চরিত্র মানুষের শ্রেষ্ঠতম অলঙ্কার
সৃষ্টির সেরা জীব আশরাফুল মাখলুকাত- মানবজাতি। এ শ্রেষ্ঠত্ব মানুষ তার চরিত্র দিয়ে অর্জন করে নেয়।
\ শেষ \
মহানবী সা. এর ক্ষমাসুলভ এ আচরণ লোকটির প্রতি এমন প্রভাব বিস্তার করলো যে, সে নিজে ইসলাম কবূল করলো এবং স্বীয় গোত্রের লোকদের নিকট গিয়ে বললো, আমি মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের চেয়ে উত্তম কোন মানুষ আজ পর্যন্ত দেখিনি। -সীরাতে মোগলাতুয়াই, সূত্র : সীরাতে খাতিমুল আম্বিয়া সা. (মুফতী মোহাম্মদ শফী রাহ. প্রণীত)।
প্রিয়নবী হযরত রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনো মন্দ দ্বারা মন্দের প্রতিশোধ গ্রহণ করেননি। বরং সর্বদা ক্ষমাসুন্দর ব্যবহারই ছিলো মহানবী সা. এর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য। সুমামা ইবনে উসাল নামক জনৈক ব্যক্তি নবীকরীম সা. কে হত্যা করার জন্য প্রস্তুতি নেয়। অত:পর সাহাবায়ে কেরামের হাতে ধৃত হয়ে মদীনায় আসলে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে ক্ষমা করে দিলেন। এ ক্ষমাসুন্দর ব্যবহার দেখে মুগ্ধ হয়ে তিনি ইসলাম গ্রহণ করলেন এবং প্রিয়নবীজীর প্রতি অনুরক্ত হয়ে গেলেন। একদা লবীদ ইবনে আসম নামক এক ইহুদী মহানবী সা. কে যাদু করে। আল্লাহর ফিরিশতাদের সহায়তায় মহানবী সা. যাদু থেকে উদ্ধার পান। কিন্তু নবীকরীম সা. লবীদের বিররোদ্ধে কোন প্রতিশোধমূলক ব্যবহার করেননি।- সূত্র : সীরাতুন্নবী সা. স্মারক-১৪১৯হি: (জাতীয় সীরাত কমিটি বাংলাদেশ কর্তৃক প্রকাশিত)।
প্রিয়নবীজীর চাচাজান হযরত হামযা রা. এর সাথে ওহুদ যুদ্ধে হিন্দা বিনতে উৎবা ও ওয়াহ্শী যে পৈশাচিক আচরণ করেছিলেন তা কারো অজানা নয়। কিন্তু ইসলাম গ্রহণের পর মহানবী সা. তাদের সব অপরাধ ক্ষমা করে দিয়েছিলেন। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এ ক্ষমাসুন্দর ব্যবহারে তারাও মুগ্ধ না হয়ে পারেননি।
নবীকরীম সা. ছিলেন সর্বাধিক সহনশীল এবং শক্তি থাকা সত্বেও অপরাধ মার্জনায় তিনি ছিলেন সকলের চেয়ে অগ্রগামী। বস্তুত ঃ বিশ্বনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ‘ধৈর্য ও ক্ষমা’ ছিলো অতুলনীয় ও বর্ণনাতীত। যার বিস্তারিত বিবরণ পবিত্র কোরআন- হাদীছ ও সীরাতের কিতাবসমূহে রয়েছে ছড়িয়ে ছিটিয়ে। মহানবীর মহান আদর্শের প্রতি মুগ্ধ হয়ে অসংখ্য কাফির-মুশরিক আশ্রয় গ্রহণ করেছে ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে। এতদিন যারা ছিলো ইসলাম ও নবীজীর প্রাণের দুশমন তারাই আজ পরিনত হয়ে গেলো প্রিয়নবীজীর ভক্ত ও অন্তরঙ্গ বন্ধুতে। যারা একদিন এসেছিলো বিশ্বনবী সা.কে হত্যা করার উদ্দেশ্যে (নাঊযুবিল্লাহি মনি যালিক) তারাই আজ নিজেদের গর্দান সঁপে দিলো প্রিয়নবীজীর মোবারক পদধুলিতে।
প্রিয় পাঠক! তাহলে আসুন, আমরাও আমাদের জান-মাল-সময় সবকিছু বিলিয়ে দিই প্রিয়নবীজীর মহান আদর্শ সর্বক্ষেত্রে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এবং মহান রাব্বুল আলামীনের সন্তুষ্ঠির পথে। নাস্রুম্ মিনাল্লাহি ওয়া ফাত্হুন ক্বারীব।
লেখক : গ্রন্থকার ও কলামিস্ট।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।