পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পুলিশকে জনবান্ধব হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। তিনি বলেন, আমি আশা করি প্রতিটি পুলিশ সদস্য অসহায় ও বিপন্ন মানুষের প্রতি দায়িত্ব পালন করবেন এবং সাহায্যের হাত বাড়াবেন। জাতির পিতা আপনাদের বলেছেন, আপনারা স্বাধীন দেশের পুলিশ। জনগণের প্রতি আপনাদের কর্তব্য অপরিসীম। তাই আপনাদের নিজেদেরকে জনবান্ধব হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। তিনি আরো বলেন, স্থিতিশীল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়নের পূর্বশর্ত। আর উন্নয়নের প্রধান বাধা সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ। পুলিশ এই সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ রুখতে বিরাট ভ‚মিকা পালন করছে। এ দেশের মাটিতে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের কোনো স্থান নেই।
গতকাল সোমবার সকালে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স মাঠে পুলিশ সপ্তাহ-২০১৮ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী পুলিশ সপ্তাহ-২০১৮ উপলক্ষে মনোজ্ঞ কুচকাওয়াজের সালাম গ্রহণ করেন এবং একটি খোলা জিপে করে প্যারেড পরিদর্শন করেন। সুপারিনটেনডেন্ট অব পুলিশ মহসিন হোসেন প্যারেড পরিচালনা করেন।
বাংলাদেশ পুলিশের সদস্যদের নিজেদেরকে জনবান্ধব হিসেবে গড়ে তুলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ২০১৭ সালে অসীম সাহসিকতা ও বীরত্বপূর্ণ কাজের স্বীকৃতি হিসেবে পুলিশ বাহিনীর ১৮২ জন সদস্যকে বাংলাদেশ পুলিশ পদক- বিপিএম, বিপিএম-সেবা, রাষ্ট্রপতির পুলিশ পদক-পিপিএম ও পিপিএম-সেবা পদক প্রদান করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ ঠেকাতে পুলিশকে জনসম্পৃক্ততা গড়ে তুলতে হবে। অভিভাবক ও শিক্ষকদেরকে শিক্ষার্থীর দিকে নজর রাখতে হবে। তরুণ সমাজকে নজরদারির মধ্যে রাখলে দেশ থেকে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ দূর করা সরকার ও পুলিশের পক্ষে সহজ হবে।
এ সময় দমন-পীড়নের মুখে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের সুরক্ষায় পুলিশের ভ‚মিকার প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী।
পুলিশ বাহিনীকে জনবান্ধব হওয়ার পরামর্শ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, প্রত্যেক পুলিশ সদস্যকে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। নিজেদের নিজেদের জনবান্ধব বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।
তিনি আরো বলেন, ‘অর্থপাচার ও সাইবার অপরাধ প্রতিহত করতে প্রযুক্তিগত দিক থেকে পুলিশ সদস্যদের দক্ষ হতে হবে। এ জন্য তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। দেশে-বিদেশে তাদের প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে এবং এটি অব্যাহত থাকবে। আমরা এটিকে ব্যয় মনে করি না, আমরা মনে করি এটি বিনিয়োগ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, পুলিশকে আমি সব সময় আইনের রক্ষকের ভ‚মিকায় দেখতে চাই। দেশের প্রচলিত আইন, সততা এবং নৈতিক মূল্যবোধই হবে পেশাগত দায়িত্ব পালনের পথ নির্দেশক। পুলিশের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনাদের মনে রাখতে হবে, সফলতার জন্য আপনারা যেমন পুরস্কৃত হবেন, তেমনি প্রতিটি কাজের জন্য জবাবদিহিতাও নিশ্চিত করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে ‘আইজিপি কমপ্লেইন সেল’ স্থাপন করা হয়েছে যা পুলিশ সদস্যদের পেশাগত জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে কার্যকর ভ‚মিকা রাখবে।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় দেশের অগ্রগতির চিত্র তুলে ধরে বলেন, আমরা বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। অর্থনৈতিকভাবে বাংলাদেশ যত সমৃদ্ধ হবে, দেশকে আমরা তত উন্নত করে তুলতে সক্ষম হবো। লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। আমরা চাই বাংলাদেশকে ক্ষুধা মুক্ত, দারিদ্র্য মুক্তভাবে গড়ে তুলব। কারো কাছে হাত পেতে নয়, মাথা নত করে নয়, মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ী জাতি হিসেবে আমরা মাথা উঁচু করে বিশ্ব দরবারে চলতে চাই।
তিনি বলেন, আমরা নিজের পায়ে দাঁড়াতে চাই। নিজেদের সম্পদ দিয়ে নিজেদের দেশকে গড়তে চাই। যেন বিশ্বসভায় আমরা সবসময় মাথা উঁচু করে চলতে পারি। সে কথা মনে রেখে লক্ষ্য নির্দিষ্ট করেছি-২০২১ সালে আমরা মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হব । আর ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ। এই বাংলাদেশকে আমরা সেভাবেই প্রতিষ্ঠা করতে চাই।
শেখ হাসিনা দৃপ্ত কণ্ঠে বলেন, ইনশাআল্লাহ ২০২১ সালে আমরা স্বাধীরতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করব ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা গড়ে তুলে। কাজেই সেজন্য সবাইকে একত্রে তিনি দেশগড়ার কাছে আত্মনিবেদন করার আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী পুলিশ সদস্যদের মধ্যে ১৮২ জনকে চারটি ক্যাটাগরিতে বাংলাদেশ পুলিশ পদক সাহসিকতা, রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক সাহসিকতা, বাংলাদেশ পুলিশ পদক সেবা ও রাষ্ট্রপতি পুলিশ পদক সেবা প্রদান করেন।
এর মধ্যে মরণোত্তর বাংলাদেশ পুলিশ পদক সাহসিকতার জন্য সিলেটের আঁতিয়া মহলে জঙ্গিবিরোধী অভিযানে নিহত লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবুল কালাম আজাদ, ইন্সপেক্টর মো. মনিরুল ইসলাম এবং ইন্সপেক্টর কায়সরের পক্ষে তাদের স্বজনরা প্রধানমন্ত্রীর নিকট থেকে এই পদক গ্রহণ করেন।
‘জঙ্গিবাদ মাদকের প্রতিকার বাংলাদেশ পুলিশের অঙ্গীকার’ শীর্ষক প্রতিপাদ্য নিয়ে এবারের পুলিশ সপ্তাহ উদযাপিত হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী সকালে রাজারবাগ প্যারেড গ্রাউন্ডে পৌঁছালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, আইজিপি এ কে এম শহীদুল হক এবং স্বরাষ্ট্র সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দিন তাকে স্বাগত জানান।
মন্ত্রী পরিষদ সদস্য, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, জাতীয় সংসদ সদস্য এবং সরকারের পদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা, ক‚টনিতিক এবং আমন্ত্রিত অতিথিরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।