্রয়কর্মী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, অনুবাদের বইগুলো বেশিরভাগই তরুণরা নিয়ে থাকেন।
বিশ^সাহিত্য কেন্দ্রের বিক্রয়কর্মী তাহির মো. আসিফ বলেন, অনুবাদ সাহিত্যগুলোই মূলত বেশি কাটতি যাচ্ছে বইমেলায়।
অন্বেষা প্রকাশনীর বিক্রয়কর্মী উৎপল বিশ^াস বলেন, অনুবাদের বইগুলোর আলাদা গ্রাহকই আছেন যারা এসেই খুজতে থাকেন অনুবাদ করা কি বই আছে। এদের মধ্যে অধিকাংশই তরুণ আর মাঝবয়সী।
তরুণদের মাঝে অনুবাদ সাহিত্যের প্রতি এতটা ঝোক কেন? তা খুজতে গিয়ে জানা যায় মূলত দেশীয় গন্ডির বাহিরে গিয়ে ভীনদেশি সমাজ, সংস্কৃতি ও চিন্তার প্রতি জানার আগ্রহ থেকেই অনুবাদ সাহিত্যের দিকে ঝুকছেন তরুণরা। অনুবাদ সাহিত্যের মধ্য দিয়ে দেশীয় সাহিত্যের সাথে অন্যান্য সাহিত্যের একটি তুলনামূলক পাঠ আবিষ্কার করার ধারা ও দেশীয় সাহিত্যকে ভীনদেশি গন্ডিতে আরো পরিচিত করার সুযোগ পাওয়া যায়। এছাড়াও অনুবাদ সাহিত্য নিজেদের জানার পরিধিকে আরো সমৃদ্ধ করে তোলার পাশাপাশি নতুন চিন্তাধারার সাথে পরিচিত করেও তোলে।
ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম বলেন, অনুবাদ সাহিত্য মূলত আমাদের জানার পরিধিকে আরো বিস্তৃত করে। অনুবাদ সাহিত্য পড়লে আমরা বিভিন্ন সংস্কৃতি ও মূল্যবোধ সম্বন্ধে নতুন কিছু জানতে পারি। অনুবাদ সাহিত্যের মধ্য দিয়ে আমরা আমাদের সাহিত্যকে অন্যান্য সাহিত্যের সাথে একটি তুলনা করার পাঠ নিতে পারি। ফলে আমরা আমাদের সাহিত্য ও সংস্কৃতিকে আরো সমৃদ্ধ করা সুযোগ পাই।
ইডেন কলেজের শিক্ষার্থী তাহমিনা মুন্নি বলেন, অনুবাদ সাহিত্য পড়লে নিজেকে অন্য জগতের সাথে এক সেতুবন্ধন তৈরী করছি বলে মনে হয়। অনুবাদ সাহিত্যগুলো আমাদের নিজেদের বাহিরে গিয়ে নতুন কিছু জানার সুযোগ করে দেয়।
পাঠক চাহিদার কারনে মেলায় প্রতিবছরই উল্লেখযোগ্য সংখ্যক অনুবাদ সাহিত্য প্রকাশিত হয়ে থাকে।
অনুবাদ বইয়ের খোজ নিয়ে পাওয়া যায় ঐতিহ্য প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত জাভেদ হুসেনের মীর তকি মীর, সৈয়দ আবিদ রিজভির আকবর দ্য গ্রেট, তাসনীম আলমের শাজারাতুদ দুর ও মোহাম্মদ জালালউদ্দিন বিশ^াসের মোঘল স¤্রাজ্যের সেনা ব্যবস্থা।
বিশ^সাহিত্য কেন্দ্র থেকে প্রকাশিত গ্রেজিয়া দোলেদ্দার মা, জেফ্রি চসারের ক্যান্টনবেরি উপাখ্যান ও ফ্রেডরিক নিটশের আমি জড়থুস্ত্র বলছি।
অন্বেষা প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত ডোরেডো।



 

Show all comments
  • srimongol.com ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ৫:২৪ এএম says : 0
    valo
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: তরুণ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ