পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বঙ্গোপসাগরে জেগে ওঠা চরে বনায়ন
বঙ্গোপসাগরে জেগে উঠা নতুন চর রক্ষায় উপক‚লীয় এলাকায় বড় আকারে বনায়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। চট্টগ্রাম বিভাগের নয় জেলার ৬৭ উপজেলায় নতুন করে জেগে উঠা চরে বনায়ন করা হবে। গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ১০৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘বঙ্গোপসাগরে জেগে ওঠা নতুন চরসহ উপক‚লীয় এলাকায় বনায়ন’ শিরোনামের একটি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এই প্রকল্পের আওতায় ২৫ হাজার হেক্টর এলাকায় ম্যানগ্রোভ বনায়ন করা হবে। একই সঙ্গে এক হাজার কিলোমিটার করা হবে স্ট্রিপ বনায়ন। থাকবে ফিডার রোড ও হোমস্টেড বনায়ন। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় শরীয়তপুর জেলার ভাঙ্গনকবলিত জাজিরা ও নড়িয়া উপজেলায় পদ্মা নদীর ডান তীর রক্ষায় আলাদা একটি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে খরচ হবে এক হাজার ৯৭ কোটি টাকা।
সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জানিয়েছেন, একনেকে ১৬টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এগুলো বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ৫ হাজার ২২০ কোটি ৮৩ লাখ টাকা । এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ৪ হাজার ৭৪৪ কোটি ১২ লাখ টাকা। বৈদেশিক সহায়তা থেকে ৪৬২ কোটি ৮৮ লাখ টাকা এবং বাস্তবায়নকারী সংস্থা থেকে ১৩ কোটি ৮৩ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে। এ সময় পরিকল্পনা সচিব জিয়াউল ইসলাম, বাস্তবায়ন,পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) সচিব মফিজুল ইসলাম, সাধারন অর্থনীতি বিভাগের সদস্য ড. শামসুল আলম এবং ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য জুয়েনা আজিজসহ পরিকল্পনা কমিশনের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, বিদ্যুতের প্রি-পেমেন্ট মিটারিং সংক্রান্ত একল্প অনুমোদনের সময় দেশেই প্রি- পেইড মিটার তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যাতে বিদেশ থেকে আমদানি করতে না হয়। এছাড়া বঙ্গোপসাগরের জেগে ওঠা নতুন চরে বনায়নের সময় অন্যান্য গাছের সঙ্গে নিম, বিভিন্ন ফলের গাছ এবং বট গাছ লাগানোর নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। যাতে পাখিদের খাদ্যের যোগান সৃষ্টি হয়। এছাড়া পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, আমাদের নদীগুলো যদি ক্যাপিট্যাল ড্রেজিং করা হয়,তাহলে নদী গুলো সত্যিকারের অর্থনৈতিক কাজে লাগবে। আমরা সে পথেই এগুচ্ছি।
মন্ত্রী জানান, ডিপিডিসির বিদ্যুৎ বিতরণ সংক্রান্ত একটি অনুমোদিত প্রকল্প প্রধানমন্ত্রীর নজরে আনা হলে তিনি বলেন, যেখানে মাটির নিচে লাইন নেয়ার সুযোগ আছে সেখানে মাটির নিচেই নিতে হবে। আর যেখানে বাড়ি আছে বা মাটির নিতে নেয়া সম্ভব নয়, সেখানে উপর দিয়ে বিদ্যুতের লাইন নিতে হবে।
একনেকে অনুমোদিত প্রকল্প গুলো হচ্ছে, বঙ্গোপসাগরে জেগে উঠা নতুন চরসহ উপক‚লীয় এলাকায় বনায়ন প্রকল্প, বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ১০৪ কোটি ৮০ লাখ টাকা। শরীয়ত জেলার জাজিরা ও নড়িয়া উপজেলায় পদ্মা নদীর ডান তীর রক্ষা, ব্যয় হবে ১ হাজার ৯৭ কোটি টাকা। দ্যা ডিজিস্টার রিস্ক ম্যানেজমেন্ট ইনহ্যান্সমেন্ট প্রজেক্টের ব্যয় ৬২০ কোটি টাকা। ময়মনসিংহ বিভাগ এবং ঢাকা বিভাগের টাঙ্গাইল ও কিশোরগঞ্জ জেলায় ক্ষুদ্রসেচ উন্নয়ন, ব্যয় হবে ১৩৯ কোটি টাকা। মৃত্তিকা গবেষণা ও গবেষণা সুবিধা জোরদারকরণ, ব্যয় হবে ৬৩ কোটি টাকা। শেখ রাসেল এভিয়ারী ও ইকো-পার্ক স্থাপন, রাঙ্গুনিয়া, চট্রগ্রাম (২য় পর্যায়), ব্যয় হবে ১২৫ কোটি টাকা। চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বিদ্যমান রানওয়ে ও ট্যাক্সিওয়ের শক্তি বৃদ্ধিকরণ, ব্যয হবে ৫৪০ কোটি টাকা। চট্রগ্রামস্থ পারকি ও পতেঙ্গায় পর্যটন সুবিধাদি প্রবর্তন, ব্যয় হবে ৬২ কোটি টাকা। সালনা (রাজেন্দ্রপুর)-কাপাসিয়া-টোক-মঠখোলা মহাসড়ক প্রশস্তকরণ ও মজবুতিকরণ, ব্যয় হবে ২২৪ কোটি টাকা। মিরপুর ডিওএইচএস গেইট-২ হতে মিরপুর-১২ বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত মহাসড়ক প্রশস্তকরণ ও উন্নয়ন, ব্যয় হবে ১৪৬ কোটি টাকা। পাগলা-জগন্নাথপুর-রানীগঞ্জ-আউশাকান্দি সড়কের ক্ষতিগ্রস্ত বেইলী সেতুর স্থলে ৭টি সেতু এবং নিয়ামতপুর-তাহিরপুর সড়কের আবুয়া নদীর উপর একটি সেতু নির্মাণ, ব্যয় হবে ১৪১ কোটি টাকা। পুলিশ বিভাগের আধুনিকায়ন ও সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য এনকম ভবনের ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ, ব্যয় হবে ১৫৬ কোটি টাকা। বানৌজো শেরে-ই-বাংলা পটুয়াখালী স্থাপন, ব্যয় হবে ১ হাজার ৮১ কোটি টাকা। চট্টগ্রাম আর্টিলারি সেন্টার ও স্কলে মুজিব ব্যাটারী কমপ্লেক্স নির্মাণ, ব্যয় হবে ১৮০ কোটি টাকা। ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লি. এলাকার জন্য স্মার্ট-প্রি-পেমেন্ট মিটারিং, ব্যয় হবে ৪২৬ কোটি টাকা এবং শেখ লুৎফর রহমান ডেন্টাল কলেজ ও হাসপাতাল স্থাপন গোপালগঞ্জ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ১১৩ কোটি টাকা।
চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে অর্থাৎ (অক্টোবর- ডিসেম্বর পর্যন্ত) দেশের গড় সার্বিক মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ৯৩ শতাংশে। তার আগের তিন মাসে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) ছিল ৫ দশমিক ৮৬ শতাংশ। এছাড়া মাসিক ভিত্তিতে মূল্যস্ফীতি হয়েছে অক্টোবরে ৬ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ, নভেম্বরে ৫ দশমিক ৯১ শতাংশ এবং ডিসেম্বরে হয়েছে ৫ দশমিক ৮৩ শতাংশ। একই সঙ্গে মাসিক হিসেবে বেড়েছে খাদ্য ও খাদ্য বহিভর্‚ত পণ্যের মূল্যস্ফীতিও। ডিসেম্বরে খাদ্যে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৭ দশমিক ১৩ শতাংশ, যা নভেম্বরে ছিল ৭ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ। খাদ্য বহিভর্‚ত মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৩ দশমিক ৮৫ শতাংশ, যা নভেম্বরে ছিল ৩ দশমিক ৬১ শতাংশ। গতকাল মঙ্গলবার বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) এর এসব হিসাব প্রকাশ করেছেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক পরবর্তী ব্রিফিং এ এসব তথ্য প্রকাশ করেন তিনি।
এসময় পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসের তুলনায় দ্বিতীয় প্রান্তিকে গড় মূল্যস্ফীতি কিছুটা বেড়েছে। হঠাৎ বন্যা ও অতিবৃষ্টিই এ মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির কারণ। তবে আগামী এক মাসের মধ্যেই মূল্যস্ফীতি কমে যাবে। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, চালের দাম কম রাখতে সরকার সব ধরনের ব্যবস্থাই নিয়েছে। চাল আমদানিতে শুল্ক কমিয়েছে। কৃষকদের কাছ থেকে বেশি দামে ধান ক্রয় করেছে। কৃষকদের কম দামে বীজ এবং কম দামে চাল বিক্রি করা হয়েছে। কিন্তু প্রকৃত লাভ পেয়েছেন মিলাররা। বা চাল ব্যবসার সঙ্গে যারা যুক্ত আছেন তারা। এক্ষেত্রে সরকার আর কি করতে পারে। তবে বেশি লাভ করার ফল ভাল হবে না বলেও হুশিয়ারি দেন দিনি।
মন্ত্রী জানান, দ্বিতীয় প্রান্তিকে গ্রামে গড় সার্বিক মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাড়িয়েছে ৫ দশমিক ৯৭ শতাংশে এবং প্রথম প্রান্তিকে ছিল ৫ দশমিক ৮৪ শতাংশ। শহরে প্রথম প্রান্তিকের তুলনায় দ্বিতীয় প্রান্তিকে সার্বিক মূল্যস্ফীতি কমেছে। অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ৮৬ শতাংশে,্ যা প্রথম প্রান্তিকে ছিল ৫ দশমিক ৯১ শতাংশ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।