পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
পিবিআইয়ের তদন্তে চাঞ্চল্যকর তথ্য, আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা
হত্যাকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেয়ার জন্য আপন ভাইকে ফাঁস দিয়ে হত্যার পর লাশ ঝুলিয়ে রাখা হয় ইউক্যালিফটাস গাছে। পরিকল্পিত হত্যাকান্ডে ময়না তদন্তেও ধরা সম্ভব হয়নি হত্যাকান্ড। পুলিশ বুরো ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)-এর তদন্তে বেরিয়ে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। ২০১১ সালের ২৪ ডিসেম্বর বগুড়া জেলার শেরপুর থানাধীন শিমলার সাতবাড়িয়ায় গ্রামে জমি বিরোধ নিয়ে সালিশে বসার কথা বলে হত্যা করা হয় ছবের আলীকে। দীর্ষ তদন্ত শেষে পিবিআই ৫জনকে অভিযুক্ত করে চাঞ্চল্যকর ওই মামলায় চার্জশীট দাখিল করে। বর্তমানে মামলাটি আদালতে বিচারাধীন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই বগুড়া জোনের অতিরিক্ত এসপি আক্তার হোসেন দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকান্ড থানা পুলিশ দু’বার তদন্ত করে ফাইনাল রিপোর্ট দাখিল করে। হত্যাকান্ডটি এমনভাবে সংঘটিত করা হয় যে, এটি আত্মহত্যা নয়, প্রমান করা কঠিন। আমরা তদন্ত করে ৫জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশীট দাখিল করি। বর্তমানে মামলাটি বিচারাধীন রয়েছে। ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। তদন্ত সূত্রে জানা গেছে, ছবের আলী, চান মিয়া ও রহিমা পরস্পর ভাইবোন। ছবের আলী খুন হওয়ার ৮ বছর আগে তার বোন রহিমার কাছ থেকে ২হাজার টাকা দার নেয় এবং বলা হয় টাকা ফেরত দিলে জমি ফেরত দেয়া হবে। রহিমা ওই জমি অধিক মূল্যে অপর আপনভাই চান মিয়ার কাছে বিক্রি করে দেয়। জমি ফেরত চাওয়ায় রহিমার স্বামী ছবির উদ্দিন ও তার ছেলে রবিউল এক পর্যায়ে ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠে। এ নিয়ে ২০১১ সালের ২৪ ডিসেম্বর বগুড়া জেলার শেরপুর থানাধীন শিমলার সাতবাড়িয়ায় গ্রাম সালিশ বসে। সালিশে ছবের আলী গেলেও অন্যরা যায়নি। পরে বিরোধ আরো বেড়ে যায়। এক পর্যায়ে চান মিয়া ও রহিমা আপনভাই ছবের আলীকে হত্যার পরিকল্পনা করে। ২০১২ সালের ১০ জানুয়ারী ছবের আলীকে আপন ভাই চান আলী ও রহিমা জমি নিয়ে নিজেদের মধ্যে কথা বলার জন্য একই গ্রামের রহিমার বাড়িতে ডেকে নিয়ে যায়। ওই দিন দুপুরে রহিমার বাড়িতে খাবার শেষে বলে রাতে আলোচনা হবে। পরে ছবের আলী তার স্ত্রী মর্জিনাকে মোবাইলে জানায় রাতে আলোচনা হবে জমি নিয়ে এবং আগামীকাল চলে আসবো। চান আলী, রহিমার স্বামী ছবির উদ্দিন ও আনছারসহ কয়েকজন এশার আজানের পর রাতের খাবার খায়। খাবারের পর বিড়ি খাওয়ার কথা বলে অন্যান্যরা ছবের আলীকে নিয়ে দেড় ঘন্টা হাটার পর নন্দিগ্রাম থানার গোছন গ্রামের একটি মাঠে যায়। সেখানে গলায় মাফলার পেচিয়ে চবের আলীকে হত্যার পর লাশ ইউক্যালিপটাস গাছের সাথে ঝুলিয়ে রাখে। পরে দিন স্থানীয় লোকজন লাশ অজ্ঞাত পরিচয় হিসেবে উদ্ধার করে এবং পুলিশ প্রাথমিক তদন্তে আত্মহত্যা বলে উল্লেখ করে দাফন করে। লাশ ময়না তদন্ত করা হয় শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসাপতাল বগুড়ায়। চিকিৎসকও জানান, ময়না তদন্তে হত্যার কোন আলামত পাওয়া যায়নি। এটি আত্মহত্যা। অন্যদিকে স্বামী ফিরে না আসায় ১১ জানুয়ারী মর্জিনা তার ননদ রহিমার বাড়ি যায় এবং তার স্বামীর খবর জানতে চায়। কিন্তু তারা জানায় যে, রাতেই চবের আলী চলে গেছে। তারা আর কিছু জানে না। এ ঘটনার পর ১৭ জানুয়ারী মর্জিনা লোকজনের কাছ থেকে জানতে পারে যে, গোছন গ্রামের একটি মাঠে একজন পুরুষের ঝুলন্ত লাশ পাওয়া যায় এবং তা অজ্ঞাত হিসেবে দাফন করা হয়। পরে নন্দিগ্রাম থানায় গিয়ে মর্জিনা তার স্বামীর লাশ শনাক্ত করেন ছবি দেখে। এ ঘটনায় মর্জিনা আদালতে মামলা দায়ের করলে আদালত পুলিশকে তদন্ত করে রিপোর্ট দেয়ার নির্দেশ দেন। কিন্তু পুলিশ একাধিকবার তদন্ত শেষে জানায় যে, নিহত ছবের আলী আত্মহত্যা করেছে। তাকে কেউ হত্যা করেনি। বাদী পক্ষ থেকে বার বার নারাজি দেয়া হলে ২০১৫ সালের ১৭ আগষ্ট আদালতের নির্দেশে মামলাটি তদন্ত শুরু করে পিবিআই। পিবিআইয়ের তদন্ত কর্মকর্তা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আক্তার হোসেন অভিযুক্ত চান আলী, আনছার আলী ও বরিউলকে গ্রেফতার করলে পুরো বিষয়টি বেরিয়ে আসে। গ্রেফতারকৃত আসামীরা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীতে জানায় যে, তারা আগে জানতে পারে যে, জীবিক কোন মানুষকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করা সম্ভব হলে ডাক্তারী পরীক্ষায় আত্মহত্যা বলে প্রমান হয়। এ জন্য আসামীরা সামান্য জমির কারনে। এ পরিকল্পিতভাবে আপন ভাইকে ফাসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।