পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
হোসাইন আহমেদ হেলাল : কিভাবে হবে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন? দলীয় নাকি সহায়ক সরকারের অধীনে? নির্বাচন কোন পদ্ধতির অধীনে হবে আওয়ামীলীগ-বিএনপির শর্ত এখন একটিই। বিএনপি চায় সমঝোতার মাধ্যমে নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকার। অপরদিকে আওয়ামী লীগ বর্তমান সংবিধানে অনঢ়। তবে নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী করার পক্ষে তারা। শান্তিপূর্ণ সমাধান নিয়ে বিশিষ্টজনেরা বলেছেন, উভয়ের সহনশীল বক্তব্যে বরফ গলতে পারে। দেশের মানুষ সংঘাত-হানাহানি চায় না, সমঝোতা চায়। ইনকিলাবকে দেয়া বিশিষ্টজনদের বক্তব্যে এমনটিই ওঠে এসেছে।
সংঘাত চায় না বিএনপি। সরকারের সঙ্গে সমঝোতার চেষ্টা অব্যাহত রেখেই এগুতে চায় তারা। অতীতে বড় দু’দলের মধ্যে সমঝোতা হয়েছে। সুফল এসেছে। এবারও সমঝোতা হবে। এমনটি আশা করেছে বিএনপি। যার প্রমাণ রেখেছে ৫ জানুয়ারী গণতন্ত্র হত্যা দিবসের সমাবেশের অনুমতি নিয়ে কোন সংঘাতে যায়নি দলটি। এটি বিএনপির নীতি নির্ধারনী মহলের বক্তব্য। আওয়ামী লীগও সংঘাত, সহিংসতা চায় না। তারা চাচ্ছে বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন। নির্বাচন পরিচালনা করবে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী করা গেলে এবং সব দল সহযোগিতা করলে নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হবে। কমিশন নিয়ে আলোচনা হতেই পারে, এটি সংবিধানের বাইরে নয়। ক্ষমতাসীন দলটির বক্তব্য, তত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে কলুষিত করেছে বিএনপি। এখন তারা বলছে সহায়ক সরকারের কথা। তবে, সময়ই বলে দেবে নির্বাচন কিভাবে হবে, কোন পদ্ধতিতে হবে। এমনটি বলেছে আওয়ামীলীগ দলীয় সূত্র।
বিশিষ্টজনদের বক্তব্য শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান হলে উভয় দলের জন্য সম্মান ও মঙ্গলজনক হবে। এটি দেশবাসীরও প্রত্যাশা। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সংক্রান্ত আলোচনাকালে আওয়ামীলীগ নেতা ও খাদ্য মন্ত্রনালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আবদুল ওয়াদুদ, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির সিনিয়র নেতা রাজেকুজ্জামান রতন, বিএনপি নেত্রী ব্যরিস্টার রুমিন ফারহানাসহ বিশিষ্ট জনেরা কিছু ক্ষেত্রে ভিন্নমত পোষন করলেও একটি সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচনের জন্য উভয়পক্ষের মধ্যে সমঝোতা ও সহশীলতার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
রাজেকুজ্জামান রতন বলেন, আগামী নির্বাচন নিয়ে জনগনকে আশ্বস্ত করবে কে? বড় দু’দলের মাঠের নেতাকর্মীরা সমঝোতা চায়। নিজ দলের মধ্যে গণতন্ত্রের চর্চা নেই, সাধারন মানুষের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা কঠিন মনে হচ্ছে তাদের। ক্ষমতার দাপট না দেখিয়ে জনগনের নির্বাচিত হয়ে কাজ করার সম্ভব হচ্ছেনা। ক্ষমতায় থাকলে সবকিছু নিজের মনে করে ক্ষমতাসীনরা। সমাধান না হলে সংঘাত হবে। বড় দু’দলের মধ্যে বিশ্বাস-অবিশ্বাস, আস্থার সংকট রয়েছে। নির্বাচনে শান্তিপূর্ণ আগমন এবং প্রস্থান নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
রাজেকুজ্জামান রতন আরো বলেন, এখনই আলোচনা শুরু করা না গেলে তীরে এসে তরি ভেড়ানো যাবে? এখন চলছে নির্বাচনী রাজনীতি। বিএনপির দাবি মানলে মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়বে আওয়ামী লীগ। নতুনভাবে অন্য কোন ফর্র্মূলা দেয়া যায় কিনা যাতে সবাই মেনে নিতে পারে সে পথ খুঁজে বের করতে হবে। দু’দলের নেতারা জনমতের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে কর্মীদের বলতে হবে নির্বাচনে জয়লাভ করতেও পারি আবার পরাজয়ও হতে পারে। তোমায় সেভাবে চলতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সহনশীলতার অভাব। ইতিবাচক বক্তব্য আসা উচিত দুই নেত্রীর কাছ থেকে। নিবাচনী রাজনীতি নিয়ে এখন শর্ত একটি। আওয়ামী লীগ ও বিএনপিকে ইতিবাচক এবং সহনশীল বক্তব্য দিতে হবে।
আওয়ামীলীগ নেতা আবদুল ওয়াদুদ বলেন, তত্ত¡াবধায়ক সরকার কলুষিত করা হলো কেন? তারা এখন সহায়ক সরকারের কথা বলছেন। তিনি বলেন, বর্তমানে রাজনৈতিক পেক্ষাপটে মাঠে আন্দোলন সংগ্রাম করে দাবি আদায়ের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে কিনা? বেগম খালেদা জিয়া আদালতে দেয়া প্রতিহিংসার রাজনীতি না করার যে অঙ্গীকারের কথা বলেছেন, এটি কতটুক সম্ভব? ভোটের রাজনীতিতে সেনাবাহিনীকে ম্যাজিষ্ট্রেসী ক্ষমতা কেন দিতে হবে? সংবিধানের বাইরে আওয়ামী লীগ যেতে পারেনা। বিএনপি রূপরেখা দিবে কেন? এটা মঙ্গল গ্রহের কিছুু নয়। তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগ ভাল কাজ করেছে। বিএনপি সেটি স্বীকার করছে না। সরকারের দায়িত্ব জনগনের নিরাপত্তা দেয়া, সরকার তাই করছে। বিএনপি রাস্তায় নামতে পারেনি। সে শক্তি সামর্থের অভাব তাদের রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ত্রæটি থাকতে পারে। সেটি যাতে না হয়, সে ব্যাপারে সজাগ থাকবে সরকার। আমরা শুদ্ধ করার উদ্যোগ নিয়েছি।
বিএনপি আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেন, বিচার বিভাগ, পুলিশ প্রশাসন, জনপ্রশাসন দিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন আশা করা যাবে? অন্য সময় সব কাজ সেনাবাহিনী করতে পারলে জাতীয় নির্বাচনের মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি সময়ে তাদের অংশগ্রহণ কেন থাকবেনা?। বেগম খালেদা জিয়া সমঝোতা-ঐক্যমতের কথা বলেছেন। সমঝোতায় সাড়া পাওয়া গেল অবশ্যই সহায়ক সরকার ঘোষনা করা হবে। আমাদের সর্বদাই দৃশ্যমান আলোচনা এখনই শুরু করতে হবে। তিনি বলেন, শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক চর্চা করতে পারছে না বিএনপি। পথে পথে বাধা দেয়া হচ্ছে। গুম, খুন, ধর্ষণ নির্যাতনের বিষয় কারো অজানা নয়। পুরো দেশের ওপর দায় পড়েছে। শেখ হাসিনার অধীনে বিএনপি নির্বাচনে যাবে না। রুমিন ফারহানা আরো বলেন, জনমতের প্রতি অশ্রদ্ধা দূর করতে হবে। ২০১৪ সালের নির্বাচনের পর দেশে জঙ্গীবাদ, দুর্নীতি, সুশাসনের অভাব দেখা দিয়েছে। গুম, খুন নির্যাতন বেড়ে চলেছে। ছাত্রলীগের কোন্দল, ধর্ষনের ঘটনা, হিন্দুদের ওপর বারবার হামলা চলছে। রাজনীতিতে মেধাবীদের অভাব দেখা দিচ্ছে। বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে হলে প্রতিহিংসার রাজনীতি পরিহার করতেই হবে।
এদিকে প্রতিহিংসার বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে একটি সুন্দর ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের অপেক্ষায় জনমত গড়ে উঠছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।