Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দেশ গঠনে সশস্ত্রবাহিনী ভ‚মিকা রাখছে -মিরপুর সেনানিবাসে প্রধানমন্ত্রী

| প্রকাশের সময় : ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

বিশেষ সংবাদদাতা : আধুনিক প্রশিক্ষণ ও সরঞ্জামাদির সমন্বয়ে বর্তমানে বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনী অনেক বেশি উন্নত, দক্ষ ও চৌকস বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল বুধবার মিরপুর সেনানিবাসে ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজের (ডিএসসিএসসি) ২০১৭-২০১৮ কোর্সের গ্রাজুয়েশন সেরিমনিতে প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ডের পাশাপাশি দেশ গঠনেও সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যগণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দূরদৃষ্টিসম্পন্ন প্রতিরক্ষা নীতির অনুসরণে আমরা ফোর্সেস গোল-২০৩০ প্রণয়ন করি। বিগত ৯ বছরে আমরা সশস্ত্র বাহিনীর অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি সক্ষমতা বহুলাংশে বৃদ্ধি করেছি। আধুনিক প্রশিক্ষণ ও সরঞ্জামাদির সমন্বয়ে আজকের সশস্ত্র বাহিনী অনেক বেশি উন্নত, দক্ষ এবং চৌকস। যুদ্ধ নয়, শান্তি চাই উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের দেশ প্রেমিক সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা প্রিয় মাতৃভূমির স্বাধীনতা রক্ষার সুমহান দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি প্রাকৃতিক দুর্যোগ-দুর্বিপাক মোকাবিলায়ও প্রশংসনীয় অবদান রাখছেন। দেশের উন্নয়ন কার্যক্রম, অবকাঠামো নির্মাণ, জঙ্গি-সন্ত্রাসবাদ নির্মূল ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার ক্ষেত্রেও আমাদের সশস্ত্র বাহিনী বেসামরিক প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় সহায়তা দিয়ে আসছে। বহির্বিশ্বেও বিভিন্ন শান্তি মিশনে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের সততা, নিষ্ঠা ও দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালনের কথা উল্লেখ করেন তিনি। তাদের সাফল্যে সারা বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। তিন বাহিনীর জন্য বিভিন্ন প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম কেনা ও জনবল বাড়ানোর কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু অ্যারোনটিক্যাল সেন্টারের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। পূর্ণাঙ্গ ঘাঁটি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে বঙ্গবন্ধু ও কক্সবাজার বিমানঘাঁটি। এছাড়া সেনাবাহিনীর আধুনিকায়নের অংশ হিসেবে নতুন নতুন ডিভিশন, ব্রিগেড, ইউনিট ও ব্যাটালিয়ন প্রতিষ্ঠাসহ বিভিন্ন একাডেমি প্রতিষ্ঠার কথাও উল্লেখ করেন তিনি। শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের নৌবাহিনীর সাবমেরিন ছিল না। স¤প্রতি অত্যাধুনিক সাবমেরিন যুদ্ধ জাহাজ নৌ বাহিনীতে যুক্ত হয়ে আমাদের সক্ষমতা বহুগুণ বাড়িয়েছে। আক্ষরিকভাবেই বাংলাদেশ নৌবাহিনী এখন ত্রিমাত্রিক বাহিনী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। অনুষ্ঠানে ২৬৬ জন গ্রজিুয়েটকে সনদ দেন প্রধানমন্ত্রী। এর মধ্যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১৩৬ জন, নৌবাহিনীর ৪০ জন এবং বিমানবাহিনীর ২২ রয়েছে। সনদপ্রাপ্ত বাকি ৬৮ জন বিদেশি। এসব দেশের মধ্যে রয়েছে- যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ভারত, ব্রাজিল, ইন্দোনেশিয়া, জর্ডান, সৌদি আরব, কুয়েত, লাইবেরিয়া, মালয়েশিয়া, মালদ্বীপ, মালি, নেপাল, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান, ফিলিপিন্স, সিয়েরা লিওন, শ্রীলঙ্কা, সুদান, তানজানিয়া, উগান্ডা প্রভৃতি। এ বছর ৭ জন মহিলা অফিসার গ্রাজুয়েট হওয়ায় নিজের আনন্দ প্রকাশ করে শেখ হাসিনা বলেন, প্রতি বছর উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মহিলা অফিসারের কোর্সে অংশগ্রহণ অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক। এটি সশস্ত্র বাহিনী তথা বাংলাদেশে নারীর ক্ষমতায়নে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখছে। উক্ত অনুষ্ঠানে সংসদে বিরোধী দলীয় নেত্রী, আমন্ত্রিত মন্ত্রীবর্গ,বন্ধুপ্রতীম রাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতবৃন্দ, সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক, নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল নিজামউদ্দিন আহমেদ, ভারপ্রাপ্ত বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার ভাইস মার্শাল মাসিহুজ্জামান সেরেনিয়াবাত, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের পিএসও, প্রধানমন্ত্রীর তথ্য সচিব, তিন বাহিনীর পিএসওগণ; জাহাঙ্গীরনগর, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস ও মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিগণ; কোর্সে অংশগ্রহণকারী বন্ধুপ্রতীম রাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা উপদেষ্টাগণ, উচ্চপদস্থ সামরিক ও অসামরিক কর্মকর্তাগণ এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করার ষড়যন্ত্র করেছিলো বিএনপি-জামায়াত
একুশে আগস্ট ভয়াল গ্রেনেড হামলাকে ’পৃথিবীর ইতিহাসে নজিরবিহীন ভয়াবহ নিষ্ঠুর হামলা’ হিসাবে উল্লেখ করে সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘সেই সময়ের ক্ষমতাসীন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় বিরোধী দল নিশ্চিহ্ন করার ষড়যন্ত্র করেছিলো। গ্রেনেড হামলার পর তারা যখন জানতে পারে আমি বেঁচে আছি, তখন সেই রাতেই হামলাকারী তাজউদ্দিনসহ আরো কয়েকজনকে দেশ থেকে বিদেশ যাওয়ার সুযোগ করে দেয়া হয়। ভয়াবহ এই হামলা মামলাটি মোট ২২৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।’
জাতীয় সংসদ অধিবেশনে গতকাল বুধবার প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি একথা বলেন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এ সংক্রান্ত লিখিত প্রশ্নটি উত্থোপন করেন সংরক্ষিত নারী আসনের সদস্য ও গ্রেনেড হামলায় ক্ষতবিক্ষত হয়ে বেঁচে থাকা বেগম নাসিমা ফেরদৌসী। জবাবে প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, সেই সময়ের ক্ষমতাসীন দল রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় বিরোধী দল চিশ্চিহ্ন করার ষড়যন্ত্র করেছিলো। এই হামলায় মহিলা লীগ নেত্রী আইভী রহমানসহ ২৪ জন নেতা-কর্মীকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। আহত শত শত দলীয় নেতা-কর্মী দু:সহ সেই স্মৃতি আজো শরীরে বয়ে বেড়াচ্ছে।
পরবর্তীতে জানা যায়, জজ মিয়াকে এই নাটকে অংশ নেয়ার জন্য তাকে বেশ কিছুদিন মাসিক ভাতাও দেয়া হয়। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ৬১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করে যেনতেন ভাবে তদন্ত সম্পন্ন করে।’ তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৯ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পর সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত শেষে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত সকল আসামীদের অন্তভর্‚ক্ত করে চার্জশীট প্রদান করে। ২০১৪ সাল থেকে আরো ১৬৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। এভাবে মোট ২২৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করে মামলাটি চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রধানমন্ত্রী

৩১ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ