পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বৃহত্তর খুলনাঞ্চলের চাহিদার তুলনায় মাত্র ১৫ শতাংশ মানুষ ট্রেনের সেবা পাচ্ছে। ট্রেনের ১৩৩ বছরের পথ চলায় আশানুরূপ বাড়েনি ট্রেনের সংখ্যা। ১০-১২টি ট্রেন যাত্রীদের সেবার বদলে ভোগান্তি দিচ্ছে। তবে আশার আলো দীর্ঘ দিন পরে হলেও খুলনায় আধুনিক রেল ষ্টেশন হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১১ সালের ৫ মার্চ খালিশপুর শিল্পাঞ্চলের জনসভায় অন্যান্য উন্নয়ন প্রতিশ্রুতির সাথে খুলনার রেল স্টেশন আধুনিকায়ন করার কথা ঘোষণা করেছিলেন। কাজও শুরু হয়েছে তবে তা মন্থর গতিতে। আর কাজের মান অত্যন্ত নিম্নমানের। আমলাতান্ত্রিক জটিলতা ও কালক্ষেপণ, তদারকিতে রাজনৈতিক নেতৃত্বের দুর্বলতা এক্ষেত্রে অন্যতম কারণ বলে বিবেচিত।
সূত্রমতে, কলকাতার দমদম-যশোর-খুলনা রেল লাইনে ১৮৮৪ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি খুলনায় ট্রেন চলাচল শুরু হয়। অথচ ২০১৭ সালে সেই ট্রেনের সংখ্যা যেমন বাড়েনি তেমনি সেবার মান নিম্নমুখী হওয়ায় রেলযাত্রীরা নিত্য ভোগান্তিতে পড়ছে। বর্তমানে রেলে যাত্রী সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে কিন্তু সেবার ক্ষেত্রে রয়েছে শুভংকরের ফাঁকি। বিপুল ভূ-সম্পত্তি ও অপরাপর সম্ভাবনার থাকার সত্বেও খুলনা তথা দক্ষিণাঞ্চলবাসী গুণগত রেল সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। রেলপথকে সিঙ্গেল লাইন থেকে ডাবল লাইনে উন্নীতকরণ, আধুনিক রেল স্টেশন নির্মাণ ও ট্রেনের সংখ্যা বৃদ্ধি এ অবস্থার অবসান হবে বলে খুলনার উন্নয়ন আন্দোলন নেতাদের প্রত্যাশা। ড. গাউস মিয়া রচিত মহানগরী খুলনার ইতিহাসের আলোকে কলকাতার-যশোর-খুলনা রেল লাইনে ১৮৮৪ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি খুলনায় ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছিলো। আর বাংলাদেশে প্রথম রেল চলাচলের সূচনা হয় ১৮৬২ সালের ১৫ নভেম্বর। ওই সময় ভারতের রানাঘাট থেকে কুষ্টিয়ার জগতি পর্যন্ত রেল চলাচল শুরু হয়। এর মাত্র ৯ বছর পরই দমদম-যশোর-খুলনা রেলপথ সৃষ্টি। এর ফলে উত্তরাঞ্চলের চিলাহাটি স্টেশন থেকে দক্ষিণাঞ্চলের খুলনা পর্যন্ত ট্রেন চলাচল শুরু। অন্যদিকে, যশোর-দর্শনা লিংক ১৯৫১ সালের ২১ এপ্রিল খুলে দেয়া হয়। তৎকালীন সময় খুলনা রেলের বিভিন্ন রুটে চলাচলের জন্য ১০টি মাত্র ট্রেন দেয়া হয়েছিলো। দীর্ঘ প্রায় দেড়শ’ বছর ধরে সেগুলোতেই চলাচল করছে খুলনাঞ্চলের মানুষ। ২০০৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেনটি দিয়ে খুলনা-ঢাকা রেল সার্ভিস চালু হয়েছিলো। খুলনা রেলওয়ের সূত্র জানায়, নকশিকাঁথা এক্সপ্রেস খুলনা-গোয়ালন্দ, সীমান্ত এক্সপ্রেস খুলনা-সৈয়দপুর, চিত্রা এক্সপ্রেস খুলনা-ঢাকা, কপোতাক্ষ এক্সপ্রেস খুলনা- রাজশাহী, বেনাপোল কমিউটার খুলনা-বেনাপোল, রূপসা এক্সপ্রেস খুলনা-সৈয়দপুর, রকেট মেইল খুলনা-পার্বতীপুর, মহানন্দা এক্সপ্রেস খুলনা-চাঁপাইনবাবগঞ্জ-রোহনপুর, সাগরদাড়ি এক্সপ্রেস খুলনা-রাজশাহী ও সুন্দরবন এক্সপ্রেস খুলনা-ঢাকা প্রতিদিন খুলনা স্টেশন থেকে ৭টি রুটে দশটি ট্রেন চলাচল করে। এরমধ্যে ৬টি সাধারণ শ্রেণীর বা আন্তঃনগর এবং বাকি ৪টি মেইল ট্রেন। আন্তঃনগর ট্রেনগুলো সপ্তাহে একদিন বন্ধ থাকে। দশটি ট্রেনের মধ্যে খুলনা-ঢাকা রুটে চলাচলকারী সুন্দরবন ও চিত্রা এক্সপ্রেসে এসি সুবিধা রয়েছে। রেলপথে এ অঞ্চলের চাহিদার মাত্র ১৫ শতাংশ মানুষ চলাচলের সুযোগ পায়। বাকিরা টিকিট না পেয়ে বিকল্প পথ বেছে নেয়। এতে হয়রানী ও টিকিট কলোবাজারির সুযোগ সৃষ্টি হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, খুলনা রেল স্টেশন ইয়ার্ড রিমডেলিং এবং বেনাপোল রেল স্টেশন সুবিধা উন্নয়ন প্রকল্প নামে একটি প্রকল্প ২০০৭ সালে গ্রহণ করা হয়। এসময় প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় ৪০ কোটি টাকা। প্রকল্পটি ২০০৭ সালের জুলাই থেকে ২০০৯ সালের জুন মাসে শেষ হওয়ার কথা ছিল। সে লক্ষ্যে প্রকল্প গ্রহণের পর ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট প্রোফাইল (ডিপিপি) করা হয়। প্রকল্পের ব্যয় ২৫ কোটি টাকার উপরে হলে নিয়মানুযায়ী জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির সভায় (একনেক) অনুমোদন নেয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। ডিপিপি করার পর প্রকল্পটি একনেকে পাশ হওয়ার অপেক্ষায় পড়ে থাকে। প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় অর্থের অভাবের অজুহাতে এটি আর একনেকে পাশ হয়নি। এক পর্যায়ে প্রকল্পটি লাল ফিতায় বন্দী হয়ে পড়ে। ইতোমধ্যে প্রকল্প গ্রহণের পর সময় বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধি পায়। সে কারণে প্রকল্পটি রিভাইজড ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট প্রোফাইল (আরডিপিপি) শুরু হয়। আরডিপিপির মাধ্যমে ৪০ কোটি টাকার প্রকল্প ব্যয় বৃদ্ধি করে ৮৪ কোটি ৪৯ লাখ টাকা ধরা হয়। একনেকে অনুমোদন হওয়ার পর কার্যাদেশ দিতে সক্ষম হবে রেল মন্ত্রক। কাজও শুরু হয়েছে কিন্তু চলছে ধীর গতিতে। কাজের গুনগত মান নিয়েও যথেষ্ট অভিযোগ রয়েছে।
খুলনা থেকে ঢাকা ও উত্তরাঞ্চলে যাতায়াতকারী ট্রেনগুলো আশানুরুপ সেবা দিতে না পারার কারণে যাত্রীদের তেমন একটা আকৃষ্ট করতে পারছে না। অতিরিক্ত ভাড়া বৃদ্ধি, সময় মতো ট্রেন ছেড়ে না যাওয়া, গন্তব্যে পৌঁছাতে অস্বাভাবিক বিলম্ব হওয়া এবং রেলওয়ের সেবার মান ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাওয়ার করণে এখানে যাত্রীরা প্রচন্ড ক্ষুব্ধ। বর্তমানে খুলনা থেকে প্রতিদিন ও রাত মিলিয়ে ১০টি ট্রেন যাতায়াত করে থাকে। এরমধ্যে দুইটি ট্রেন খুলনা থেকে ঢাকা যাতায়াত করে। বাকি ট্রেনগুলো যাতায়াত করে বেনাপোল, রাজশাহী, সৈয়দপুর, বিশাহাটিসহ উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে। সকাল সাড়ে ৬টা থেকে শুরু করে রাত একটা পর্যন্ত খুলনা রেল স্টেশন থেকে ট্রেন ছাড়ে। এগুলোর মধ্যে রূপসা, সুন্দরবন, গোধূলী, নকশীকাঁথা, কপোতাক্ষ নামের ট্রেনগুলো আন্তঃনগর ট্রেন হিসাবে যাতায়াত করে। ২০০৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে সুন্দরবন এক্সপ্রেস নামে একটি ট্রেন দিয়ে খুলনা-ঢাকা রেল সার্ভিস চালু হয়। এসি বাথ, প্রথম শ্রেণি, চেয়ার ও শোভন মিলিয়ে ট্রেনটির মোট আসন সংখ্যা ১ হাজার ৭৮৫টি। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এ ট্রেনে খুলনা থেকে ঢাকা পৌঁছাতে কম করে হলেও ১০/১১ ঘন্টা সময় লাগে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।