Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শেষ ৩ বলে হারল বাংলাদেশ

প্রকাশের সময় : ২৪ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১:০৫ এএম, ২৪ মার্চ, ২০১৬

ভারত : ১৪৬/৭ (২০.০ ওভারে)
বাংলাদেশ : ১৪৫/৯ (২০.০ ওভারে)
ফল : বাংলাদেশ ১ রানে পরাজিত!
শামীম চৌধুরী, বেঙ্গালুরু থেকে : একটি জয় হতে পারতো অনেক কিছুর জবাব।
আইসিসির ষড়যন্ত্রে তাসকিনের প্রতি অবিচারের জবাবটা দিতে পারতো বাংলাদেশ,
ভারতের মাটিতে স্বাগতিকদের প্রথমবারের মতো হারিয়ে অবিশ্বাস্য উচ্চতায় উঠতেও
পারতো মাশরাফিরা। ২০০৭ বিশ্বকাপে ত্রিনিদাদের জয়ে ভারত সমর্থকদের রাতটা মাটি
করে ছেড়েছে বাংলাদেশ। সেই টুর্নামেন্টের প্রথম রাউন্ড থেকে বিদায় করে জয়গান
গেয়েছে বাংলাদেশ দল। গতকাল ভারতের মাটিতে ভারতকে হারিয়ে সেমির পথটা রুদ্ধ
করে দেয়ার সম্ভাবনা ছিল, ছিল সেমির লড়াইয়ে টিকে থাকারও স্বপ্ন। কিন্তু শেষ
ওভার থ্রিলারে শেষ বলে এসে হারতে হলো বাংলাদেশের।
 হারদিক পান্ডের শেষ ওভারের দ্বিতীয় বলে মুশফিকুরের একটা কাভার দিয়ে
বাউন্ডারিতে ডাগ আউট থেকে লাফিয়ে উঠেছে সবাই। পরের বলটিকে স্কুপ শটে
মুশফিকুরের বাউন্ডারির সঙ্গে সঙ্গে চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে ৪৫ হাজার দর্শক স্তম্ভিত!
শেষ তিন বলে জয়ের জন্য দরকার মাত্র ২ রান, উইকেটে মুশফিকুর, রিয়াদ। এমন এক
পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ দলের পক্ষেই বাজি ধরবে সবাই। অথচ, বাংলাদেশ দলকে স্বপ্ন
দেখানো দুই ভায়রার অমার্জনীয় অপরাধ! সিঙ্গলে খেললেই হতো। কিন্তু সেই সহজ
পথেই যে হাটলেন না তারা। ৪র্থ বলে পান্ডেকে মিড উইকেটের উপর দিয়ে তুলে খেলতে
যেয়ে দিয়ে এলেন ক্যাচ মুশফিকুর (৫ বলে ১১)। পরের বলে একই পজিশনে শ্লোয়ার
ডেলিভারিতে দিয়ে এলেন ক্যাচ মাহামুদুল্লাহ (২২ বলে ১৮)! ইনিংসের শেষ বলে
প্রয়োজন যখন দুই রান, তখন পান্ডের অফ স্ট্যাম্পের বাইরের পিচিং ডেলিভারিতে
ব্যাটই লাগাতে পারলেন না শুভাগতহোম, সিঙ্গলের জন্য দৌড় দিয়ে ম্যাচ ‘টাই’-এর
শেষ চেষ্টাও ব্যর্থ হলো মুস্তাফিজুরের রান আউটে!
শুভাগতহোমকে দিয়ে যদি দ্বিতীয় ওভারে বোলিংয়ের দায়িত্ব দেওয়া যায়, তাহলে অফ
ফর্মে থাকা সৌম্যকে ওপেনিং থেকে ৭ নম্বরে নামিয়ে আনতে দোষ কিসের?
মুশফিকুরকে ৫ থেকে ৮ এ নামিয়েও হতভম্ব করেছে টিম ম্যানেজমেন্ট। ভিডিও
ক্লিপিংস দেখে বাংলাদেশের ব্যাটিংকে পর্যুদস্ত করতে এসে উল্টো এলোমেলো হয়ে
গেছে ভারত বোলাররা হাতুুরুসিংহের কৌশলে!
জবাব দিতে এসে ইনিংসের প্রথম বলে চার! আবার সেই শটে রানিং বিট্যুইন দ্য
উইকেটে বোলার নেহরার সঙ্গে তামীম খেল ধাক্কা। সেই ধাক্কা সামাল দিয়ে তামীম
তামীমিয় রুপে ফিরেছিলেন। বুমরাকে এক ওভারে ৪টি বাউন্ডারিতে ম্যাচে অন্য
কিছুরই আভাস দিয়েছেন। রুম্মানের সঙ্গে দারুণ বোঝাপড়ায় ৩২ বলে ৪৪ রানে
ভারত সমর্থকদের কপালে দুর্ভাবনার ভাজ পর্যন্ত ফেলে দিয়েছিলেন তামীম। কিন্তু
দু’জনেই করলেন একই ভুল। জাদেজাকে ডাউন দ্য উইকেটে খেলতে যেয়ে তামীম স্ট্যাম্পড
(২৬ বলে ৩৫), তার দেখাদেখি সাব্বির রায়নার ওয়াইড ডেলিভারিতে একই শট নিতে
যেয়ে স্ট্যাম্পিংয়ের শিকার (১৫ বলে ২৬)।
প্রথম ৬ ওভারে পিছিয়ে পড়ছে বলে এই ম্যাচে প্রথম ৬ ওভারে ভারতকে টপকেছে (ভারত যেখানে ৪২/১, সেখানে বাংলাদেশ ৪৫/১)। ইনিংসের ১০ম ওভার শেষে পর্যন্ত
তুলনামূলক সংগ্রহে এগিয়ে ছিল বাংলাদেশ (১০ ওভার শেষে ভারতের স্কোর ৫৯/২,
বাংলাদেশের ৭৭/৩)। কিন্তু পরের ৫ ওভারে অশ্বিন, জাদেজাকে সমীহ করে খেলে
পিছিয়ে পড়েছে বাংলাদেশ (২৭ রান)। অশ্বিনের বলে সাকিব স্লিপে ক্যাচ দিয়ে
আসলে (১৫ বলে ২২ রান) ম্যাচটা ধীরে ধীরে এনিবডিজ ম্যাচে রূপ পায়। ৭-এ নেমে
দলকে নির্ভরতা দিতে চেষ্টা করেছেন সৌম্য, জাদেজাকে মিড উইকেটের উপর দিয়ে
ছক্কায় মাতিয়ে বাংলাদেশের হাতের মুঠোয় প্রায় ম্যাচটি এনেছিলেন তিনি। তবে ২১
বলে ২১ রানের সৌম্যর ইনিংসটি থেমে গেলে নাটকীয় কিছুর উত্তেজনা পায়
ম্যাচটিতে। যে ছেলেটিতে তামীম চিবিয়ে খেয়েছে, শেষ ওভার থ্রিলারে (১-০-৯-২)
 সেই পান্ডেই ম্যাচের হিরো!
এই ম্যাচটি যে কতটা ¯œায়ুচাপে ভুগিয়েছে দল দু’টিকে, দু’দলের ড্রপ হওয়া
ক্যাচের সমষ্টিই তার প্রতিফলন। বাংলাদেশ ফিল্ডারদের হাত থেকে পড়েছে ২টি ক্যাচ,
সেখানে ভারত ফিল্ডাররা ফেলেছে ৩টি ক্যাচ। তবে এমন ক্যাচ ড্রপের ম্যাচে ডিপ মিড
উইকেটে পান্ডেকে সৌম্যর ডাইভিং ক্যাচ ছড়িয়েছে বিস্ময়। প্রথম স্পেলে মার খেয়ে (২-০-২০-১)
দ্বিতীয় স্পেলে দারুণভাবে ফিরেছেন বিস্ময় পেস বোলার মুস্তাফিজুর।
প্রথম স্পেলে রোহিত শর্মা মিড উইকেটে ক্যাচ দিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছেন (১৮)।
দ্বিতীয় স্পেলে (২-০-১৪-১) রবীন্দ্র জাদেজা ফুল এন্ড স্টেইট ডেলিভারিতে স্ট্যাম্প উপড়ে
যাওয়ার দৃশ্য দেখেছেন।
ডেথ ওভারের বোলার হিসেবে সুখ্যাতিটা ফিরে পেয়েছেন আল আমিন এই দিন।
তৃতীয় স্পেলটি তার এক কথায় অসাধারণ (১-০-২-২)। রায়না (৩০)ও পান্ডে (১৫)
তার শিকার। ইনিংসের মাঝপথে একবার ৩০ বল এবং আর একবার ১৯ বল চার ছয়হীন
কেটে যাওয়া ভারত থেমেছে ১৪৬/৭-এ। তারপরও আক্ষেপ করতে হচ্ছে ব্যক্তিগত ১০
রানের মাথায় রোহিতের ক্যাচ সাকিবের হাত থেকে ফসকে যাওয়া এবং ১১ রানের
মাথায় কোহলীকে আল আমিন রিটার্ন ক্যাচে বানাতে না পারায়। ১৯ নম্বর ওভারে
আল আমিনের ১৪ রান খরচাটাও যে একটু বেশি হয়ে গেছে।



 

Show all comments
  • Sumon Roy Chowdhury ২৪ মার্চ, ২০১৬, ১০:২২ এএম says : 0
    বাংলাদেশ অভিজ্ঞতার কাছে হেরে গেল।মাহমুদুল্লা আরেকটু রেসপন্সেবল হলে ম্যাচটা আমাদের হত।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: শেষ ৩ বলে হারল বাংলাদেশ
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ