মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
সন্ত্রাস দমনের নাম করে পাঁচ পরিকল্পনা সামনে রেখে সিরিয়ার কার্যত উপনিবেশ গড়ে তুলতে চাচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এ জন্য কুর্দি মিলিশিয়াদের সামনে রেখে একটি সীমান্তরক্ষী বাহিনী গড়ে তোলার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। কিন্তু তুরস্ক একে ‘আঁতুড়ঘরেই ধ্বংস করে দেয়ার লক্ষ্য নিয়ে’ মাত্র কয়েক দিনের মধ্যে সেনা অভিযান শুরু করে দিয়েছে।
তুরস্কের সেনাবাহিনী এর মধ্যে সিরিয়ার ভেতরে কুর্দি নিয়ন্ত্রিত আফরিনে ঢুকে পড়েছে। এর মধ্য দিয়ে সিরিয়ার যুদ্ধে এখন আরেকটি ফ্রন্ট খুলে গেল।
সিরিয়া নিয়ে মার্কিন পরিকল্পনা
সিরিয়ায় এ মুহূর্তে প্রায় ২ হাজার মার্কিন সেনা আছে। যেটি বোঝা যাচ্ছে তাদের পরিকল্পনাটা হলো- যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়ায় একটি সামরিক উপস্থিতি বজায় রাখবে, যা কবে শেষ হবে এমন কোনো সময়সীমা থাকবে না।
এর অযুহাত হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটকে (আইএস) স্থায়ীভাবে পরাজিত করা, ইরানের প্রভাব মোকাবিলা এবং সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ অবসানে ভূমিকা রাখার কথা বলছে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন বলছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ২০১১ সালে ইরাক থেকে সেনা প্রত্যাহার করে যে ভুল করা হয়েছিল- সেরকম আরেকটি ভুল করতে চান না।
কুর্দি এসডিএফ মিলিশিয়াদের নিয়ে নতুন বাহিনী তৈরি সম্পর্কে রেক্স টিলারসন বলেন, তারা কোনো নতুন বাহিনী তৈরি করছে না। তাদের লক্ষ্য- স্থানীয় যোদ্ধাদের মুক্ত এলাকাগুলোকে আইএসের অবশিষ্ট ক্ষুদ্র দলগুলোর আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে সক্ষম করে তোলা।
গত বুধবার স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে এক ভাষণে টিলারসন বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের দৃঢ় পদক্ষেপের কারণে আইএসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দ্রুত অগ্রগতি হয়েছে। তবে তারা এখনো সম্পূর্ণ পরাজিত হয় নি, এবং মার্কিনবিরোধী বাশার আসাদের সরকার সিরিয়ার অর্ধেক এলাকা এবং জনগণকে নিয়ন্ত্রণ করছে।
তার কথা, শুধু আইএস ও আল-কায়েদাই নয়, ইরানও যুক্তরাষ্ট্রের জন্য কৌশলগত ঝুঁকি সৃষ্টি করছে।
টিলারসন বলেন, সিরিয়ায় ট্রাম্প প্রশাসনের লক্ষ্য পাঁচটি- এক. আইএস ও আল-কায়েদার স্থায়ী পরাজয় যাতে তারা অন্য কোন নাম নিয়ে আবার মাথা তুলতে না পারে।
দুই. জাতিসংঘের নেতৃত্বে বাশার আসাদ-উত্তর একটি স্থিতিশীল একক ও স্বাধীন সিরিয়া গঠন করে সংকটের সমাধান করা।
তিন. সিরিয়ার ওপর ইরানের প্রভাব কমানো এবং সিরিয়ার প্রতিবেশীদের নিরাপদ করা।
চার. ঘরবাড়ি হারানো মানুষেরা যেন তাদের ঘরে ফিরতে পারে, সে পরিবেশ তৈরি কর। পাঁচ. সিরিয়াকে গণবিধ্বংসী অস্ত্র থেকে মুক্ত রাখা।
ট্রাম্প প্রশাসন কূটনৈতিকভাবেই এসব লক্ষ্য অর্জনের কৌশল তৈরি করছে, কিন্তু সিরিয়ায় মার্কিন সামরিক উপস্থিতি অব্যাহত থাকবে। সিরিয়ার ‘মুক্ত’ এলাকাগুলোতে স্থিতিশীলতা আনার জন্য মার্কিন নেতৃত্বাধীন সিরিয়ার ডেমোক্রেটিক ফোর্স কাজ করবে। এই এসডিএফ কুর্দি মিলিশিয়াপ্রধান এবং তুরস্ক একে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী বলে মনে করে।
টিলারসন সিরিয়ায় নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা থেকে বাশার আসাদের চিরবিদায়ের কথাও বলেন। তবে এতে সময় লাগবে, বলেন তিনি।
বিবিসির বিশ্লেষক জোনাথন মার্কাস বলছেন, বাশার আসাদ সরকার রাশিয়া ও ইরানের সমর্থন নিয়ে যুদ্ধে মোটামুটি জয়লাভ করলেও সিরিয়ার সব এলাকার নিয়ন্ত্রণ তার হাতে নেই।
সিরিয়ার উত্তর দিকে একটি স্বায়ত্বশাসিত কুর্দিপ্রধান এলাকা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে মার্কিন সহায়তা নিয়ে। এখন যুক্তরাষ্ট্র তার পরবর্তী পদক্ষেপগুলো কি হবে তার হিসাব করছে। তারা সিরিয়ায় সামরিক উপস্থিতি বজায় রাখতে চায়, আইএনের পুনরুত্থান ঠেকাতে চায় এবং কুর্দি মিত্রদের সহযোগিতা দিতে চায়- এটি এখন স্পষ্ট।
মার্কাস লিখছেন, অন্যদিকে ওয়াশিংটন এটি ভুলে যায়নি যে রাশিয়া-সিরিয়ায় তার যে ঘাঁটিগুলো আছে- তা এখনি ছেড়ে যাচ্ছে না। কিন্তু মার্কিন নীতির মূল লক্ষ্য এখন একটাই- সেটা হলো ইরানকে নিয়ন্ত্রণে আনা।
তবে সিরিয়াকে যদি এভাবে বিভক্ত রাখা হয় তাহলে দেশটির পুনর্গঠন বিলম্বিত হবে এবং ভবিষ্যতে নতুন নতুন সমস্যা তৈরি হতে পারে- এটাও বলা যেতে পারে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।