পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিশেষ সংবাদদাতা : গুরুত্বপূর্ণ দুটি নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৮ ফেব্রæয়ারী বরিশাল আসছেন। দীর্ঘ প্রায় ছয় বছর পরে আগামী বৃহস্পতিবার বরিশাল সফরকালে প্রধানমন্ত্রী বরিশালের বাকেরগঞ্জে ‘শেখ হাসিনা সেনানিবাস’র ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন ছাড়াও বরিশাল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, শহিদ আরজু মনি সরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও শহিদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত সরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের উদ্বোধনসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে ৫টি কলেজ ভবনের উদ্বোধন ও ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন এবং সড়ক অধিদফ্তর ও এলজিইডি’র বিভিন্ন প্রকল্পের উদ্বোধন ছাড়াও ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করবেন বলে জানা গেছে। প্রধানমন্ত্রী ওইদিন বিকেলে বরিশালের বঙ্গবন্ধু উদ্যান-বেলস পার্কে এক জনসভায়ও ভাষন দেবেন। জনসভা থেকে প্রধানমন্ত্রী ভোলার গ্যাস বরিশাল হয়ে জাতীয় গ্রীডে সংযোগের ঘোষনাসহ আরো কিছু উন্নয়ন কর্মসূচীর কথা জানাতে পারেন বলে আশা করছেন দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ। প্রধানমন্ত্রীর সফর উপলক্ষে ইতোমধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্নের পথে। বরিশাল মহানগরীতে সাজসজ্জাও শুরু হয়েছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থাও জোরদার করা হচ্ছে।
২০১৮ সাল বরিশালের জন্য যথেষ্ঠ গুরুত্বপূর্ণ বছর হিসেবে বিবেচিত। চলতি বছরের প্রথমভাগেই বরিশালসহ দেশের ৪ সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। পাশাপাশি বছরের শেষভাগে জাতীয় নির্বাচনের জন্যও দক্ষিনাঞ্চলবাসী অপেক্ষায় রয়েছে। তবে জাতীয় নির্বাচন কিভাবে হবে, আর কি পদ্ধতিতে হচ্ছে, তা নিয়ে এখনো বিস্তর আলাপ আলোচনাসহ রাজনৈতিক তৎপরতা অপেক্ষা করলেও সিটি নির্বাচন নিয়েই আপাতত বরিশাল মহানগরীর রাজনৈতিক অঙ্গন কিছুটা সরব রয়েছে। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী ৮ ফেব্রæয়ারী বরিশাল সফরের দিনই সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধী দলীয় নেত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে একটি বহুল আলোচিত মামলার রায় ঘোষনার কথা রয়েছে। সে রায় ঘোষনা নিয়েও ইতোমধ্যে রাজনৈতিক অঙ্গনে যেমনি নানামুখি আলোচনা চলছে, তেমনি আইনÑশৃংখলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনেও সারা দেশের মত বরিশালেও সরকারের সবগুলো এজেন্সী ইতোমধ্যে মাঠে নেমেছে। তাই খালেদা জিয়ার মামলার রায় ঘোষনার দিনই প্রধানমন্ত্রীর বরিশাল সফর আলাদা গুরুত্ব পাচ্ছে।
তবে এসব কিছুর বাইরে সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রীর বরিশাল সফর বিশেষ বিবেচনায় নিচ্ছেন। ২০১৩-এর ১৫ জুন বরিশাল সিটি করপোরেশনের তৃতীয় নির্বাচনে মহাজোট প্রার্থী শওকত হোসেন হিরন প্রায় ১৮ হাজার ভোটের ব্যবধানে বিএনপি প্রার্থী আহসান হাবীব কামালের কাছে পরাজয়ের পরে আসন্ন নির্বাচনকে যথেষ্ঠ গুরুত্বের সাথে নিচ্ছে আওয়ামী লীগ। তবে এ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও প্রধান বিরোধী জোটের কারোরই প্রার্থী এখনো চুড়ান্ত নয়। দুটি শিবিরেই একাধিক প্রার্থী তৎপড় থাকলেও দলীয় সিদ্ধান্ত আসবে কেন্দ্রীয় পর্যায় থেকেই। পাশাপাশি জামায়াত এককভাবে এ নির্বাচনে অংশ নিলে আলাদা হিসেব হতে পারে। তবে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী হিসেবে ইতোমধ্যে মাঠে রয়েছেন সাদিক আবদুল্লাহ। প্রকাশ্যে দলীয় নেতা-কর্মীদের তরফ থেকে সমর্থনের পাল্লা এখনো তার পক্ষে ভারি হলেও জেলা সভাপতির ছোট ভাইসহ আরো একাধিক প্রার্থী তৎপর রয়েছেন এ পদে দলীয় মনোনয়ন লাভে। ২০০৮-এর জাতীয় নির্বাচনে বরিশাল সদর আসনে মহাজোট প্রার্থী কর্ণেল (অবঃ) জাহিদ ফারুখ শামিম দলীয় মনোনয়ন লাভে এলাকার চেয়ে কেন্দ্রে তৎপর বেশী ছিলেন। গত প্রায় দশ বছর এলাকার সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মকান্ডে তার দীর্ঘ অনুপস্থিতি পরিস্থিতিকে তার অনুকুলে রাখেনি।
অপরদিকে বিএনপি প্রার্থী হিসেবে বর্তমান মেয়র আহসান হাবীব কামাল পুনরায় দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী হলেও তার পক্ষে দলীয় নেতা-কর্মীদের জোরালো সমর্থন কম বলেই মনে করছেন। কামালের বাইরে কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস জাহান শিরিন, জেলা সভাপতি এবায়দুল হক চান এ পদে দলীয় মনোনয়ন লাভে চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন। তবে দলের নেতা-কর্মীদের একটি বড় অংশই কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও মহানগর সভাপতি মুজিবর রহমান সারোয়ারকে মেয়র পদে দলীয় মনোনয়নের পক্ষে হলেও তিনি নিজে এমপি নির্বাচনে আগ্রহী। সরোয়ার এ পর্যন্ত বরিশাল সদর আসনে ১৯৯১ ও ’৯৮সালের উপ-নির্বাচনে এবং ২০০১ ও ’০৮ সালের মূল নির্বাচনে এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। এ ছাড়াও তিনি ২০০৩ সালে বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হন। এসব কারনে সরোয়ার এমপি পদে নির্বাচন করার কথা বললেও শেষ পর্যন্ত বিএনপি বরিশাল সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে কাকে মনোনয়ন দেয় সে বিষয়টি এখনো পরিষ্কার নয়।
তবে আসন্ন সিটি নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামী এককভাবে নির্বাচন করলে বিএনপিসহ জোটের জন্য কিছুটা বিব্রতকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। মেয়র পদে জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থী মহানগর আমীর মোয়াজ্জেম হোসেন হেলাল ইতোমধ্যে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় জামিন লাভ করে বরিশালে ফিরে এসে আইন পেশায় যুক্ত হয়েছেন। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকের মতে, আওয়ামী লীগের তরফ থেকে বরিশাল সিটি নির্বাচনে মেয়র কামালের মনোনয়ন যেমনি প্রত্যাশা করা হচ্ছে, তেমনি জামায়াত ইসলামী আলাদাভাবে এ নির্বাচনে অংশ নিবে এমন প্রত্যাশাও রয়েছে তাদের। এ অবস্থাতেই সিটি নির্বাচন সামনে রেখে দীর্ঘ ৬ বছর পরে বরিশাল বিভাগীয় সদরে সরকারী ও রাজনৈতিক কর্মসূচীতে অংশ নিতে আসছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স¤প্রতি সিলেটের পরে তার বরিশাল সফর রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল নির্বাচনী বছরে যথেষ্ঠ গুরুত্বের সাথেই দেখছেন। আগামী জুনের মধ্যেই বরিশাল, সিলেট, রাজশাহী ও খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা রয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।