পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিশ^বিদ্যালয় রিপোর্টার : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল বিকেলে বাংলা একাডেমিতে মাসব্যাপি অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৮ এর উদ্বোধন করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ যেন এগিয়ে যায় সে চেষ্টাই আমরা করে থাকি। তাই আমাদের সরকার ক্ষমতায় আসার পর আমরা আমাদের ঐতিহ্যগুলোকে ধরে রাখার চেষ্টা করেছি। এসময় তিনি বলেন, মনে রাখতে হবে বইমেলা শুধু বই বেচাকেনার জন্য নয়। বইমেলা সাহিত্যচর্চার ক্ষেত্রকে প্রসারিত করে সেইসাথে অজানাকে জানার সুযোগ করে দেয়। এজন্য আমরা বইমেলাকে প্রাণের বইমেলা বলে থাকি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, অশুভ পথে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারীরা কখনো সংস্কৃতি ও ভাষা চর্চা করতে জানে না। বাংলাদেশ হবে অসাম্প্রদায়িক ও শান্তিপূর্ণ দেশ। বাংলাদেশে প্রতিটি মানুষ তার ধর্ম স্বাধীনভাবে পালন করবে। বিভিন্ন ভাষাভাষী যেসব মানুষ আছে, তারাও স্বাধীনভাবে তাদের ভাষা চর্চা করতে পারবে। তিনি বলেন, নিজেদের ভাষা, সংস্কৃতি, শিল্প ও সাহিত্যকে যদি আমরা আরো উৎকর্ষ না করতে পারি এবং মর্যাদা না দিতে পারি তাহলে জাতি হিসেবে আমরা আরো উন্নত হতে পারবোনা। প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘বাঙালি জাতি যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছে। তাই আমি চাই প্রতিটি বাঙালি সব সময় মাথা উঁচু করে চলবে, কারও কাছে মাথা নত করবে না। আমরা আমাদের সীমিত সম্পদের মাধ্যমে দেশকে গড়ে তুলবো। ক্ষুদা ও দারিদ্রমুক্ত একটি উন্নত বাংলাদেশ গড়ে তুলবো। একটি শিক্ষিত জাতি ছাড়া দারিদ্রমুক্ত জাতি গড়ে তোলা সম্ভব না। তাই আমরা শুধু বিনে পয়সায় বই দেইনা বরং বই উৎসব করি যেন শিক্ষার্থীরা বই পেয়ে আনন্দিত হয়। ছোটবেলা থেকেই যেন বইয়ের প্রতি আকর্ষন বাড়ে তাই বই উৎসব করা হয়।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতির প্রেক্ষাপট তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৯৬ সালে যখন আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করে তখন আমরা জানতে পারলাম কানাডা প্রবাসী দুজন বাঙ্গালী ও কয়েকটি সংগঠন তাদের পক্ষ থেকে ২১শে ফেব্রুয়ারীকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করার প্রস্তাব তোলে। কিন্তু কোন সংগঠন একক ভাবে প্রস্তাব করলে হয়না তা বরং কোন দেশকে করতে হয়। তখন আমরা সঙ্গে সঙ্গে প্রস্তাবনা পাঠালাম। আপনারা জানেন ইউনেস্কো ২১শে ফেব্রুয়ারীকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করেছে। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা শুধু এইটুকু কাজ করেই ক্ষান্ত হইনি, আমরা একটি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটও প্রতিষ্ঠা করেছি, যার মাধ্যমে সারাবিশ্বের মাতৃভাষাগুলোর চর্চা করা সম্ভব। যে সকল মাতৃভাষাগুলো হারিয়ে গেছে তা নিয়েও যেন চর্চা ও গবেষণা হয় সে সুযোগও আমরা করে দিয়েছি। বাংলা একাডেমি ও বইমেলার প্রশংসা করতে গিয়ে তিনি বলেন, এই বইমেলা অনেক তরুণ লেখককে তার সাহিত্যকর্ম প্রকাশের সুযোগ করে দেয়। সেই সাথে এই মেলা অনেক পাঠকও তৈরি করে। বইমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ২০১৭ এর বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ২০১৭ পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলেন কবিতা-মোহাম্মদ সাদিক ও মারুফুল ইসলাম, কথাসাহিত্য-মামুন হুসাইন, প্রবন্ধ-মাহবুবুল হক, গবেষণা-রফিকউল্লাহ খান, অনুবাদ-আমিনুল ইসলাম ভুইয়া, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক সাহিত্য-কামরুল হাসান ভূঁইয়া ও সুরমা জাহিদ, ভ্রমণকাহিনি-শাকুর মজিদ, নাটক-মলয় ভৌমিক, বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী-মোশতাক আহমেদ, শিশুসাহিত্য-ঝর্ণা দাশ পুরকায়স্থ। অনুষ্ঠানে পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখকদের হাতে এক লাখ টাকার চেক, ক্রেস্ট ও সম্মাননাপত্র তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী। ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।