পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দীর্ঘ ২১ বছর বন্ধ থাকার পর বাংলাদেশ-ভারত যৌথ উদ্যোগে ফের চালু হচ্ছে ফেনী-বিলোনিয়া রেল যোগাযোগ। রেললাইন পুনঃস্থাপনের জন্য জরিপ কাজ শেষ হয়েছে। বহুল প্রতীক্ষিত এ রেল যোগাযোগ চালু হলে ভাগ্য খুলবে পরশুরাম-ফুলগাজীবাসীর। বিলোনিয়া হয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে মালামাল পরিবহন করে নিতে এ রেল চালুর উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ-ভারত সরকার।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ফেনী-বিলোনিয়া রেললাইন পুনঃস্থাপনের জন্য সম্ভাব্য সমীক্ষার কাজ দেয়া হয়েছে ভারতের হায়দরাবাদের আরভে অ্যাসোসিয়েটস আর্কিটেক্টস ইঞ্জিনিয়ারিং কনসালটেন্টস কোম্পানিকে। বাংলাদেশ রেলওয়ের (পূর্বাঞ্চল) প্রধান প্রকৌশলী মো. আরিফুজ্জামান স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে ফেনী জেলা প্রশাসককে পরিত্যক্ত ফেনী-বিলোনিয়া রেললাইনের জন্য দুই লেন পুনঃস্থাপনে প্রাযুক্তিক অর্থনীতির সম্ভাব্য সমীক্ষায় সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতা করতে অনুরোধ জানিয়েছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে জরিপ কার্যক্রম শেষ করেছে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা।
এদিকে অন্য একটি সূত্র জানিয়েছে, ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের বিলোনিয়ায় রেললাইন নির্মাণে সমীক্ষার কাজ শেষ করেছে ভারত। আগরতলা স্টেশন থেকে বিলোনিয়া পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণে ৪০ একর ভ‚মি অধিগ্রহণ করা হয়েছে।
জানা গেছে, ১৯৯৬ সালে লোকসানের অজুুহাতে বন্ধ হয়ে যায় ফেনী-বিলোনিয়া রেল যোগাযোগ। ২১ বছর রেল যোগাযোগ বন্ধ থাকায় ফেনী থেকে বিলোনিয়া পর্যন্ত আটটি রেল স্টেশন ভেঙেচুড়ে ভ‚তুড়ে বাড়িতে পরিণত হয়েছে। লুট হয়ে গেছে এসব স্টেশনের আসবাবপত্র ও দরজা-জানালা। ২৪ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে রেললাইনের অনেক জায়গায় রেলপাত, সিøপার চুরি করে নিয়ে যাওয়ায় রেললাইনের অস্তিত্ব বিলীন হয়ে গেছে। রেললাইনের উভয় পাশে ২০ ফুট করে ৪০ ফুট জায়গা রেলওয়ের মালিকানাধীন রয়েছে। এসব ভ‚মি দীর্ঘদিন ধরে বেদখলে রয়েছে। রেললাইনের আশপাশের শত শত একর জায়গা দখল করেছে প্রভাবশালী ও ভ‚মিদস্যুরা।
দুই লেন স্থাপনের জন্য ২৪ কিলোমিটার রেললাইনের উপর অবৈধ ঘরবাড়ি, দোকানপাটসহ নির্মাণাধীন অবকাঠামো চিহ্নিত করা হয়েছে। জরিপ প্রতিবেদনটি বাংলাদেশ রেলওয়ের (পূর্বাঞ্চল) বিভাগে পাঠানো হবে। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের অনুমোদনের পর প্রশাসনের নির্দেশের মাধ্যমে এসব স্থাপনা উচ্ছেদ শুরু হবে। এরপর ফেনী-বিলোনিয়া রেললাইন নির্মাণ কাজের আনুষ্ঠানিক কাজ শুরু হবে।
বাংলাদেশ রেলওয়ের (পূর্বাঞ্চল) প্রধান প্রকৌশলী মো. আরিফুজ্জামান জানান, ফেনী-বিলোনিয়া রেললাইন পুনঃস্থাপনে সমীক্ষা রিপোর্ট পাওয়ার পর পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।
ভারতের বিলোনিয়া প্রেসক্লাবের শিবরাজ চক্রবর্তী নামের এক সাংবাদিক জানান, আগরতলা সাব্রæম রেললাইন যাচ্ছে ভারতের বিলোনিয়া হয়ে বাংলাদেশের পরশুরাম হয়ে ফেনী পর্যন্ত। যার দূরত্ব ২৫ কিলোমিটার। ফেনী পর্যন্ত ভারতীয় অর্থেই রেললাইন স্থাপন হচ্ছে বলে জানিয়েছে ত্রিপুরার শাসক। ভারত-ফেনী সীমান্তে বিলোনিয়া স্থলবন্দরের পর এবার বিলোনিয়ায় রেল ট্রানজিট করতে যাচ্ছে ভারত। স¤প্রতি ভারত-বাংলাদেশ আন্তঃদেশীয় রেলওয়ে সংযোগ কমিটির বৈঠকে ফেনী বিলোনিয়া রেল রুটটি সংস্কার ও পুনঃস্থাপনের মাধ্যমে ভারত এ সুবিধা দেয়ার প্রস্তাব দিয়েছে বলে জানা গেছে। ভারতের বিলোনিয়ায় কর্মরত এক সাংবাদিক ও ত্রিপুরার গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, আগরতলা, আখাউড়া ও বিলোনিয়া ইতোমধ্যে রেললাইন স্থাপনের জন্য জমি অধিগ্রহণে কাজ শুরু হয়েছে। জানা গেছে, আগরতলা স্টেশন থেকে বাংলাদেশের বিলোনিয়া সীমান্ত পর্যন্ত মোট ৬৭ একর জমি অধিগ্রহণ করা হবে। ত্রিপুরার জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, আগরতলা আখাউড়া স্টেশানের দূরত্ব ১৫ কিলোমিটার। এর মধ্যে পাঁচ কিলোমিটার ত্রিপুরা অংশে এই রেল সংযোগ স্থাপন হলে আশুগঞ্জ পোর্ট ও চট্টগ্রাম বন্দরের সাথে আদান-প্রদান সহজ হবে।
ভারতের ভাষ্যমতে, চট্টগ্রাম বন্দর থেকে রেলপথে ফেনী হয়ে ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলে পৌঁছানো সম্ভব হবে। বিলোনিয়া স্থলবন্দর শ্রমিক কল্যাণ সমিতির সভাপতি মো. ইব্রাহিম জানিয়েছেন, বাংলাদেশের অংশে রেললাইন সংযোগ স্থাপনের জন্য ভারতের কাজ শেষ পর্যায়ে। বাংলাদেশ, মিয়ানমার, ভুটান ও চীন পরিবেষ্টিত ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোর চট্টগ্রাম বন্দর থেকে পণ্য পরিবহন সহজ করার লক্ষে আখাউড়া-আগরতলার বিকল্প হিসেবে এ রেল রুট ব্যবহার করতে চায় ভারত। ফেনী চেম্বার অব কর্মাস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সাবেক সভাপতি আইনুল কবির শামীম বলেন, পরশুরামে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে বিলোনিয়া অংশে বিলোনিয়া স্থলবন্দর রয়েছে। এ বন্দর দিয়ে নিয়মিত বিভিন্ন জিনিসপত্র রফতানিও হচ্ছে। ফেনী-বিলোনিয়া রেলপথটি পুনরায় চালু হলে যাতায়াত ব্যবস্থার সুবিধা বাড়ার পাশাপাশি ভারতের ত্রিপুরার সাথে বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বাড়বে। এতে দুই দেশের ব্যবসায়ীরা লাভবান হবে বলে জানান তিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।