Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

৪৯ জনের মৃত্যুদন্ড চেয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলা

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২ জানুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা সংক্রান্ত দুটি মামলায় বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, লুৎফুজ্জামান বাবর, আবদুস সালাম পিন্টুসহ ৪৯ জন আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড দাবি করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। গতকাল সোমবার রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান কৌঁসুলি সৈয়দ রেজাউর রহমান আইনগত বিষয়ে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করে এ শাস্তি দাবি করেন। তিনি বলেন, রাষ্ট্রপক্ষ আদালতে ২২৫ জন সাক্ষীর উপস্থাপনের মাধ্যমে আসামিদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি। তাই এই মামলার আইনে বর্ণিত আসামিদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি করেন তিনি।
গত ২৭ ডিসেম্বর রাষ্ট্রপক্ষ ২৪৫ জনের সাক্ষ্য পর্যবেক্ষণের আলোকে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ করেছিল। গতকাল আসামিপক্ষে যুক্তিতর্ক এবং রাষ্ট্রপক্ষে আইনগত যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের জন্য দিন ধার্য ছিল। আসামিপক্ষ সময় চেয়ে আবেদন করায় আদালত তা মঞ্জুর করে আজ মঙ্গলবার পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেন। পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডে সাবেক ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের পাশে স্থাপিত বিশেষ এজলাসে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনায় করা হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের দুই মামলার বিচারকাজ চলছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার যত চেষ্টা হয়, এর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ ঘটনা হলো ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে গ্রেনেড হামলা। ওই হামলায় মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী আইভি রহমানসহ আওয়ামী লীগের ২২ নেতা-কর্মী নিহত হন। আহত হন শেখ হাসিনাসহ শত শত নেতা-কর্মী। এই ঘটনায় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে মামলা দিতে গেলে পুলিশ সে মামলা নেয়নি। তার আগে পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা করে। পরে নোয়াখালীর গ্রাম থেকে জজ মিয়া নামের এক যুবককে ধরে নিয়ে এসে আদালতে মিথ্যা জবানবন্দি আদায় করার অভিযোগ উঠে। পরবর্তী সময়ে ২০০৭ সালে তত্ত¡াবধায়ক সরকার এসে মামলাটির নতুন করে তদন্ত শুরু করে এবং একের পর এক সত্য বেরিয়ে আসতে থাকে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে অধিকতর তদন্ত করে সম্পূরক অভিযোগপত্র দেয়। এতে বিএনপির নেতা তারেক রহমান, হারিছ চৌধুরী, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ আরও অনেকের নাম আসে। এ ঘটনায় মতিঝিল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ফারুক হোসেন, আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল জলিল ও সাবের হোসেন চৌধুরী বাদী হয়ে মতিঝিল থানায় পৃথক তিনটি এজাহার দায়ের করেন। মামলাটিতে ২০০৮ সালের ১১ জুন ২২ জনের বিরুদ্ধে আদালতে প্রথম চার্জশিট দাখিল করে সিআইডি। ওই বছর ২৯ অক্টোবর আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে ট্রাইব্যুনাল। ২০০৯ সালের ৯ জুন পর্যন্ত ৬১ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল। ২০০৯ সালের ৩ আগস্ট রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে অধিকতর তদন্তের নির্দশ দেয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল। ২০১১ সালের ৩ জুলাই অধিকতর তদন্ত শেষে তারেক রহমাসসহ আরও ৩০ জনের বিরুদ্ধে সম্পূরক চার্জশিট দাখিল করে সিআইডি। ২০১২ সালের ১৮ মার্চ বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ সম্পূরক চার্জশিটের ৩০ আসামির অভিযোগ গঠন করে ফের সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়। মামলাটিতে আসামি লে. কমান্ডার (অব.) সাইফুল ইসলাম ডিউক, সাবেক আইজিপি মো. আশরাফুল হুদা, শহিদুল হক ও খোদা বক্স চৌধুরী এবং মামলাটির তিন তদন্ত কর্মকর্তা সাবেক বিশেষ পুলিশ সুপার রুহুল আমিন, সিআইডির সিনিয়র এএসপি মুন্সি আতিকুর রহমান, এএসপি আব্দুর রশীদ ও সাবেক ওয়ার্ড কমিশনার আরিফুল ইসলাম জামিনে রয়েছেন। অন্যদিকে সাবেক স্বরাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টুসহ ২৩ জন কারাগারে রয়েছে। মামলার আসামি জামায়াত নেতা আলী আহসান মুহাম্মাদ মুজাহিদের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় এবং হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি হান্নান ও শরিফ শাহেদুল ইসলাম বিপুলের ব্রিটিশ হাই কমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর উপর হামলার মামলায় মৃত্যুদন্ড কার্যকর হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মৃত্যুদন্ড

১৮ নভেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ