Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মডিফাইড ট্রাকিওস্টোমি টিউব-মডেল উদ্ভাবন করলো সিওমেক শিক্ষার্থী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ৮:৫৪ পিএম

শ্বাসনালীর চিকিৎসার অন্যতম একটি মাধ্যম ট্রাকিওস্টোমি টিউব। অস্ত্রোপচার করে শ্বাসনালীতে (ট্রাকিয়া) স্থাপন করা হয় এ টিউব। ল্যারিঞ্জিয়াল ও হাইপোফ্যারিঞ্জিয়াল কারসিনোমা (ক্যান্সার), এপিগ্লটিস প্রদাহ, দুর্ঘটনাজনিত কারণে শ্বাসনালী কেটে যাওয়া, মেজর হেড-নেক সার্জারি সার্জারি সহ বিভিন্ন কিছু ঘটনায় 'ট্রাকিওস্টোমি' নামক অস্ত্রোপচার করা হয়ে থাকে। এতে শ্বাসনালীতে অস্ত্রোপচার করে ট্রাকিওস্টোমি টিউব স্থাপন করা হয়ে থাকে। তখন নাক-মুখের বদলে গলায় থাকা ওই ট্রাকিওস্টোমি টিউবের মুক্ত প্রান্তের মধ্য দিয়ে শ্বাসপ্রশ্বাস কার্য সম্পাদিত হয়।

এ ক্ষেত্রে রোগীকে কিছু প্রতিবন্ধকতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। যেমন- মশারি ছাড়া ঘুমানো যাবেনা। কারণ মশারি ছাড়া ঘুমালে মশা প্রবেশ করতে পারে টিউবের খোলা প্রান্ত দিয়ে। মেঝেতে ঘুমানো যাবেনা, এতে করে তেলাপোকা বা ছোটখাটো অন্য কোনো পোকামাকড়ের অনুপ্রবেশ ঘটতে পারে ওই খোলা প্রান্ত দিয়ে। পুকুরে ডুব দিয়ে গোসল করতে পারবেনা। কারণ এতে করে পানির অনুপ্রবেশ ঘটতে পারে। এক্ষেত্রে ফুসফুসে পানি ঢুকে মৃত্যুর সম্ভাবনা থাকে।

মাথায় পানি ঢেলে সোজা দাঁড়িয়ে গোসল করতে পারবেনা। এতে করে পানি প্রবেশ করতে পারে ওই খোলা মুখ দিয়ে। এক্ষেত্রে ফুসফুসে পানি ঢুকে মৃত্যুর সম্ভাবনা থাকে।

নৌকায় চড়া সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ থাকে এসব রোগীদের ক্ষেত্রে। নৌকা উলটে গেলে এক্ষেত্রে ফুসফুসে পানি ঢুকে মৃত্যুর সম্ভাবনা থাকে।

এসব বিষয়ের প্রতি লক্ষ্য রেখে কিভাবে ট্রাকিওস্টোমি টিউবকে সম্পূর্ণরূপে রোগীবান্ধব করা যায় তা নিয়ে চিন্তা করতে করতে একটি 'মডিফাইড ট্রাকিওস্টোমি টিউবের' মডেল বানিয়ে ফেললেন সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজের পঞ্চম বর্ষের শিক্ষার্থী মোঃ মুনিফ শাহরিয়ার।

এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, আমাদের শ্রদ্ধেয় শিক্ষক, নাক কান গলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডাঃ নূরুল হুদা নাঈম স্যার ক্লাসে যখন ট্রাকিওস্টোমি টিউব ব্যাবহার করা রোগীদের চলা ফেরা ও সীমাবদ্ধতা নিয়ে আলোচনা করলেন তখন হোস্টেলে ফিরে চিন্তা করতে করতে একটা মডেল দাঁড় করাই কাগজ দিয়ে। পরে সেটি নাক কান গলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডাঃ নন্দ কিশোর সিনহা স্যারের কাছে নিয়ে যাই। স্যার মডেলটি দেখে অনেক খুশি হলেন এবং ওয়ার্ডে উপস্থিত নাক কান গলা বিভাগের সকল স্যারদের ডেকে দেখালেন। পরবর্তীতে সহকারী অধ্যাপক ডাঃ নূরুল হুদা নাঈম স্যার কিছু গঠন পুনর্বিন্যাসের পরামর্শ দেন এবং তাঁর পরবর্তী লেকচারে উপস্থাপনের জন্য মডেলটি নিয়ে একটি 'প্রেজেন্টেশন' তৈরি করতে বলেন। অবশেষে আজ (১৪ ডিসেম্বর) স্যারের লেকচার শেষ হবার আগে স্যার আমায় সুযোগ করে দেন সকল সহপাঠীর সামনে মডেলটি সম্পর্কে বিস্তারিত উপস্থাপনের জন্য।

মুনিফ শাহরিয়ার বলেন, যন্ত্রটির সীমাবদ্ধতা নিয়ে এখনও চিন্তা ভাবনা চলছে। সীমাবদ্ধতা পেলে সেটি সংশোধন করে শতভাগ সুবিধানুযায়ী ব্যবহারোপযোগী করার ব্যাপারে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা করবো। এক্ষেত্রে আমার শ্রদ্ধেয় শিক্ষক অধ্যাপক ডাঃ নন্দ কিশোর সিনহা স্যার ও সহকারী অধ্যাপক ডাঃ নূরুল হুদা নাঈম স্যারের সকল পরামর্শ এতে অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা করবো। পরিশেষে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাতে চাই উপর্যুক্ত আমার প্রাণপ্রিয় দুই শিক্ষক এবং আমার সকল সহপাঠীদের। যারা পাশে থেকে উৎসাহ ও সাহস যুগিয়েছে।

বিশেষ ধন্যবাদ বন্ধু ইমাম হোসাইন মামুনকে, ইলাস্ট্রেশনের বিভিন্ন কাজে আমায় সহায়তা করার জন্য। আশা করি বাকি থাকা কাজেও তার সহায়তা অব্যাহত থাকবে। সকলের নিকট দোয়াপ্রার্থী।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: উদ্ভাবন

১৮ অক্টোবর, ২০২১

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ